দেশ নিয়ে গর্ববোধ করা কিংবা দেশ নিয়ে আশাবাদী হয়ে ওঠার প্রবণতা বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে ক্রমে কমেই চলছে। এদের মধ্যে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ ও চাকরির প্রয়োজনে বিদেশে যেতে চায় দেশের ৫৫ শতাংশ তরুণ। এমন পরিস্থিতিতেও বাংলাদেশি তরুণদের বড় একটা অংশ বিদেশে যেয়ে নিজেদের ক্যারিয়ার গড়ছেন, সেই সাথে অভাবনীয় সাফল্যের দেখাও পাচ্ছেন। বিদেশের মাটিতে বাংলাদেশি তরুণদের সাফল্য মূলত উচ্চশিক্ষা, প্রযুক্তি এবং বিভিন্ন পেশাদার ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্যের ওপর নির্ভর করে। এমন কয়েকজন সফল তরুণের গল্প সৌদি আরবের হজ-উমরা সেবায় মুখে মুখে ছড়িয়ে আছে। হজ ও উমরা যাত্রীদের সেবায় এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে তরুণদের উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত ‘মক্কা গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি।’
হজ ও উমরা পবিত্র এক ইবাদত, স্বপ্নের সফর। এই আধ্যাত্মিক যাত্রাকে আরও আরামদায়ক ও নির্বিঘ্ন করে তোলার লক্ষ্যে সৌদি আরবে দক্ষতার সঙ্গে গ্রাউন্ড সার্ভিস প্রদান করে চলেছে মক্কা গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল। সব ধরনের মানুষের জন্য স্বপ্নের এই যাত্রাকে স্মরণীয় করে তোলাই কোম্পানির মূল লক্ষ্য।
প্রতিষ্ঠানটির জন্ম কয়েকজন স্বপ্নবাজ তরুণের হাত ধরে। মক্কায় হজযাত্রীদের সেবায় দীর্ঘদিন ধরে নিয়োজিত ছিলেন বাংলাদেশের দুই তরুণ পিরোজপুরের ইমদাদুল হক মিরাজ ও কুমিল্লার রাশেদ খান। সঙ্গে ছিলেন তাদের সৌদি বন্ধু ইঞ্জিনিয়ার আনাস হাবিব সোবগাহ। তাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে ভিত্তি করে ধর্মপ্রাণ মুসলমানদের আরও উন্নত সেবা দেওয়ার ঐকান্তিক ভাবনা থেকেই এই কোম্পানির সূচনা। এটি শুধুমাত্র একটি ব্যবসায়িক উদ্যোগ নয়, বরং এটি তাদের দীর্ঘদিনের সেবার অভিজ্ঞতার ফসল এবং একটি মহৎ উদ্দেশ্য পূরণের প্রতিচ্ছবি।
হজ ও উমরা যাত্রীদের সৌদি আরবে পৌঁছানো থেকে শুরু করে দেশে ফেরা পর্যন্ত প্রয়োজনীয় সব গ্রাউন্ড সার্ভিস প্রদান করে মক্কা গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি। তাদের মূল সেবাগুলো হলো- হজের সময় হজ যাত্রীদের বিভিন্ন প্রয়োজন মেটানো ও সহায়তা প্রদান। হজের মূল কার্যক্রম পরিচালনায় প্রয়োজনীয় সব সেবামূলক সহায়তা নিশ্চিত করা। উমরা যাত্রীদের ভিসা প্রক্রিয়াকরণ এবং উমরা সংক্রান্ত সকল গ্রাউন্ড সার্ভিস পরিচালনা করা। সংক্ষেপে সৌদি আরবের মাটিতে হজ্ ও উমরা পালনকালীন যাত্রীদের সকল প্রকার লজিস্টিক ও অপারেশনাল চাহিদা পূরণ করাই তাদের কাজ।
কোম্পানির নেতৃত্ব রয়েছে অভিজ্ঞ ও দূরদর্শী একটি পরিচালনা পরিষদ। চেয়ারম্যান ইমদাদুল হক মিরাজ, ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ খান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা সৌদি আরবের ইঞ্জিনিয়ার আনাস হাবিব সোবগাহ। এই তিন তরুণ তাদের সম্মিলিত অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা দিয়ে কোম্পানিকে আন্তর্জাতিক মানদণ্ডে পরিচালনা করছেন। এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখ করতে হয়, কোম্পানির সিইও ইঞ্জিনিয়ার আনাস হাবিব সোবগাহর কথা। তারা বংশ পরম্পরায় হাজিদের সেবা দিয়ে আসছেন। হাজিদের সেবাকে তারা নিজেদের জন্য সৌভাগ্য মনে করেন। বিনয়, আচার-আচরণ ও সার্ভিস প্রদানে শতভাগ সততা রক্ষা করে নতুন কোম্পানি হজ ও উমরা যাত্রীদের সেবা দিয়ে আসছে, ফলে হজ এজেন্সির মালিকদের কাছে আস্থার এক নামে পরিণত হয়েছে মক্কা গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানি।
মক্কা গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির ব্যবস্থাপনা পরিচালক রাশেদ খান বার্তা২৪.কমকে জানান, হজ ও উমরার মতো পবিত্র যাত্রার গুরুত্ব উপলব্ধি করে আমরা সেবা প্রদান করি। তাই হজ ও উমরা যাত্রী এবং এজেন্সি কর্তৃপক্ষের সহযোগতিা কামনা করি।
আলাপচারিতায় রাশেদ খান যাত্রী ও এজেন্সি কর্তৃপক্ষকে পরামর্শ দিয়ে বলেন, হজ ও উমরার ক্ষেত্রে সৌদি কর্তৃপক্ষের দেওয়া যাবতীয় বিধান, নির্দেশিকা ও নীতিমালা অনুসরণ করে সমস্ত কার্যক্রম সম্পন্ন করতে হবে। এটি একটি সুশৃঙ্খল হজ পালনে অপরিহার্য। আর হজ এজেন্সিগুলোর উচিত, যেসব কোম্পানি তাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভালো সার্ভিস প্রদান করে এবং হজের কার্যক্রম পরিচালনায় দক্ষ, তাদেরকে যত্ন সহকারে বাছাই করা। যাত্রীদের আরাম ও সন্তুষ্টির জন্য সঠিক অংশীদার নির্বাচন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
মক্কা গেটওয়ে ইন্টারন্যাশনাল কোম্পানির লক্ষ্য হলো, তাদের দক্ষ পরিষেবা এবং আন্তরিকতার মাধ্যমে আল্লাহর অতিথিদের একটি পবিত্র, সহজ এবং আরামদায়ক ইবাদত-বন্দেগির পরিবেশ নিশ্চিত করা। ইতোমধ্যে তাদের এই উদ্যোগ হজ ও উমরা সেবাখাতে নতুন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
এলএইস/