সোমবার, ২০ মে ২০২৪ ।। ৬ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১২ জিলকদ ১৪৪৫


ইসরায়েল বিরোধী বিক্ষোভের জোয়ার এবার ইউরোপে

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

ফিলিস্তিনের গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে দেশে দেশে বিক্ষোভ হচ্ছে। এই বিক্ষোভ বড় আকার ধারণ করেছে ইউরোপের দেশগুলোর বিশ্ববিদ্যালয়ে। সেখানকার বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দাবি, ইসরায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে হবে। এই দাবিতে কয়েক দিন ধরে নেদারল্যান্ডস, বেলজিয়াম, জার্মানি, ফ্রান্স, সুইজারল্যান্ড ও অস্ট্রিয়ায় বিক্ষোভ চলছে। এই বিক্ষোভের জেরে ধরপাকড় ও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনাও ঘটেছে। 

যুক্তরাজ্যের গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ানের খবরে বলা হয়েছে, ইসরায়েলবিরোধী বিক্ষোভের বড় সূচনা হয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের ক্যাম্পাসগুলোয়। দেশটিতে এখনো বিক্ষোভ চলছে। এই পরিস্থিতিতে বিক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে ইউরোপে। নেদারল্যান্ডসের ইউনিভার্সিটি অব আমস্টারডামে বিক্ষোভরত শিক্ষার্থীরা তাঁবু করে ক্যাম্পাসে থাকতে শুরু করেছিলেন। গত সোমবার সেখান থেকে ১৬৯ জনকে গ্রেপ্তার করে ডাচ পুলিশ। 

এ সময় শিক্ষার্থীরা ক্যাম্পাস ছাড়তে না চাইলে মারধর এবং তাঁদের তাঁবু ভেঙে দেয় পুলিশ। গত সোমবারের বিক্ষোভের পর মঙ্গলবার আবারও বিক্ষোভ শুরু হয়। এদিন নেদারল্যান্ডসের ডেলফ্ট ইউনিভার্সিটি অব টেকনোলজি ও ইউট্রেখট ইউনিভার্সিটিতে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ করেন। এ ছাড়া মঙ্গলবার রাতে প্যারিসের সোরবন বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি হল দখল করে দুই ঘণ্টা বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।বিক্ষোভের সময় ৮৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এ ছাড়া প্যারিসের আরেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয় সায়েন্সেস পো ইউনিভার্সিটিতে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। সেখান থেকে দুই শিক্ষার্থীকে গ্রেপ্তার করা হয়। বার্তা সংস্থা এএফপি বলছে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে গত এক সপ্তাহে বিভিন্ন সময় বিক্ষোভ হয়েছে। তাঁদের ছত্রভঙ্গ করতে বিভিন্ন সময় ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকেছে। গাজায় যুদ্ধ বন্ধের দাবিতে সেখানে ১৩ শিক্ষার্থী আমরণ অনশন করছেন। 

এদিকে জার্মানির পশ্চিমাঞ্চলে লিপজিগ ইউনিভার্সিটিতেও একটি হলে বিক্ষোভ করেন ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী। গত মঙ্গলবার বিকেলে ওই বিক্ষোভের ব্যানারে লেখা ছিল, ‘গণহত্যার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় দখল’। এ সময় কেউ যাতে বাইরে থেকে ঢুকতে না পারে, সে জন্য ব্যারিকেড দেন শিক্ষার্থীরা। পরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ওই শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে মামলা করে। যদিও ওই বিক্ষোভ থেকে কাউকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। 

মঙ্গলবার এই ঘটনার আগে ফ্রি ইউনিভার্সিটি অব বার্লিনে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ডাকলে সেখানে পুলিশ আসে এবং বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, সেখানে বেশ কিছু স্থাপনা ভাঙচুর করেছেন শিক্ষার্থীরা। 

সুইজারল্যান্ডের তিন শহর লুজন, জেনেভা ও জুরিখে তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে গত মঙ্গলবার বিক্ষোভ শুরু হয়। এই বিক্ষোভ শুরুর পর লুজন ইউনিভার্সিটি জানিয়েছে, তাদের সঙ্গে ইসরায়েলের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পর্ক নেই। 

গত বৃহস্পতিবার থেকে অস্ট্রিয়ার ইউনিভার্সিটি অব ভিয়েনায় বিক্ষোভ হচ্ছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে তাঁবু করে থাকছেন শিক্ষার্থীরা। বেলজিয়ামের গেন্ট ইউনিভার্সিটিতে শতাধিক শিক্ষার্থী ক্যাম্পাসে থেকে বিক্ষোভ করছেন। এ ছাড়া সম্প্রতি আয়ারল্যান্ড, ফিনল্যান্ড, ডেনমার্ক, ইতালি, স্পেন ও যুক্তরাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও বিক্ষোভ হয়েছে। গ্রিসের এথেন্সে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে।

এনএ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ