রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
পেশীশক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম বন্ধে পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন- আহমদ আবদুল কাইয়ূম জেদ্দায় হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনী নভেম্বরে আজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিস বানিয়াচং উপজেলা শাখার ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন ‘নীলনদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতেও ইসলাম নেই’ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সম্পাদক মাজহারুল ‘ইসলামি শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকুন’ গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা পিআর সিস্টেমের নির্বাচন নিরাপদ নির্বাচন, আদর্শের নির্বাচন: শায়খে চরমোনাই মসজিদ নিয়ে দ্বন্দ্ব, সড়কে জুমা আদায়

পাচার হওয়ার অর্থ দরিদ্রদের কল্যাণে তহবিল করবে সরকার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বাংলাদেশের অর্থনৈতিক খাতের ভাঙনের পেছনে অন্যতম বড় নাম হয়ে উঠেছে এস আলম গ্রুপ। অভিযোগ উঠেছে, এই একটি গ্রুপই ছয়টি ইসলামী ব্যাংক থেকে ঋণের নামে লুট করেছে কয়েক লাখ কোটি টাকা। শুধু ইসলামী ব্যাংক থেকেই আত্মসাৎ করা হয়েছে দেড় লাখ কোটি টাকারও বেশি অর্থ, যার মধ্যে ইতোমধ্যে ৭০ হাজার কোটি টাকার উৎস শনাক্ত হয়েছে।

এই আর্থিক লুটপাটে এস আলম গ্রুপের পাশাপাশি নাম উঠে এসেছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন ব্যবসায়ীরও। সালমান এফ রহমান ও নজরুল ইসলাম মজুমদারের মতো প্রভাবশালীরা দেশ-বিদেশে গড়ে তুলেছেন অবৈধ সম্পদের সাম্রাজ্য। এসব অর্থের উৎস নিয়ে তদন্ত শুরু করেছে অন্তর্বর্তী সরকার, এবং এখন পর্যন্ত বিপুল পরিমাণ অর্থ ও সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।

সোমবার উপদেষ্টা পরিষদের সঙ্গে বৈঠক শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর। তিনি বলেন, যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ব্যাংক থেকে অর্থ আত্মসাৎ করেছে, তাদের নামে থাকা শেয়ার ও বিভিন্ন সম্পদ জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া, অন্তর্বর্তী সরকারের প্রেস সচিব শফিকুল আলম জানিয়েছেন, এ সকল সম্পদ থেকে গঠিত হবে একটি বিশেষ তহবিল, যা দরিদ্রদের কল্যাণে ব্যয় করা হবে। একইসাথে, ব্যাংকগুলো থেকে লুট হওয়া অর্থ সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে ফেরত দেওয়া হবে যাতে আমানতকারীদের স্বার্থ রক্ষা করা যায়।

জানা গেছে, দেশের অভ্যন্তরে এ পর্যন্ত জব্দ করা সম্পদের মূল্য এক লাখ ত্রিশ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এর বাইরে বিদেশে পাচার করা হয়েছে আরও দুই হাজার কোটি টাকার সম্পদ। বৈদেশিক বিভিন্ন স্থানে থাকা সম্পদের মধ্যে ১৬৪ মিলিয়ন ডলারেরও বেশি অর্থ অ্যাটাচমেন্ট হয়েছে। এ ছাড়া দেশের ভেতরে ফ্রিজ করে রাখা হয়েছে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার অস্থাবর সম্পদ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের বক্তব্য অনুযায়ী, এ অর্থ উদ্ধার ও পুনরুদ্ধারের প্রক্রিয়া চলমান। একইসাথে, তিনি অভিযোগ করেন, মোবাইল ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস ‘নগদ’ বৈধ সীমার বাইরে গিয়ে ৬৫০ কোটি টাকার অতিরিক্ত ই-মানি তৈরি করেছে, যা ব্যাংকিং আইন অনুযায়ী গুরুতর অনিয়ম এবং কার্যত অর্থনীতিতে জালিয়াতির শামিল। তার ভাষায়, ‘এক টাকা ব্যাংকে রেখে এক টাকার ই-মানি তৈরি করার নিয়ম থাকলেও তারা তার চেয়ে অতিরিক্ত ই-মানি সৃষ্টি করেছে।’

তবে আশার কথা, পাচার করা অর্থ ফেরত পাঠাতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে বিশ্বের কয়েকটি দেশ। গভর্নর জানান, আইনি কাঠামো তৈরি করে দ্রুত পদক্ষেপ নিলে এসব অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হবে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়িত হলে দেশের আর্থিক খাত ঘুরে দাঁড়াবে এবং জনগণের আস্থা পুনরুদ্ধার হবে।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ