শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৫ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
খেলাফত মজলিস রিয়াদ মহানগরী শাখার তরবিয়তি মজলিস দেশের ভবিষ্যৎ নিশ্চিতে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে: ধর্ম উপদেষ্টা তালেবান সরকারের নিষিদ্ধের তালিকায় মওদুদীর বই ফিলিস্তিন রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেওয়ার ঘোষণা পর্তুগালের যাত্রাবাড়ীতে এসি বিস্ফোরণে একই পরিবারের দগ্ধ ৪ দালাল ধরে গিয়েছিলেন ইরাকে, ময়লার ভাগাড়ে তিন টুকরায় মিলল লাশ দক্ষ কর্মীদের ভিসা ফি ১,৫০০ ডলার থেকে বাড়িয়ে ১ লাখ ডলার করলেন ট্রাম্প নোয়াখালীতে অটোরিকশা উল্টে প্রাণ গেল নারীর ,আহত-৪ ইসলামী ছাত্র মজলিস সিলেট মহানগর, জেলা ও শাবিপ্রবি’র সহযোগী সদস্য সমাবেশ অনুষ্ঠিত দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরামের সভাপতি নাসির উদ্দিন এডভোকেট এর ইন্তেকাল

শিশুকালেই কথা বলা তিন শিশুর অলৌকিক গল্প

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুহাম্মদ মিজানুর রহমান

একটি নির্দিষ্ট বয়সে শিশুরা কথা বলে। তবে একদম অল্প বয়সে মানে দোলনা থেকে তিনজন শিশুর কথা বলা নিয়ে হাদিস ও ইসলামী বর্ণনায় বিশদ বিবরণ পাওয়া যায়। তারা অলৌকিকভাবে শিশুকালেই কথা বলেছিল, যা আল্লাহর কুদরতের নিদর্শন হিসেবে বিবেচিত। তাদের তিনজনেরই কথা বলার নেপথ্যে ছিল বিশেষ একটি কারণ।

১. ঈসা (আঃ) বা যীশু (আঃ) 

হযরত মরিয়ম (আঃ) ছিলেন একজন পূত-পবিত্র মহিলা। আল্লাহওয়ালাও বটে। যখন তিনি তার সন্তান ঈসা (আঃ)-কে জন্ম দেন, তখন তার চরিত্র নিয়ে মানুষ সন্দেহ করে। কারণ, মরিয়ম (আঃ) ছিলেন  অবিবাহিতা। একজন কুমারি সন্তানের মা হলে সেটা স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্নের জন্ম দেয়। এক্ষেত্রেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। অলৌকিকভাবে আল্লাহর নির্দেশে শিশু ঈসা (আঃ) তখনই কথা বলেন। তিনি বলেছিলেন, 

  “আমি আল্লাহর বান্দা। তিনি আমাকে কিতাব দিয়েছেন এবং নবী করেছেন।” 

  —সূরা মারিয়াম, আয়াত ৩০ 

ঈসা (আঃ) শিশু অবস্থায় ঘোষণা করেন যে, তিনি আল্লাহর প্রেরিত নবী, এতে মরিয়মের চরিত্রও প্রমাণিত হয় এবং লোকেরা চুপ হয়ে যায়।

২. জুরাইয ও দুধের শিশু 

জুরাইয একজন ধর্মীয় সাধক ছিলেন। তিনি সবসময় তার ইবাদত খানায় ইবাদতে মগ্ন থাকতেন। আল্লাহর সাথে ছিল তার গভীর সম্পর্ক। একদিন ইবাদতে মগ্ন থাকা অবস্থায় জুরাইয-এর মা তাকে কোনো কারণে ডাক দেন। কিন্তু এসময় জুরাইয সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না মায়ের ডাকে সাড়া দেবেন নাকি ইবাদতে মশগুল থাকবেন। তার মা তাই রাগান্বিত হয়ে তাকে অভিশাপ দেন, ‘হে আল্লাহ, ব্যাভিচারিণীর মুখ না দেখিয়ে জুরাইযকে মৃত্যু দিয়ো না।’ মায়ের সেই বদদোয়া আল্লাহ কবুল করে ফেলেন। কিছুদিন পর জুরাইযের কাছে এক নারী এসে তাকে কুপ্রস্তাব দিল। কিন্তু জুরাইজ তা অস্বীকার করল। তারপর ওই নারী এক রাখালের কাছে গিয়ে তার মনোবাসনা পূর্ণ করলে তাদের একটি পুত্রসন্তানের জন্ম হল। চরিত্রহীনা নারীটিকে যখন জিজ্ঞেস করা হলো, পুত্রসন্তানটি কার? নারীটি বলল, জুরাইযের। তখন লোকেরা রাগান্বিত হয়ে তার ইবাদতখানা ভেঙে দিল। জুরাইয তখন নবজাতকের কাছে গিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, হে শিশু! তোমার পিতা কে? শিশুটি জবাবে সেই রাখালের কথা বলল। তখন সবাই জুরাইযের ইবাদতখানাটি সোনা দিয়ে তৈরি করে দিতে চাইলে জুরাইয বললেন, মাটি দিয়েই দাও।

৩. বনী ইসরাইলের শিশু

তৃতীয়জন বনি ইসরাইলের এক শিশু যাকে এক নারী তার দুধ পান করাচ্ছিল। এসময় তার পাশ দিয়ে সুদর্শন এক ধনবুবের পুরুষ চলে গেল। নারীটি ছেলেটিকে দেখে মুগ্ধ হলে আল্লাহর কাছে দোয়া করল, হে আল্লাহ! আমার ছেলেটিকে তার মতো বানাও। তখন ছোট্ট শিশুটি তার মায়ের স্তন ছেড়ে দিয়ে তার মুখের দিকে তাকিয়ে বলল, হে আল্লাহ! আমাকে তার মতো কোরো না। এরপর সেই নারীর পাশ দিয়ে একটি গরিব দাসী চলে যাওয়ার সময় তাকে দেখে সে বলল, হে আল্লাহ! আমার সন্তানকে তার মতো কোরো না। শিশুটি এবারও তৎক্ষণাৎ মায়ের স্তন্ ছেড়ে দিয়ে বলল, হে আল্লাহ! আমাকে তার মতো কোরো। এবার মা ঘটনা কি জানতে চাইল। শিশুটি বলল, ধনকুবের সুদর্শন আরোহী ছিল এক জালিম। আর এ দাসীটির ব্যাপারে লোকে বলেছে তুমি চুরি করেছ, জেনা করেছ। অথচ সে কিছুই করেনি। শিশুটি বোঝায়, বাহ্যিক চাকচিক্য নয়, অন্তরের পবিত্রতা এবং আল্লাহর সন্তুষ্টিই আসল।

এই তিনটি ঘটনা ইসলাম ধর্মে অলৌকিক নিদর্শন হিসেবে বর্ণিত হয়। শিশু বয়সে কথা বলা আল্লাহর এক বিশেষ কুদরত এবং তা বিশেষ পরিস্থিতিতে সত্য প্রকাশ বা ন্যায়ের প্রতিষ্ঠার জন্য ঘটে।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ