বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেছেন, ‘পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে মনোনয়ন বাণিজ্য থাকবে না। এটা দলের জন্য, দেশের জন্য ও রাজনীতির জন্যও লাভ। এজন্য আগামী নির্বাচন পিআর পদ্ধতিতেই দিতে হবে এবং লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করতে হবে।’
বুধবার (২৪ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নীলফামারী জেলা শাখার আয়োজনে আল হেলাল একাডেমি মিলনায়তনে নীলফামারী-২ (সদর) আসনের ‘দায়িত্বশীল’ কর্মশালায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, ‘সংস্কার ছাড়া নির্বাচন হলে সেই নির্বাচন ১৪, ১৮ ও ২৪ এর নির্বাচনের ন্যায় হওয়ার আশঙ্কা মনে করে দেশের মানুষ। এই তিনটি নির্বাচনে বাংলাদেশের চার কোটি তরুণ ভোট দিতে পারেনি। আমরা চাই উৎসবমুখর পরিবেশে সবাই যেন ভোট দেন। দেশবাসী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে উৎসবমুখর পরিবেশে ভোট দেখেছে। শিক্ষার্থীরা আনন্দের সঙ্গে ভোট দিয়েছে। সেখানে ৮০ ভাগ ভোট পড়েছে। এটা বাংলাদেশের ইতিহাসে অনন্য। জাতীয় নির্বাচনেরও এ ধরনের আকাঙ্ক্ষা বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষের।
ফ্যাসিবাদের জননী শেখ হাসিনা বিদেশেও বাংলাদেশের মর্যাদাকে ভূলুণ্ঠিত করেছে উল্লেখ করে জামায়াতের এই নেতা বলেন, ‘নিউইয়র্কে জেএফকে বিমানবন্দরে প্রধান উপদেষ্টার সফরসঙ্গী এনসিপির সদস্যসচিব আখতার হোসেনের ওপর আওয়ামী লীগ সন্ত্রাসীরা ডিম নিক্ষেপ করে তারা শুধু তাকে আঘাত করেনি, বরং তারা ২৪-এর গণ-অভ্যুত্থানের সম্মানকে ভূলুণ্ঠিত করেছে। এমনকি সেখানে তাকে জুলাই সন্ত্রাসী আখ্যা দিয়ে স্লোগান দিয়েছে।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ তাদের জুলাইযোদ্ধা হিসেবে স্লোগান দেয়। তাহলে বোঝা যাচ্ছে আওয়ামী লীগের মধ্যে এখনো অনুশোচনা নেই। তারা বাংলাদেশেও ফ্যাসিজম কায়েম করেছে, বিদেশেও বাংলাদেশের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে। আমরা দাবি করব, তাদের বিরুদ্ধে যে মামলা চলছে তার বিচার ত্বরান্বিত করতে হবে।’
জামায়াতে ইসলামী নতুন বাংলাদেশ গঠন করতে চায় উল্লেখ করে আবদুল হালিম বলেন, ‘নতুন বাংলাদেশে আমিরে জামায়াতের স্লোগান হচ্ছে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। দুর্নীতিমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে হলে সৎ ও চরিত্রবান মানুষ প্রয়োজন। ভোটাররাই ঠিক করবে আগামী দিনে এই নতুন বাংলাদেশে কারা দেশ চালাবে, দুর্নীতিমুক্ত দেশ কারা গঠন করবে। ৩৬ এর গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের আকাঙ্ক্ষা কারা বাস্তবায়ন করবে।’
নীলফামারী জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি অধ্যাপক আনোয়ারুল ইসলামের সভাপতিত্বে কর্মশালায় বিশেষ অতিথির বক্তৃতা দেন জামায়াতের কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল সহকারী পরিচালক অধ্যক্ষ মাওলানা মমতাজ উদ্দীন, রংপুর-দিনাজপুর অঞ্চল টিম সদস্য মুহাম্মদ আব্দুর রশিদ, নীলফামারী জেলা জামায়াতের আমির অধ্যক্ষ মাওলানা আব্দুস সাত্তার, জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির ড. খায়রুল আনাম।
এ ছাড়া বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি ও নীলফামারী-২ (সদর) আসনে দল ঘোষিত প্রার্থী অ্যাডভোকেট আল ফারুক আব্দুল লতিফ, জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য প্রভাষক ছাদের হোসেন, প্রভাষক আব্দুল কাদিম, প্রভাষক মনিরুজ্জামান জুয়েল, জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি মাওলানা আন্তাজুল ইসলাম, কর্মপরিষদ সদস্য মনিরুজ্জামান মন্টু ও নীলফামারী সদর উপজেলা আমির মাওলানা আবু হানিফা শাহ প্রমুখ।
এমএইচ/