ব্যাপক দুর্নীতিবিরোধী বিক্ষোভের মুখে প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা অলির পদত্যাগের কয়েক ঘণ্টা পরই নেপালের প্রেসিডেন্ট রাম চন্দ্র পাউডেলও পদত্যাগ করেছেন। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দেশটির সংবাদমাধ্যম এই খবর প্রকাশ করেছে।
দুর্নীতি ও স্বজনপ্রীতির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ জেন-জি প্রজন্মের বিক্ষোভকারীরা কারফিউ অমান্য করে রাস্তায় অবস্থান করছেন। মঙ্গলবার ভোরের দিকে পদত্যাগের ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী অলি। এর আগে গত সপ্তাহে তার নেতৃত্বাধীন সরকার ২৬টি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বন্ধ করার ঘোষণা দিয়েছিল, যা বিপুলসংখ্যক তরুণ-তরুণীর রাস্তায় নামার কারণ হয়। সোমবার রাত থেকে সহিংসতা চরম আকার ধারণ করলে সরকার সেই নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে।
বিক্ষোভ ও সংঘর্ষে কমপক্ষে ২০ জনের মৃত্যু হয়েছে। চলমান সঙ্কট ক্ষমতাসীন জোট সরকারকে ভাঙনের প্রান্তে ঠেলে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ ছাড়াও কয়েকজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন, এবং বড় রাজনৈতিক দলগুলোও জোট সরকারের সমর্থন প্রত্যাহার ভাবছে।
মঙ্গলবার বিক্ষোভকারীরা সংসদ ভবনের অংশে আগুন ধরিয়ে দেন এবং শীর্ষ নেতাদের বাড়িঘরে হামলা চালান। হামলার নিশানায় ছিলেন প্রধানমন্ত্রী অলি, প্রেসিডেন্ট পাউডেল, নেপালি কংগ্রেস নেতা শের বাহাদুর দেউবা এবং মাওবাদী নেতা পুষ্প কমল দহল। এছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরজু দেউবা রানার মালিকানাধীন একটি বেসরকারি স্কুলেও আগুন ধরানো হয়।
সকালে নিরাপত্তা বাহিনী পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে হিমশিম খাচ্ছিল। পরিস্থিতির ভয়াবহতা বিবেচনায় নেপালের সামরিক বাহিনী ১২টি হেলিকপ্টারে মন্ত্রীদের নিরাপদ স্থানে সরিয়ে আনে। এর মধ্যে ৫টি হেলিকপ্টার বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রীদের সরানোর কাজে ব্যবহার করা হয়।
ত্রিভুবন আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে মঙ্গলবার দুপুরে সব অভ্যন্তরীণ ও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট স্থগিত করা হয়েছে। বিক্ষোভকারীরা ড্রোন, আতশবাজি ও লেজার লাইট ব্যবহার করে বিমান চলাচলে বিঘ্ন ঘটানোর চেষ্টা করছেন বলে বিমান কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে।
এমএইচ/