ইসরায়েলের কুখ্যাত বন্দিশালা ‘সদে তেইমান’ থেকে কমপক্ষে ১৩৫ ফিলিস্তিনির বিকৃত মরদেহ ফেরত এসেছে গাজায়। গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ওই সব মরদেহ বন্দিশালায় দীর্ঘদিন আটক থাকা বন্দিদের বলে চিহ্নিত।
গাজা স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক ডা. মুনির আল–বুর্শ এবং খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালের একজন মুখপাত্র ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানকে জানিয়েছেন, প্রত্যেকটি মরদেহ ব্যাগে হিব্রু ভাষায় লেখা ট্যাগ ছিল, যেখানে ‘সদে তেইমান বন্দিশালা’ থেকে আগত বলে উল্লেখ করা হয়। কিছু মরদেহের ট্যাগে ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হওয়ার কথাও লেখা ছিল।
সদে তেইমান কেন্দ্রটি নেগেভ মরুভূমিতে অবস্থিত। আগেও এই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বন্দিদের অমানবিক নির্যাতন, বেআইনি মৃত্যু এবং মানসিকভাবে বিকৃত আচরণের অভিযোগ উঠেছে। গত বছর ফাঁস হওয়া ছবি ও প্রত্যক্ষদর্শীদের বর্ণনায় উঠে আসে, বন্দিদের খাঁচায় আটকে রাখা, চোখ বেঁধে ও হাতকড়া পরিয়ে হাসপাতালের খাটে শিকল দিয়ে বেঁধে রাখা এবং ডায়াপার পরতে বাধ্য করার মতো নৃশংসতা।
গত বছর ইসরায়েলি সেনাবাহিনী সদে তেইমান কেন্দ্রে ৩৬ বন্দির মৃত্যুর ঘটনা তদন্ত শুরু করলেও এখনও কোনো দৃশ্যমান অগ্রগতি হয়নি। ওই কেন্দ্রকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর উদ্বেগ থাকলেও কার্যকর পদক্ষেপ তেমন নেওয়া হয়নি।
গাজায় মার্কিন-মধ্যস্থ সাময়িক যুদ্ধবিরতির অংশ হিসেবে হামাস কিছু নিহত ইসরায়েলি জিম্মির দেহ ফেরত দিয়েছে। অপরদিকে, ইসরায়েল ৭ অক্টোবর ২০২৩ সালের হামলার পর নিহত ১৫০ জন ফিলিস্তিনির মরদেহ ফেরত দিয়েছে বলে জানা গেছে।
গাজায় এসব মরদেহ ফেরত আসার পর স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ, শোক এবং আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। স্বজনহারা পরিবারগুলো বলছে , এগুলো নিছক লাশ নয়, বরং একটি জাতিকে কীভাবে চাপা নির্যাতনের মধ্যে রেখে নিশ্চুপ করে ফেলা যায়, তার প্রমাণ।
এলএইস/