শনিবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৫ ।। ২ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২৬ রবিউস সানি ১৪৪৭


এক মুসলিম কন্ডাক্টরের সাহসিকতায় বহু প্রাণ রক্ষা ভারতের বাসে 

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারতের জয়সলমীরের কাছে একটি এসি স্লিপার বাসে আগুন লাগলে অসাধারণ সাহস দেখিয়ে বহু যাত্রীকে প্রাণে বাঁচিয়েছেন এক মুসলিম কন্ডাক্টর রফিক খান। যদিও তিনি নিজেও আগুনে পুড়ে গুরুতরভাবে আহত হয়েছেন।

রফিক বর্তমানে যোধপুরের ডাঃ এস.এন. মেডিকেল কলেজে চিকিৎসাধীন। দুর্ঘটনার সময় তিনি বাসের পেছনের দিকের আসনের কাছে টিকিট পরীক্ষা করছিলেন। এসময় তিনি বাসের ভেতরে ধোঁয়া দেখতে পান।

তাঁর ভাই ইরফান সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, “যখন ধোঁয়া উঠতে দেখেন তখন তিনি পেছনের দিকে ছিলেন। তিনি দরজা খুলতে মূল গেটের দিকে ছুটে যান। বাসের মাঝামাঝি পৌঁছতেই ছাদ থেকে আগুনের শিখা বেরিয়ে আসে এবং একটি বিকট শব্দ হয়। তিনি পড়ে যান কিন্তু হামাগুড়ি দিয়ে গেটে পৌঁছান, সেটি খোলেন এবং অনেক যাত্রীকে বেরিয়ে যেতে সাহায্য করেন।”

কর্মকর্তারা জানান, যখন এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে জয়সলমীর থেকে যোধপুরগামী বাসটিতে প্রায় ৫০ জন যাত্রী ছিলেন। আগুনের কারণ এখনও তদন্তাধীন। তবে প্রাথমিক রিপোর্টে জানা গেছে, আগুন গাড়ির পেছনের দিক থেকে শুরু হয়ে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। স্থানীয় বাসিন্দারা আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারে সহায়তা করেন।কন্ডাক্টর সহ পনেরো জন আগুনে আহত হয়েছেন, অন্যদিকে ২০ জন প্রাণ হারিয়েছেন। আহতদের প্রথমে জয়সলমীরে নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে চিকিৎসার জন্য যোধপুরে স্থানান্তরিত করা হয়।

হাসপাতালের সিনিয়র ডাক্তার ডাঃ বি.এস. যোধা বলেন, “রাত ৯টার দিকে জয়সলমীর থেকে ১৫ জন রোগীকে আমাদের কাছে আনা হয়। তাদের মধ্যে পাঁচজনের ৭০% এর বেশি দগ্ধ হওয়ায় তারা ভেন্টিলেটরে আছেন। অন্যদের ৪০-৫০% পুড়ে গেছে।” তিনজনকে সঙ্গে সঙ্গে ভেন্টিলেটরে দেওয়া হয়েছিল বলে জানান তিনি।কর্মকর্তারা জানান, নিহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি। দশটি লাশ এস.এন. মেডিকেল কলেজে রয়েছে, বাকিগুলি এইমস যোধপুরে রয়েছে।

কালেক্টর প্রতাপ সিং জানান, নিহতদের পরিবারের জন্য একটি হেল্পলাইন স্থাপন করা হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা ভয়াবহ দৃশ্যের বর্ণনা দিয়েছেন। একজন বেঁচে যাওয়া ব্যক্তি পীর মোহাম্মদ বলেন, তিনি একটি জানালা ভেঙে তার স্ত্রী, শ্যালিকা এবং একটি সন্তানকে বের করে আনতে পেরেছিলেন, কিন্তু ওপরের বার্থে ঘুমন্ত তার দুই সন্তানকে বাঁচাতে পারেননি। তিনি কাঁদতে কাঁদতে বলেন, “আগুন খুব তীব্র হয়ে উঠেছিল। আমি বেঁচে গেলাম, কিন্তু আমার সন্তানরা জীবন্ত পুড়ে গেল।”

চিকিৎসা সহায়তায় বিলম্ব নিয়ে নিহতদের পরিবারও ক্ষোভ প্রকাশ করেছে। পুলিশ ও জেলা কর্মকর্তারা আগুনের কারণ তদন্ত করছেন এবং সকল মৃতদের শনাক্ত করার কাজ করছেন।

এলএইস/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ