শুক্রবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৩ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৭ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
কচুয়ায় বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ও যুব মজলিসের নতুন কমিটি ঘোষণা কেবল নেতা পরিবর্তন করতে জুলাইয়ে ছাত্র-জনতা রক্ত দেয় নাই : শায়েখে চরমোনাই জুলাই চেতনার সাথে গাদ্দারি ইতিহাস ক্ষমা করবে না : নেজামে ইসলাম পার্টি  চাকসু নির্বাচনে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের প্যানেল ঘোষণা হক্কানী আলেমদের পরামর্শে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত জাতির জন্য কল্যাণকর: জমিয়ত আলোচনার মধ্যে কর্মসূচি গণতন্ত্রের জন্য শুভ নয়: মির্জা ফখরুল শনিবার ঢাকায় কচুয়ার উলামায়ে কেরামের মতবিনিময় সভা কুমিল্লার নূর মসজিদ মাদরাসায় একাধিক শিক্ষক নিয়োগ পিআর পদ্ধতি জনতা না চাইলে আমরাও আর দাবী করবো না: শায়েখে চরমোনাই জুলাই সনদ বাস্তবায়ন না হলে জাতীয় বিপর্যয় অনিবার্য: মহাসচিব 

জুলাই সনদ বাস্তবায়নসহ পাঁচ দফা বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির মাওলানা মামুনুল হক বলেন, জুলাই সনদকে কাগুজে ও অকার্যকর লেখায় পরিণত করা যাবে না—যেকোনো মূল্যে এটি কার্যকর করতে হবে।

আজ মঙ্গলবার (১৪ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর পুরানা পল্টনস্থ মজলিস মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি  এ কথা বলেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে মাওলানা মামুনুল হক পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন—
১) জুলাই সনদের অবিলম্বে পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন।
২) জাতীয় পার্টি ও ১৪ দলের রাজনীতি নিষিদ্ধকরণ।
৩) আগামী নির্বাচনে লেভেল–প্লেইং ফিল্ড নিশ্চিত করা।
৪) জুলাই গণহত্যার বিচার দৃশ্যমান করা।
৫) জাতীয় সংসদের উচ্চকক্ষে PR পদ্ধতি বাস্তবায়ন।

মাওলানা মামুনুল হক ৫ আগস্ট ঘোষিত জুলাই ঘোষণাপত্রের ত্রুটি উল্লেখ করে বলেন, জুলাই ঘোষণাপত্রে শাপলা গণহত্যার উল্লেখ না থাকায় এর ঐতিহাসিক দায় ড. ইউনুস সাহেব এবং বর্তমান অন্তর্বর্তীকালীন সরকার উভয়কেই বহন করতে হবে।

তিনি সতর্ক করে বলেন, জুলাই সনদকে আগামী সংসদের উপর ছেড়ে দেওয়া যাবে না। অতীত অভিজ্ঞতা (যেমন ৭৪-এর বিশেষ ক্ষমতা আইন) প্রমাণ করে, ক্ষমতায় বসলে প্রতিশ্রুতি ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দেয়। তাই সনদ কার্যকর করতে অধ্যাদেশ, রাষ্ট্রপতির সাংবিধানিক ঘোষণা বা অন্য কোনো কার্যকর প্রক্রিয়া গ্রহণ করতে হবে। তিনি একইসঙ্গে জুলাই সনদের ভিত্তিতে ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের দাবি জানান।

নির্বাচনী কাঠামো নিয়ে তিনি পরিষ্কার করে বলেন, লেভেল–প্লেইং ফিল্ড ছাড়া কোনো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে না; নির্বাচনকালীন প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সম্পূর্ণ নিরপেক্ষভাবে কাজ করবে—এটি নিশ্চিত করতে হবে।

জুলাই গণহত্যার বিচারের বিষয়ে তিনি দাবি করেন, ২০২৪ সালের জুলাই–আগস্টের অভ্যুত্থান ও তৎকালীন রাষ্ট্রীয় মদদে সংঘটিত হত্যাকাণ্ডের নেপথ্য কারিগর, পরিকল্পনাকারী ও দায়ীদের বিচারের আওতায় আনতে হবে এবং বিচারে দৃশ্যমান অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হবে—এটি জাতীয় ঐক্যের জন্য অপরিহার্য।

উচ্চকক্ষ নিয়ে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, নিম্নকক্ষে MMP (মিক্সড-PR) বিষয়ে মতভিন্নতা থাকায় আপাতত এটি স্থগিত রাখা গেলেও উচ্চকক্ষে PR ছাড়া কোনো গঠন গ্রহণযোগ্য হবে না। তিনি সতর্ক করে উল্লেখ করেন, PR ছাড়া উচ্চকক্ষ গঠিত হলে তা কেবল “বেকার পুনর্বাসনের উচ্চকক্ষ” হিসেবে পরিণত হবে।

লিখিত বক্তব্যের পর সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্নোত্তর পর্বে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মাওলানা মামুনুল হক। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জুলাই সনদের বাস্তবায়নে গড়িমসি একটি গভীর ষড়যন্ত্রের অংশ। জনগণের আত্মত্যাগের দলিলকে উপেক্ষা করা মানে জনগণকেই অপমান করা। জনগণ রক্ত দিয়ে অধিকার আদায় করেছে। সেই অধিকারকে পায়ের তলায় ফেলে রাখার চেষ্টা করলে ভয়াবহ অস্থিরতা দেখা দেবে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানান, অচিরেই আরো বেশ কয়েকটি দল একই দাবিতে  একই কর্মসূচি দিবে।  বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস এটাকে কোনো নির্বাচনি জোটে মনে করছে না; দলগুলো আপাতত শুধুমাত্র জুলাই সনদের অবিলম্বে বাস্তবায়নের দাবিতে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছে। 

তিনি জানান, কর্মসূচি ও অন্যান্য বিষয়ে বিভিন্ন দলের সঙ্গে আলোচনা চলছে—চূড়ান্ত সিদ্ধান্তের পর যুগপৎ কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, আমাদের এই পাঁচ দফা কোনো রাজনৈতিক স্বার্থ নয়; এটি জাতির অস্তিত্ব রক্ষার দাবি। সরকার যদি অবিলম্বে এ দাবিগুলো বাস্তবায়নের ঘোষণা না দেয়, তবে আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব এবং সিদ্ধান্ত বাস্তবায়নে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করব।

ঘোষিত কর্মসূচি:

১৮ সেপ্টেম্বর, ঢাকায় বিক্ষোভ মিছিল।

১৯ সেপ্টেম্বর, সকল বিভাগীয় শহরে বিক্ষোভ মিছিল।

২৬ সেপ্টেম্বর, জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দেশব্যাপী বিক্ষোভ মিছিল।

তিনি জানান ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে আগামী ১৮ সেপ্টেম্বর, বৃহস্পতিবার, বাদ আসর, বাইতুল মোকাররমের উত্তর গেটে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস ঢাকা মহানগরীর উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হবে। 

সংবাদ সম্মেলন সঞ্চালনা করেন মহাসচিব মাওলানা জালালুদ্দীন আহমদ। এসময় আরও উপস্থিত ছিলেন দলের সিনিয়র নায়েবে আমীর মাওলানা ইউসুফ আশরাফ, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা আতাউল্লাহ আমিন, মাওলানা তোফাজ্জল হোসেন মিয়াজী, মুফতি শারাফাত হোসাইন, সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুর রহমান হেলাল, মাওলানা এনামুল হক মুসা,  মাওলানা ফয়সাল আহমদ, মাওলানা আবু সাঈদ নোমান, প্রশিক্ষণ সম্পাদক মাওলানা জহিরুল ইসলাম, বায়তুল মাল সম্পাদক মাওলানা ফজলুর রহমান, প্রকাশনা সম্পাদক মাওলানা হারুনুর রশীদ, অফিস সম্পাদক মাওলানা রুহুল আমিন খান, প্রচার সম্পাদক মাওলানা হাসান জুনাইদ, নির্বাহী সদস্য মাওলানা সানাউল্লা আমিনী প্রমুখ।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ