বৃহস্পতিবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ২৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ২০ জমাদিউস সানি ১৪৪৭


‘আলেম অধ্যুষিত’ সিলেট-৫ আসনে জটিল সমীকরণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশেষ প্রতিনিধি

সিলেটের ছয়টি আসনের মধ্যে সিলেট-৫ (জকিগঞ্জ-কানাইঘাট) আসনটি আলেম-উলামা অধ্যুষিত হিসেবে পরিচিত। এই আসনে আলেমদের বেশ প্রভাব রয়েছে। মাদরাসার সংখ্যাও অনেক। তাছাড়া অন্য যেকোনো এলাকার চেয়ে এখানকার মানুষ বেশি ধার্মিক। ইসলামের প্রশ্নে এখানকার সাধারণ মানুষেরাও অনেক নিবেদিত। এবারের নির্বাচনে এই আসনে জটিল সমীকরণ সামনে আসছে। শেষ পর্যন্ত এই আসনে কে শেষ হাসি হাসবেন সেটা নিয়ে চলছে চুলচেরা বিশ্লেষণ।

বিএনপি তাদের মিত্র জমিয়তে উলামায়ে ইসলামকে যে কয়টি আসনে ছাড় দিতে পারে বলে আলোচনা রয়েছে, এর মধ্যে শীর্ষে আছে সিলেট-৫। এই আসনে জমিয়তের প্রার্থী হচ্ছেন দলটির সভাপতি মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুক। তবে এখানে বিএনপির একজন শক্তিশালী প্রার্থী রয়েছেন চাকসু মামুন। তিনি আবার মাওলানা উবায়দুল্লাহ ফারুকের খালাতো ভাই। তিনি ২০১৮ সালে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। সেই নির্বাচনে উবায়দুল্লাহ ফারুক তার কাছে একটি বারের জন্য সুযোগ চেয়ে নিয়েছিলেন দাবি করে চাকসু মামুন প্রার্থী হওয়ার ব্যাপারে অনড় রয়েছেন।

এই আসনে জামায়াতে ইসলামী প্রার্থী করেছে মাওলানা আনোয়ার হোসেন খানকে। এলাকায় তার বেশ সুনাম আছে। তিনি নির্বাচিত হলে এলাকার মানুষের কাছে উন্নয়ন দৃশ্যমান হবে বলে দাবি তার। আট দলের আসন সমঝোতার আলোচনায় এই আসনটি জামায়াত জোরালোভাবেই নিজেদের জন্য রাখতে চাইবে বলে জানা গেছে।

অন্যদিকে আট দলের অন্যতম ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ এবং খেলাফত মজলিস দুই দলেরই আলোচিত প্রার্থী রয়েছেন এই আসনে। ইসলামী আন্দোলন দলের তরুণ নেতা ও জাতীয় ওলামা মাশায়েখ আইম্মা পরিষদের মহাসচিব মুফতি রেজাউল কারীম আবরারকে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী করেছে। আর খেলাফত মজলিস প্রার্থী করেছে মুফতি আবুল হাসানকে। তিনি সিলেট অঞ্চলের জনপ্রিয় ওয়ায়েজ এবং সিলেট জেলা বেফাকের সাধারণ সম্পাদক। ইসলামী আন্দোলন ও খেলাফত মজলিস উভয় দলই চাইবে আট দল থেকে ছাড় পেতে। বিশেষ করে খেলাফত মজলিস তাদের যে কয়জন প্রার্থীকে হেভিওয়েট হিসেবে বিবেচনা করছে এর মধ্যে সিলেট-৫ আসনে মুফতি আবুল হাসানকে গোনা হচ্ছে। এর কারণ হলো, এই অঞ্চলে মৎস্যজীবীদের একটি বড় ভোটব্যাংক রয়েছে। সেই ভোটব্যাংকটি মুফতি আবুল হাসানে পক্ষে থাকবে বলে দাবি করছে খেলাফত মজলিস। ওই ভোটব্যাংকেই ১৯৯১ সালে এই আসন থেকে মাওলানা উবায়দুল হক রহ. ইসলামী ঐক্যজোট থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন। 

এই আসনে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস প্রার্থী করেছে মাওলানা রেজাউল করীম জালালীকে। তিনি দলের সিলেট জেলা শাখার সভাপতি এবং কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির। বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের চোখও রয়েছে আসনটির ওপর। 

আসনটিতে আগে থেকে বেশ প্রভাব রয়েছে ফুলতলী পীরের অনুসারীদের। ২০২৪ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ থেকে ছাড় পেয়ে এই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য হয়েছিলেন মাওলানা মোহাম্মদ হুছামুদ্দীন চৌধুরী। এবারের নির্বাচনে তিনি বা এই পরিবারের কেউ প্রার্থী হতে পারেন বলে গুঞ্জন আছে। শেষ পর্যন্ত ফুলতলীপন্থী কেউ ভোটে লড়লে এই আসনে ভোটের সমীকরণ আরও জটিল হবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকেরা।

প্রসঙ্গত, স্বাধীনতার পর আসনটিতে চারবার আওয়ামী লীগ, তিনবার জাতীয় পার্টি ও দুবার স্বতন্ত্র প্রার্থী বিজয়ী হন। এছাড়া বিএনপি, ইসলামী ঐক্যজোট ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী একবার করে জয়ী হয়েছেন।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ