ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ হাফেজ মাওলানা ইউনুস আহমাদ মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) বিকালে দলের নিয়মিত বৈঠকে বলেছেন, জুলাই জাতীয় সনদ (সংবিধান সংস্কার বাস্তবায়ন আদেশ-২০২৫) এর যে খসড়া প্রকাশিত হয়েছে তাতে ভাষার গাম্ভীর্য আছে এবং গণঅভ্যুত্থানকে "সার্বভৌম ক্ষমতাসম্পন্ন ও জনগণের পরম অভিপ্রায়ের প্রকাশ" বলে স্বীকার করা হয়েছে। এটা সাধুবাদ যোগ্য কিন্তু কিছু প্রশ্নে এখনো অস্পষ্টতা বিদ্যমান যা আগামীর রাজনীতিকে কঠিন করে তুলতে পারে।
মাওলানা ইউনুস আহমেদ বলেন, খসড়ায় আদেশ কে দেবে তা স্পষ্ট করা হয় নাই। আদেশ-জারির কারণ হিসেবে, "জনগণের জ্ঞাতার্থে ও সাংবিধানিক পরিষদের দায়িত্ব সম্পাদনের সুবিধার্থে" উল্লেখ করা হয়েছে। এর অর্থ হলো, এই আদেশের কোন বাধ্যবাধকতা থাকছে না। অবশ্য এই খসড়ার শুরুতেই গণঅভ্যুত্থানের সার্বভৌম ক্ষমতা আছে বলে স্বীকার করা হয়েছে কিন্তু জনতার অভিপ্রায়ের কোন প্রয়োগ এই খসড়ায় দেখা যাচ্ছে না।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, সমঝোতার স্বার্থে এই আদেশকে সাংবিধানিক আদেশের মর্যাদা থেকে নামিয়ে আনুষ্ঠানিক আদেশ হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে যা এই আদেশকে জুলাই ঘোষণাপত্রের মত একটি অকার্যকর কাগুজে আদেশে পরিণত করার আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছে।
অধ্যক্ষ ইউনুস আহমেদ বলেন, আদেশে গণভোট কখন হবে তাও স্পষ্ট করা হয় নাই। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে, গণভোট অবশ্যই জাতীয় নির্বাচনের আগে অনুষ্ঠিত হতে হবে।
মহাসচিব বলেন, খসড়ায় বলা হয়েছে, সংবিধান সংস্কার পরিষদ গণভোটে অনুমোদিত সংবিধান সংস্কার বিলের বিষয়াদি বিবেচনা করবে। এর মাধ্যমে গণভোটের সিদ্ধান্তকে বাধ্যতামূলক অবস্থান থেকে নামিয়ে বিবেচনাযোগ্য বিষয়ে পরিণত করা হয়েছে। এর মাধ্যমে জুলাই সনদ এবং গণবোটের মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করা হয়েছে বলে মনে করে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ।
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব বলেন, ধারা ঙ তে বলা হয়েছে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সংবিধান সংস্কার পরিষদ তার কাজ সম্পাদন করতে ব্যর্থ হলে সংবিধান সংস্কার বিল পরিষদ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে বলে গণ্য হবে এবং তা আইন রূপে কার্যকর হবে। কিন্তু প্রশ্ন হল, কে কার্যকর করবে সেই বিষয়ে কোনো নির্দেশনা দেওয়া নাই।
আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, সভাপ্রধান ও উপ-সভাপ্রধান নিয়োগের যে নীতি বলা হয়েছে তাতে সরকারী দল পরিষদের ওপরে একচ্ছত্র কর্তৃত্ব স্থাপন করবে। ইসলামী আন্দোলন মনে করে, উপ-সভাপ্রধান বিরোধী দল থেকে নেয়া উচিত।
এলএইস/