বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৭ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
এক লাফে ভরিতে ৮৩৮৬ টাকা কমল স্বর্ণের দাম জুলাই সনদ বাস্তবায়নে নভেম্বরে গণভোট চায় জামায়াতে ইসলামী ১৮তম জাতীয় তাফসিরুল কুরআন মাহফিল ২০ ও ২১ নভেম্বর ইসরায়েলের ওপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে বিশ্বের প্রভাবশালী ইহুদিদের চিঠি  গণভোট নিয়ে বিএনপির বিরুদ্ধে জটিলতা তৈরির অভিযোগ জামায়াতের ‘পাঁচ দফা বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন অব্যাহত থাকবে’ জুলাই জাতীয় সনদ বাস্তবায়নে বিশেষজ্ঞদের সাথে ঐকমত্য কমিশনের সভা শিশু-কিশোরদের সুরক্ষা দিতে ছয় দফা সুপারিশ চিকিৎসকদের  ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত, কারাগারে অভিযুক্ত বুয়েট শিক্ষার্থী  ওআইসি সদস্য দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান উপদেষ্টা রিজওয়ানার

শিশুদের সঙ্গে রাসুল (সা.)-এর হাসি ও স্নেহ: এক চিরন্তন ভালোবাসার গল্প

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

OUR ISLAM প্রতিবেদক

যিনি ছিলেন মানবজাতির শ্রেষ্ঠ আদর্শ, তিনি শুধু রাজনীতি, সমাজনীতি কিংবা আখলাকের ক্ষেত্রে নয়—শিশুদের প্রতি ভালোবাসা ও কোমলতার ক্ষেত্রেও ছিলেন অতুলনীয়। আমাদের প্রিয় নবী হযরত মুহাম্মদ ﷺ ছিলেন এমন এক মহান মানব, যার চোখে শিশুরা ছিল ফুলের মতো পবিত্র, আনন্দের উৎস, দয়ার পাত্র।

ভালোবাসার ছায়াতলে ছোট্ট হৃদয়

নবীজির জীবনের এমন বহু ঘটনা ইতিহাসে লিপিবদ্ধ রয়েছে, যেখানে তিনি শিশুদের প্রতি অসাধারণ মমত্ব, স্নেহ আর হাসিমাখা আচরণে সিক্ত করেছেন। হজরত হাসান ও হুসাইন (রাঃ) তাঁর হৃদয়ের জান, তাঁর কাঁধে চড়ে খেলেছেন—আর তিনি সেজদা দীর্ঘ করেছেন, শুধু তাদের আনন্দের খাতিরে।

এক সাহাবি একবার বিস্ময়ের সঙ্গে বললেন, "আমার তো দশজন সন্তান, কিন্তু আমি কাউকেই চুমু দিইনি।" উত্তরে রাসুল ﷺ বললেন: "যে দয়া করে না, সে দয়া লাভ করবে না।" (বুখারি)

একবার নবীজি ﷺ মসজিদে নামাজ পড়াচ্ছিলেন। এ সময় তাঁর প্রিয় নাতি এসে তাঁর পিঠে চড়ে বসে। রাসুলুল্লাহ ﷺ সেজদা দীর্ঘ করেন, যতক্ষণ না শিশুটি স্বেচ্ছায় নেমে আসে। নামাজ শেষে তিনি বলেন,

"সে আমার পিঠে চড়েছিল, আমি চাইলাম না তাকে তাড়াহুড়ো করে নামিয়ে দিই।"

কি অপূর্ব এক ভালোবাসা! আজ আমরা যেখানে শিশুকে 'বাধা' মনে করি, সেখানে রাসুল ﷺ তাঁর ভালোবাসার পাখিদের জন্য নামাজের সময়ও কোমলতা দেখিয়েছেন।

রাসুল ﷺ কখনো কখনো শিশুদের সঙ্গে হাঁটতেন, খেলতেন, এমনকি দৌড় প্রতিযোগিতায় অংশ নিতেন। এক শিশুকে মজা করে তিনি বলেছিলেন,

"আয় আবু উমাইর, আমরা খেলি!"

এই শব্দে ছিল আন্তরিকতা, কোমলতা ও বন্ধুত্বের আমন্ত্রণ।

তিনি কখনো শিশুর দোষ খোঁজেননি, বরং তাদের ভালো দিকগুলো তুলে ধরতেন, উৎসাহ দিতেন। কোনো শিশুর কান্না শুনলে তাঁর মন ব্যথায় ভরে যেত।

 নাম ধরে ডাকতেন, পাশে বসিয়ে রাখতেন

রাসুল ﷺ শিশুদের নাম ধরে ডাকতেন, খুঁজে খুঁজে কাছে ডাকতেন। কাউকে তিরস্কার নয়, বরং উৎসাহ ও মমতা ছিল তাঁর আচরণের প্রধান বৈশিষ্ট্য।

একবার তিনি বলেন,

"আমি নামাজ শুরু করতে চেয়েছিলাম, কিন্তু একটি শিশুর কান্না শুনে নামাজ সংক্ষিপ্ত করে ফেললাম, যাতে তার মা কষ্ট না পায়।" (বুখারি)

বর্তমান সমাজে শিশুরা প্রায়ই অবহেলা ও অবজ্ঞার শিকার হয়। অথচ রাসুলুল্লাহ ﷺ আমাদের শিখিয়েছেন, শিশুরা ভালোবাসা পেলে গড়ে ওঠে সুস্থ, স্বাভাবিক ও আত্মবিশ্বাসী মানুষ হিসেবে।

রাসুল ﷺ–এর জীবনের এই অধ্যায় আমাদের মনে করিয়ে দেয়  "একটি শিশুর হাসি শুধু তার মুখেই নয়, আমাদের হৃদয়েও আলো ছড়িয়ে দেয়, যদি আমরা তা দেখার চোখ রাখি।"

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ