রবিবার, ০৪ মে ২০২৫ ।। ২০ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৬ জিলকদ ১৪৪৬


পাশ্চাত্য সংস্কৃতি এদেশে চলতে দেওয়া হবে না: ইবনে শাইখুল হাদিস

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির ও হেফাজত ইসলাম বাংলাদেশের যুগ্ম-মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক (ইবনে শাইখুল হাদিস) বলেছেন, নারী বিষয়ক সংস্কার প্রস্তাবনার মাধ্যমে দেশের মানুষের ধর্মীয় অনুভূতিতে চরমভাবে আঘাত করা হয়েছে। বাংলাদেশ মুসলিম প্রধান দেশ—এখানে ইসলামি সংস্কৃতি চলবে, পাশ্চাত্য কোনো সংস্কৃতি এদেশে চলতে দেওয়া হবে না।

শনিবার (৩ মে) রাজধানীর সোহরওয়ার্দী উদ্যানে হেফাজতে ইসলামের মহাসমাবেশে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

মাওলানা মামুনুল হক নারী সংস্কার কমিশন বাতিল করে আলেমদের পরামর্শক্রমে নতুন একটি কমিশন গঠনের দাবি জানান।

স্বাধীনতা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘১৯৭১ সালে রক্ত দিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছি, ২০২৪ সালে পুনরায় স্বাধীন করেছি। দেশের এক ইঞ্চি মাটিও কাউকে দেওয়া হবে না। মানবিক করিডোরের নামে যে করিডোর দেওয়া হচ্ছে, তা বাতিল করতে হবে।’

ভারতের প্রতি কড়া বার্তা দিয়ে মাওলানা মামুনুল বলেন, ‘১৯৭১ সালে পিন্ডির জিঞ্জির ছিন্ন করেছি ভারতের দাসত্ব করার জন্য নয়। ২০২৪ সালে ভারতের দাসত্ব মুক্ত হয়েছি আমেরিকার দাসত্ব করার জন্যও নয়।’
তিনি প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে সতর্ক করে বলেন, ‘আমেরিকার কোনো পরামর্শ এ দেশে বাস্তবায়ন হবে না।’

মাওলানা মামুনুল হক ডক্টর ইউনূসের দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, ‘আপনি আন্তর্জাতিক ব্যক্তিত্ব। গাজায় মুসলমানদের ওপর নির্যাতন করা হচ্ছে এই কথাগুলো আপনি আন্তর্জাতিক মহলে তুলে ধরবেন।’
তিনি আরো বলেন, ভারতের নির্যাতিত মুসলমানদের প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানাতে হবে।

তিনি ভারতের ওয়াকফ সংশোধনী বিলের সমালোচনা করে বলেন, ‘ভারতে শত শত বছর যাবত মুসলিম ওয়াকফ সম্পত্তি দখলের জন্য এই বিল পাস করা হয়েছে।’ একইসাথে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে 'কসাই' আখ্যা দিয়ে কাশ্মীরসহ ভারতজুড়ে মুসলমানদের ওপর নির্যাতনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানান। 

ভারতের মুসলমানদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘ওয়াকফ বিলের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলুন, আমরা এপার থেকে ১৮ কোটি মুসলমান সংহতি জানাবো।’

আওয়ামী লীগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করার দাবি আমাদের কোনো অনুরোধ বা দুর্বল দাবি নয়, এটি ৫ আগস্টেই সিদ্ধান্ত হিসেবে ঘোষণা করেছি।’

তিনি অভিযোগ করেন, ‘২০১৩ সালে শাপলায় এবং ২০২৪ সালের জুলাইয়ে আওয়ামী লীগ যে হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে, তাতে তারা রাজনীতি করার সকল অধিকার হারিয়েছে।’

তিনি ২০১৩ সালের ঘটনা উল্লেখ করে বলেন, ‘অনেক লাশ বেওয়ারিশ হিসেবে দাফন করা হয়েছে, অনেককে গুম করা হয়েছে। এসবের তথ্য যদি গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে থাকে, তা জাতির সামনে প্রকাশ করতে হবে।’

মাওলানা মামুনুল হক অভিযোগ করে বলেন, হেফাজতের নেতৃবৃন্দের নামে  গত সরকারের আমলে হওয়া মিথ্যা মামলাগুলো এখনো ঝুলছে। আলেমদেরকে হয়রানি করছে। এ নিয়ে আমরা কয়েকবার অন্তর্বর্তী সরকারের সাথে সরাসরি সাক্ষাৎ করে কথা বলেছি। কিন্তু তারা কোনো পাত্তাই দিচ্ছে না। তিনি প্রধান উপদেষ্টার প্রতি প্রশ্ন রেখে বলেন, কয়েকদিন আগেও আপনি আমাদের সাথে আদালতে হাজিরা দিতেন, আপনাদের অনেকের মামলা এখন বাতিল হয়ে গেছে। কিন্তু আমাদের মামলাগুলো কেন বাতিল হয় নাই। 

মামলা প্রত্যাহারে হুশিয়ারি বার্তা দিয়ে মাওলানা মামুনুল হক বলেন, আগামী দুই মাসের হেফাজতের সকল মামলা প্রত্যাহার না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। 

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ