ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডের আরও একটি স্কুলে সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে দখলদার ইসরায়েল। এতে কমপক্ষে ১৫ জন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন আরও অনেকে।
হামলার শিকার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের এই স্কুলটিতে বাস্তুচ্যুত লোকেরা আশ্রয় নিয়েছিলেন। শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
সংবাদমাধ্যমটি বলছে, গাজার জাবালিয়া শরণার্থী শিবিরের হাফসা আল-ফালুজা স্কুলে ইসরায়েলি বিমান হামলায় অন্তত ১৫ জন নিহত এবং আরও অনেকে আহত হয়েছেন। ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বর হামলার শিকার এই স্কুল ভবনটিতে বহু বাস্তুচ্যুত ফিলিস্তিনি বসবাস করছিলেন।
অন্যদিকে নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুরাও রয়েছে বলে পৃথক প্রতিবেদনে জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী বলেছে, হামাস যোদ্ধাদের ব্যবহৃত একটি ‘কমান্ড-এন্ড-কন্ট্রোল সেন্টার’ লক্ষ্য করে তারা ‘সুনির্দিষ্ট’ হামলা চালিয়েছে।
এদিকে ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা ভূখণ্ডে গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বর্বর হামলায় আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে উপত্যকাটিতে নিহতের মোট সংখ্যা ৪১ হাজার ৫০০ জন ছাড়িয়ে গেছে।
বার্তাসংস্থা আনাদোলু বলছে, গাজা উপত্যকায় ইসরায়েলের চলমান হামলায় কমপক্ষে আরও ৩৯ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন। এতে করে গত বছরের অক্টোবর থেকে এ পর্যন্ত মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে ৪১ হাজার ৫৩৪ জনে পৌঁছেছে বলে বৃহস্পতিবার অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, নিরলস এই হামলায় আরও অন্তত ৯৬ হাজার ৯২ জন ব্যক্তিও আহত হয়েছেন।
মন্ত্রণালয় বলেছে, গত ২৪ ঘণ্টায় ইসরায়েলি বাহিনীর অব্যাহত আগ্রাসনে ৩৯ জন নিহত এবং আরও ৮৬ জন আহত হয়েছেন। অনেক মানুষ এখনও ধ্বংসস্তূপের নিচে এবং রাস্তায় আটকা পড়ে আছেন কারণ উদ্ধারকারীরা তাদের কাছে পৌঁছাতে পারছেন না।
ফিলিস্তিনি স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ মনে করছে, গাজা উপত্যকা জুড়ে ধ্বংস হওয়া বাড়ির ধ্বংসস্তূপের নিচে এখনও ১০ হাজারেরও বেশি লোক নিখোঁজ রয়েছেন। মূলত গাজায় অবিলম্বে যুদ্ধবিরতির দাবি জানিয়ে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব সত্ত্বেও ইসরায়েল অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডে তার নৃশংস আক্রমণ অব্যাহত রেখেছে।
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর হামাসের নজিরবিহীন আন্তঃসীমান্ত হামলার পর থেকে ইসরায়েল গাজা উপত্যকায় অবিরাম বিমান ও স্থল হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। ইসরায়েলি এই হামলায় হাসপাতাল, স্কুল, শরণার্থী শিবির, মসজিদ, গির্জাসহ হাজার হাজার ভবন ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে।
মূলত ইসরায়েলি আক্রমণ গাজাকে ধ্বংসস্তূপে পরিণত করেছে। জাতিসংঘের মতে, ইসরায়েলের বর্বর আক্রমণের কারণে গাজার প্রায় ৮৫ শতাংশ ফিলিস্তিনি বাস্তুচ্যুত হয়েছেন। আর খাদ্য, বিশুদ্ধ পানি এবং ওষুধের তীব্র সংকটের মধ্যে গাজার সকলেই এখন খাদ্য নিরাপত্তাহীন অবস্থার মধ্যে রয়েছেন।
এছাড়া অবরুদ্ধ এই ভূখণ্ডের ৬০ শতাংশ অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত বা ধ্বংস হয়ে গেছে। ইসরায়েল ইতোমধ্যেই আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়েছে।
এনএ/
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                  
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                         
                               
                               
                              