মঙ্গলবার, ০২ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ১৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৭


১৩ বছর পর ফের চালু হচ্ছে ঢাকা-করাচি ফ্লাইট

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আগামী জানুয়ারি থেকে চালু হচ্ছে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের ঢাকা-করাচি-ঢাকা রুটের সরাসরি ফ্লাইট। প্রায় ১৩ বছর বন্ধ থাকার পর আবার চালু হচ্ছে এই রুটটি। আওয়ামী আমলে বন্ধ করা আকাশপথটি পুনরায় খুলে দেওয়ার বিষয়ে নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার। বিমানের আগামী বোর্ড মিটিংয়ে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত নেওয়া হবে।

এক সময় বিমানের ঢাকা-করাচি রুট ছিল লাভজনক। ঢাকা থেকে করাচির মধ্যে আকাশপথের দূরত্ব প্রায় দুই হাজার ৩৫০ কিলোমিটার। সরাসরি ফ্লাইট না থাকায় যাত্রীদের মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে ট্রানজিট নিতে হয়। ফলে সময় এবং ভাড়া দুই বৃদ্ধি পেয়েছে। অথচ সরাসরি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে করাচি যেতে সময় লাগবে তিন থেকে সাড়ে তিন ঘণ্টা। এতে দুদেশের বাণিজ্য, শ্রমবাজার, ট্রানজিট সুবিধা এবং সরাসরি যোগাযোগে নতুন সুযোগ তৈরি হবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সূত্র জানায়, করাচি একসময় বাংলাদেশের ব্যবসা, শিক্ষা ও শ্রমবাজারের জন্য গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্য ছিল। তবে ২০১২ সালে নিরাপত্তাজনিত কারণ দেখিয়ে রুটটি বন্ধ করে দেওয়া হয়। চলমান আঞ্চলিক যোগাযোগ বাড়ানোর পরিকল্পনার অংশ হিসেবে রুটটি আবার চালুর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

বেবিচক জানিয়েছে, যাত্রী চাহিদা, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শ্রমবাজার সংযোগ এবং করাচির শিল্পাঞ্চলের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তা বিবেচনা করেই এ পদক্ষেপ নেওয়া হয়। গত ৩ সেপ্টেম্বর বেবিচক চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল মোস্তফা মাহমুদ সিদ্দিকের সঙ্গে পাকিস্তান সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটির মহাপরিচালক নাদির শাফি দারের বৈঠকেও ফ্লাইট পুনরায় চালুর বিষয়ে গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা হয়।

বিমান কর্তৃপক্ষ জানায়, প্রাথমিক পরিকল্পনা অনুযায়ী সপ্তাহে দু’দিন ঢাকা–করাচি–ঢাকা রুটে ফ্লাইট পরিচালনা করা হবে। যাত্রীর চাহিদা বৃদ্ধি পেলে ভবিষ্যতে ফ্লাইট সংখ্যা বাড়ানো হবে। তবে এই ফ্লাইট চালুর বিষয়ে কিছু জটিলতা রয়েছে। প্রথমে আমরা ভেবেছিলাম শুধু পাকিস্তান সিভিল অ্যাভিয়েশন কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিলেই চলবে। কিন্তু করাচির জিন্নাহ এয়ারপোর্ট অথরিটি আলাদা ফলে সিভিল অ্যাভিয়েশন ও এয়ারপোর্ট অথরিটি উভয়েরই অনুমতি লাগবে। যে কারণে সময় একটু বেশি লাগবে।

বিমান কর্তৃপক্ষ আরো জানায় এছাড়া মার্কেটিং বিষয়ে কাজ রয়েছে। ফলে জানুয়ারির আগে ফ্লাইট শুরু সম্ভব নয়। এই রুটটি বোয়িং ৭৩৭-৮০০ দিয়ে পরিচালনা করা হবে। পাকিস্তানের অনেক যাত্রী রয়েছে যারা ঢাকা হয়ে ব্যাংকক, সিঙ্গাপুর যেতে পারবে। এতে করে তাদের খরচ ও সময় দুটোই সাশ্রয় হবে।

বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন, পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক বিবেচনায় রুটটি চালু হওয়া আঞ্চলিক সংযোগের জন্য বড় সুযোগ তৈরি করবে। বিশেষ করে বাণিজ্যিক, পর্যটন ও শিক্ষার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের জনসংযোগ বিভাগের জেনারেল ম্যানেজার বোশরা ইসলাম জানিয়েছেন, পাকিস্তান কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাও এগিয়ে চলছে এবং যেকোন সময় সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত হবে।

গত বছরের জুলাইয়ে ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর নতুন করে আলোচনায় এসেছে পাকিস্তান-বাংলাদেশ সম্পর্ক। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে বেড়েছে দুদেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ও কূটনৈতিক যোগাযোগ। এরই মধ্যে করাচি ও চট্টগ্রাম বন্দরের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলও শুরু হয়েছে।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ