রবিবার, ১৯ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৩ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৭ রবিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
জামায়াতের নির্বাচনি সভা ভণ্ডুল করে দিলেন বিএনপির নেতাকর্মীরা মিথ্যা মামলায় দুই মাদরাসা শিক্ষককে হয়রানি, মুক্তির দাবিতে মানববন্ধন চাঁদা না পেয়ে মসজিদের ইমামকে মারধর, স্ত্রীকে শ্লীলতাহানি ৫ দফা দাবিতে আন্দোলনরত দলসমূহের যৌথ সংবাদ সম্মেলন জামায়াতের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক অভিযোগ এনসিপির আহ্বায়ক নাহিদের সিলেটে সৃজনঘরের দিনব্যাপী আয়োজনে হাজারও তরুণের আত্মনির্মাণের শপথ লক্ষ্মীপুরের ৯ দোকানে আগুন, ক্ষতি কোটি টাকার  গাজায় ফের বিমান হামলা শুরু করেছে ইসরাইলের  ইসলামী সংস্কৃতিতে মুগ্ধ হয়ে ইসলাম গ্রহণ কোরিয়ান যুবকের আর্থিক স্বাবলম্বী স্ত্রীরা ভরণপোষণ চাইতে পারবেন না : দিল্লি হাইকোর্ট

আর্থিক স্বাবলম্বী স্ত্রীরা ভরণপোষণ চাইতে পারবেন না : দিল্লি হাইকোর্ট

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

স্ত্রী আর্থিকভাবে স্বাবলম্বী বা স্বনির্ভর হলে ভরণপোষণ বা অ্যালিমনি না দেওয়ার পক্ষে রায় দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট। 

আদালত পর্যবেক্ষণের আলোকে মন্তব্য করেছে যে, স্থায়ী ভরণপোষণ বা পার্মানেন্ট অ্যালিমনি মূলত সামাজিক ন্যায়বিচারের একটি ব্যবস্থা। আর্থিকভাবে সক্ষম ব্যক্তিদের মধ্যে আর্থিক সমতা আনার বা বিত্তশালী হওয়ার হাতিয়ার নয়।

ভারতের আইনি সংবাদ ওয়েবসাইট বার অ্যান্ড বেঞ্চ-এর প্রতিবেদনের বরাতে এনডিটিভি এ তথ্য জানিয়েছে।

বিচারপতি অনিল ক্ষেত্রপাল এবং বিচারপতি হরিশ বৈদ্যনাথন শঙ্কর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ বলেছেন, আইন অনুযায়ী ভরণপোষণ দাবি করা ব্যক্তিকে অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে তিনি সত্যিই আর্থিক সহায়তা পাওয়ার মতো অবস্থায় আছেন।

রায়ে আরও বলা হয়, হিন্দু ম্যারেজ অ্যাক্টের ধারা ২৫ অনুযায়ী বিচারিক ক্ষমতা এমনভাবে ব্যবহার করা যাবে না যাতে আর্থিকভাবে স্বনির্ভর আবেদনকারীকে অ্যালিমনি দেওয়া হয়। এই ক্ষমতা অবশ্যই সঠিকভাবে এবং বিচক্ষণতার সঙ্গে প্রয়োগ করতে হবে। উভয় পক্ষের আর্থিক সামর্থ্য বিবেচনা করে এবং আবেদনকারীর প্রকৃত আর্থিক দুর্বলতার প্রমাণ না থাকলে তা দেওয়া যাবে না।

একটি ভরণপোষণের দাবি খারিজ এবং বিবাহবিচ্ছেদের অনুমতি দিয়ে ফ্যামিলি কোর্টের আদেশ পুনর্বহাল রেখে এই পর্যবেক্ষণ জানান দিল্লির হাইকোর্ট।

স্বামী আইনজীবী এবং স্ত্রী ভারতীয় রেলওয়ে ট্রাফিক সার্ভিস কর্মকর্তা। গত ২০১০ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে করেন তাঁরা। এর আগে তাঁদের দুজনেরই বিবাহবিচ্ছেদ হয়েছিল। এই বিয়ের মাত্র ১৪ মাসের মধ্যেই আলাদা হয়ে যান তাঁরা।

স্বামী অভিযোগ করেন, স্ত্রী তাঁকে মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করেছেন। অশ্রাব্য ভাষা ব্যবহার করেছেন, অপমানজনক মেসেজ পাঠান, দাম্পত্য অধিকার অস্বীকার এবং পেশাগত ও সামাজিকভাবে অপদস্থ করেছেন।

অন্যদিকে স্ত্রী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে স্বামীর বিরুদ্ধে নির্যাতনের পাল্টা অভিযোগ আনেন।

ফ্যামিলি কোর্ট তাদের রায়ে বিবাহবিচ্ছেদ মঞ্জুর করে এবং উল্লেখ করে যে স্ত্রী বিবাহবিচ্ছেদে রাজি হওয়ার শর্ত হিসেবে ৫০ লাখ রুপি আর্থিক সমঝোতা দাবি করেছিলেন। এই দাবি তিনি নিজেই হলফনামা ও জেরা চলাকালীন স্বীকার করেছেন।

দিল্লি হাইকোর্টও এই পর্যবেক্ষণের সঙ্গে একমত হন এবং বলেন এতে হস্তক্ষেপের কোনো যৌক্তিক কারণ নেই।

বেঞ্চ বলেন, ‘ফ্যামিলি কোর্টের এই সিদ্ধান্তকে ভিত্তিহীন বা অযৌক্তিক বলা যায় না। আপিলকারীর (স্ত্রীর) এই মনোভাবের একটি সুস্পষ্ট আর্থিক দিক ছিল। বরং আদালতে উপস্থাপিত প্রমাণের ভিত্তিতে এটি ছিল একটি যৌক্তিক সিদ্ধান্ত।’ 

হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে বলা হয়, স্ত্রী তাঁর স্বামী এবং তাঁর মায়ের বিরুদ্ধে ‘অবমাননাকর ভাষা’ ব্যবহার করেছিলেন। এমনকি স্বামীকে ‘অবৈধ সন্তান’ বলে আখ্যা দেন, যা আদালতের মতে মানসিক নির্যাতনের শামিল।

শেষ পর্যন্ত আদালত স্থায়ী ভরণপোষণ বা পার্মানেন্ট অ্যালিমনি দেওয়ার আবেদন নাকচ করে দেয়। কারণ হিসেবে আদালত উল্লেখ করে, ওই নারী একজন সিনিয়র সরকারি কর্মকর্তা। তিনি ভালো বেতন পান এবং আর্থিকভাবে সাবলম্বী।

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ