বৃহস্পতিবার, ২৩ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৭ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
২৪ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি: সারজিস ইন্ডিয়ার এজেন্ট ইসকন সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে দেশব্যাপী সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তুলুন ইবতেদায়ী শিক্ষকদের ন্যায্য দাবিতে শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্য জোটের জোরালো সমর্থন ভারতীয় আগ্রাসন নারী ও শিশু ধর্ষণের প্রতিবাদে সর্বস্তরের ছাত্র জনতার মানববন্ধন প্রলোভনের ফাঁদ: 'কেন আমাদের সন্তানরা এত সহজে ধরা দেয়? দেশ গড়ায় কেবল নেতা নয়, নীতিরও পরিবর্তন করতে হবে : মাসুদ সাঈদী ইমাম দম্পতিকে নির্যাতনের প্রতিবাদে দুর্গাপুরে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত জনগণকে ইসলামি বিপ্লব থেকে দূরে সরাতে চায় ইসরায়েল-যুক্তরাষ্ট্র হাসিনার বিচার না হলে জুলাই শহীদদের ওপর অবিচার হবে: অ্যাটর্নি জেনারেল নির্বাচনের দিনই গণভোটে অটল বিএনপি: ড. মঈন খান

ফিলিস্তিনি বন্দিদের অনেক লাশে ‘নির্যাতন ও হত্যার চিহ্ন স্পষ্ট’: দ্য গার্ডিয়ান

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

গাজা উপত্যকায় সাময়িক যুদ্ধবিরতির পর সেখানে ফিলিস্তিনি বন্দিদের ওপর নির্যাতন, বেআইনি হত্যাকাণ্ড ও সন্দেহজনক মৃত্যুর ভয়াবহ প্রতিবেদন প্রকাশ পেতে শুরু করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যমে দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ইসরাইলি সামরিক বন্দিশালা সেডিতিমান থেকে যে ১৯৫ জন ফিলিস্তিনি বন্দির লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে, তাতে স্পষ্টভাবে নির্যাতন ও বিচারবহির্ভূত হত্যার চিহ্ন পাওয়া গেছে। ফিলিস্তিনি চিকিৎসকেরা বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

লন্ডনভিত্তিক সংবাদমাধ্যমটি এক নজিরবিহীন প্রতিবেদনে চিকিৎসা বিষয়ক সনদ, গোপন ছবি ও সাক্ষ্য তুলে ধরে এমন সব অপরাধের পর্দা ফাঁস করেছে, যা ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধ তদন্তে নতুন অধ্যায় খুলে দিতে পারে।

 এদিকে এ ঘটনার পর জাতিসংঘের বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বিষয়ক বিশেষ প্রতিবেদক একটি স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি গঠনের আহ্বান জানিয়েছেন।

গার্ডিয়ান এবং ফিলিস্তিনি গণমাধ্যমের তথ্য অনুযায়ী, ইসরাইলি সেনাবাহিনী সম্প্রতি গাজা উপত্যকায় ১৯৫ ফিলিস্তিনি বন্দির লাশ ফেরত দিয়েছে, যেগুলোর প্রতিটিতে নির্যাতন ও হত্যার স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে।

চিকিৎসকদের বরাতে আল জাজিরা জানিয়েছে, অনেক মরদেহে নির্যাতন ও ‘মাঠে গুলি করে হত্যার’ (field execution) চিহ্ন পাওয়া গেছে। কিছু মরদেহের চোখ বাঁধা ও হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পাওয়া গেছে।

মরদেহগুলো দক্ষিণ গাজার খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। হাসপাতালের ফরেনসিক টিমের সদস্য সামেহ হামাদ বলেন, “অনেক মরদেহে নির্যাতন ও হত্যার স্পষ্ট চিহ্ন রয়েছে। কিছু মরদেহ এখনো শিকল বা দড়ি দিয়ে বাঁধা অবস্থায় ছিল।”

তিনি জানান, মরদেহগুলো মূলত ২৫ থেকে ৭০ বছর বয়সী পুরুষদের, যাদের অধিকাংশের গলায় ব্যান্ড বা দড়ি বাঁধা ছিল। বেশিরভাগের পোশাক ছিল বেসামরিক, তবে কয়েকজনের পরনে সামরিক পোশাক ছিল, যা ইঙ্গিত দেয় তারা ফিলিস্তিনি যোদ্ধা হতে পারেন।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, অনেক মরদেহ পোড়া, বিকৃত, কিংবা দেহের অংশ অনুপস্থিত। কিছু মরদেহে দাঁত নেই, আবার অনেকের শরীরে বালু ও ধুলো লেগে আছে।

গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের হিসাবে, ২০২৩ সালের অক্টোবরে যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৬৮ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। ধারণা করা হচ্ছে, ধ্বংসস্তূপের নিচে আরও দশ-হাজারের বেশি মরদেহ চাপা পড়ে আছে।

একজন নিহতের মা রাসমিয়া কুদেইহ (৫২) বলেন, “আমার ছেলে ২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর হামাসের হামলার দিন নিখোঁজ হয়। আজ আমি আশা করছি, ফেরত দেওয়া মরদেহগুলোর মধ্যে হয়তো ওর দেহও আছে।”

এদিকে, ২০ মাস ধরে ইসরাইলি কারাগারে বন্দি ছিলেন এমন একজন সাংবাদিক বন্দিদের ওপর নৃশংস নির্যাতনের ভয়াবহ বিবরণ তুলে ধরেছেন।

তিনি জানান, বন্দিদের কঠোর শীতের মধ্যে নগ্ন অবস্থায় রাখা হয়, হাত ও চোখ বেঁধে ১০০ দিন ধরে আটক রাখার পাশাপাশি কুকুর দিয়ে নির্যাতন করা হয়।

ইসরাইলের দখলকৃত ভূমিতে তৎপর সংগঠন ‘ফিজিশিয়ানস ফর হিউম্যান রাইটস’ জানিয়েছে, ইসরাইলি কারাগারে ফিলিস্তিনি বন্দিদের মৃত্যুর হার নজিরবিহীনভাবে বেড়েছে এবং নতুন তথ্য-প্রমাণ আসার পর এ বিষয়ে একটি আন্তর্জাতিক স্বাধীন তদন্তের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিয়েছে।

সংস্থাটি আরও জানিয়েছে, গত দুই বছরে তারা ইসরাইলি আটক কেন্দ্রে পরিকল্পিত নির্যাতনের একাধিক ঘটনা নথিভুক্ত করেছে।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ