শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১২ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
মসজিদে নববীর ইমামের পেছনে নামাজ পড়তে মালদ্বীপে মুসল্লিদের ঢল আ.লীগ নিষিদ্ধের কথা বললে সরকার পশ্চিমাদের দোহাই দেয় : সারজিস নারী সংস্কার কমিশন বাতিল না করলে আন্দোলনের দাবানল জ্বলবে: হেফাজত আটপাড়ায় হেফাজতে ইসলামের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত কর্মস্থলে দুর্ঘটনাজনিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ বৃদ্ধির সুপারিশ মজলিসে আমেলার বৈঠকে জমিয়ত, রাত পোহালেই কাউন্সিল কাল ঢাকায় ইসলামী আন্দোলনের গণমিছিল, প্রস্তুতি সম্পন্ন ‘রাষ্ট্র কাঠামোর মৌলিক সংস্কার না হলে আবারও ফ্যাসিবাদ মাথাচাড়া দেবে’ মাদরাসা শিক্ষার্থীদের মাঝে হাফেজ্জী হুজুর (রহ.) সেবা ফাউন্ডেশনের কিতাব বিতরণ "পাশ্চাত্যের শক্তি নয় আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে এদেশের কোরআনপ্রেমী জনতা”

মাগফিরাত অর্জনে মাহে রমজানের দ্বিতীয় দশক ও আমাদের করণীয়

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি মুহাম্মদ উল্লাহ রিজওয়ান ।।

পবিত্র মাহে রমজানের রহমতের দশক অতিবাহিত হয়ে আজ থেকে শুরু হয়েছে মাগফিরাতের দশক। মহান রাব্বুল আলামীন মহিমান্বিত রমজান মাসে বান্দার জন্য রেখেছেন তিনটি সুবর্ণ সুযোগ।

রাসুল সা. ইরশাদ করেন, রমজানের প্রথম ১০ দিন রহমতের, দ্বিতীয় ১০ দিন মাগফিরাত লাভের এবং তৃতীয় ১০ দিন নাজাত প্রাপ্তির।(মিশকাত শরীফ)

প্রত্যেক মুমিন ব্যক্তিই এই রমজান মাসে সারা বছরের নেকি ও পূণ্যের ঘাটতি পূরণের প্রাণান্তকর চেষ্টা করে থাকেন। ইবাদতের মাধ্যমে রহমতের ১০ দিন অতিবাহিত করার পর মুমিন ব্যক্তিরা মাগফিরাত লাভের আশায় আল্লাহ পাকের দরবারে নিজেকে নতুন করে নিয়োজিত করে থাকেন।

বান্দা যেন তার সারা বছরের কৃত সব গুনাহ থেকে মুক্তি পেতে পারে, এই জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামীন রমজান মাসের দ্বিতীয় দশককে মাগফিরাত তথা ক্ষমা লাভের দিন হিসেবে ধার্য করেছেন। মাগফিরাতের এই দশকে মহান আল্লাহ তাআলা বান্দার জন্য রেখেছেন অফুরন্ত ক্ষমার ভাণ্ডার।

মহান আল্লাহ রাব্বুল আলামীন পবিত্র কোরআনে উল্লেখ করে বলেন (হে নবী) বলুন, হে আমার বান্দাগণ! যারা নিজেদের ওপর জুলুম (গুনাহ) করেছ তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হইও না, নিশ্চয়ই আল্লাহ সব গুনাহ মাফ করেদিবেন। তিনি ক্ষমাশীল পরম দয়ালু। (সুরা যুমার ৫৩)।

অন্য আয়াতে আল্লাহ রাব্বুল আলামীন ইরশাদ করেন তারা আল্লাহর কাছে তওবা করে না কেন এবং ক্ষমা প্রার্থনা করে না কেন ? আল্লাহ যে ক্ষমাশীল দয়ালু। (সুরা মায়িদা৭৪)।

আল্লাহ পাক আরো ইরশাদ করেন, তোমরা তোমাদের প্রভূর কাছে ক্ষমাপ্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল।’ (সূরা নূহ: ১০)।

হাদিস শরীফে এসেছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষ্পাপ হওয়া সত্ত্বেও প্রতিদিন ১০০ বার করে ইস্তেগফার করতেন। (তাবারানী, মুজামুল আওসাত)। হাদিসে কুদসিতে এসেছে, আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, হে আমার বান্দারা, তোমরা দিনরাত গুনাহ করে থাক। আমি তোমাদের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেব। তোমরা ইস্তেগফার করো, আমি তোমাদের ক্ষমা করে দেব। (মুসলিম শরীফ)।

তাছাড়া রাসূল সা. এ মাসে আমাদেরকে বেশি বেশি মাগফেরাত কামনা করার তাকীদও দিয়েছেন। যেমন, রাসুলুল্লাহ সা. ইরশাদ করেছেন, ওই ব্যক্তির নাক ধূলায় ধুসরিত হোক, যার কাছে রমজান মাস এসে গেল অথচ তার পাপগুলো ক্ষমা করিয়ে নিতে পারলো না। (সুনানে তিরমিযী)।

অন্য এক হাদিসে রাসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে ব্যক্তি রমজান মাস পেল, অথচ গুনাহমুক্ত হতে পারলো না, তবে তার জন্য অকল্যাণ। (মুসতাদরাকে হাকেম)

উক্ত আয়াত ও হাদিস সমূহ দ্বারা মহান আল্লাহ তাআলা ও তাঁর রাসূল সা. আমাদেরকে যেন এটাই আশ্বস্ত করেছেন যে, রমজানের রহমতের দশক শেষ হয়েছে তো কী হয়েছে, আল্লাহর রহমত তো ফুরিয়ে যায়নি, তোমাদের জন্য রমজানের দ্বিতীয় দশকে আল্লাহর পক্ষ থেকে সাধারণ ক্ষমার দিন হিসাবে ঘোষণা করা হয়েছে।

সুতরাং তোমরা যদি যথাযথ এবাদত বন্দেগি করে রমজানের পরিপূর্ণ হক আদায় কর, তবে তামাদের সব গুনাহ মাফ হয়ে যাবে, কারণ আল্লাহ তাআলা ক্ষমাশীল ও দয়ালু।

সুতরাং প্রত্যেক মুমিনেরই উচিত, মাগফিরাতের এই দশকে গুনাহ থেকে প্রত্যাবর্তন করে, লজ্জিত ও অনুতপ্ত হয়ে এবং আর কখনো গুনাহে লিপ্ত না হওয়ার দৃঢ় সংকল্প করে আল্লাহর দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করে তাওবা করা এবং গোনাহ মাফের জন্য চোখের পানি ফেলে তাঁর কাছে বেশি বেশি রোনাজারি করা। আল্লাহ আমাদের তাওফিক দান করুন আমীন।

লেখক: ইমাম ও খতিব, উত্তর আদাবর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ, মুহাম্মদপুর ঢাকা।

ওআই/আবদুল্লাহ তামিম


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ