চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণ হলো আল্লাহ তাআলার কুদরতের নিদর্শন। চাঁদ যখন পৃথিবী ও সূর্যের মাঝখানে চলে আসে, তখন পৃথিবীর কিছু অংশ থেকে সূর্য আংশিক বা সম্পূর্ণ অদৃশ্য হয়—এটাই সূর্যগ্রহণ (Solar Eclipse বা কুসুফ)। অন্যদিকে, যখন পৃথিবী চাঁদ ও সূর্যের মাঝখানে আসে, তখন চাঁদ কিছুক্ষণের জন্য অদৃশ্য হয়—এটাই চন্দ্রগ্রহণ (Lunar Eclipse বা খুসুফ)।
নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম চন্দ্র বা সূর্যগ্রহণকে আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন হিসেবে দেখতেন। তিনি সাহাবিদের নির্দেশ দিতেন, “কোনো লোকের মৃত্যুর কারণে সূর্য বা চাঁদ গ্রহণ হয় না। এগুলো আল্লাহর নিদর্শন। যখন সূর্য বা চন্দ্র গ্রহণ ঘটে, তোমরা নামাজে দাঁড়াও।” (সহিহ বুখারি: ৯৮৪)
চন্দ্র ও সূর্যগ্রহণের সময় নবীজি (সা.) দুই রাকাত নামাজ আদায় করতেন। দশম হিজরিতে সূর্যগ্রহণের সময় তিনি সাহাবিদের সঙ্গে সমবেত হয়ে নামাজ আদায় করেছেন। তিনি মুসলমানদেরও গ্রহণের সময় নামাজ আদায় এবং আল্লাহর দরবারে দোয়া ও তাওবা করার আহ্বান জানিয়েছিলেন। গ্রহণকে ঘিরে প্রচলিত কুসংস্কার এড়িয়ে, আল্লাহর ইবাদতে মগ্ন থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।
চন্দ্রগ্রহণের নামাজের নিয়ম
১. চন্দ্রগ্রহণ চলাকালে দুই রাকাত নামাজ পড়া সুন্নত। ইসলামী পরিভাষায় এটিকে ‘সালাতুল খুসুফ’ বলা হয়।
২. এই নামাজ একাকী আদায় করাই সুন্নত। সূর্যগ্রহণের নামাজ জামাতে পড়ার নিয়ম থাকলেও চন্দ্রগ্রহণের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য নয়।
৩. যারা চন্দ্রগ্রহণ প্রত্যক্ষ করবেন, তারা নিজ নিজ বাসায় ফজরের নামাজের মতো দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবেন।
৪. ইচ্ছা করলে চার রাকাত বা তার বেশি পড়া যেতে পারে, তবে প্রতি দুই বা চার রাকাত শেষে সালাম ফেরাতে হবে।
৫. অন্যান্য নফল নামাজের মতো এ নামাজে আজান-একামত নেই।
৬. নামাজ শেষে চন্দ্রগ্রহণ শেষ না হওয়া পর্যন্ত জিকির, দোয়া ও মোনাজাতে মগ্ন থাকা সুন্নত।
এমএইচ/