শনিবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৪ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৮ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
বকেয়া বেতনের দাবিতে ভালুকায় শ্রমিকদের মহাসড়ক অবরোধ শিশু-কিশোর সংগঠন 'অংকুর' এর সীরাতুন্নবী সা. কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত জুলাই সনদের ভিত্তিতে পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন চাই - খুলনা ইসলামী আন্দোলন  কাতারের মধ্যস্থতায় আফগানিস্তানে কারাবন্দি ব্রিটিশ দম্পতির মুক্তি মাদকের বিরুদ্ধে মুরাদনগরে ওলামা পরিষদের মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ পাকিস্তানে পৃথক বিস্ফোরণে নিহত অন্তত ১১ ইসলামি বইমেলা পরিদর্শনে জাতীয় মসজিদের খতিব প্রাথমিকে গানের নয়, ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে: শায়খে চরমোনাই পীর সাহেব চরমোনাইয়ের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের ‘মিট আপ’ আফগানিস্তানের বাগরাম বিমান ঘাঁটি আবারও নিয়ন্ত্রণে নিতে চায় যুক্তরাষ্ট্র

ভূমিকম্প মানুষের জন্য থেকে একটি সতর্কবার্তা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

||মুফতি রফিকুল ইসলাম আল মাদানী|| 

ভূমিকম্প হলো মানুষের জন্য আল্লাহর পক্ষ থেকে একটি সতর্কবার্তা। মানুষ যখন এ পৃথিবীতে অশ্লীলতা ও পাপাচারে সীমা লঙ্ঘন করে তখন তাদের সাবধান করার জন্য ভূমিকম্প, সূর্যগ্রহণ, বন্যা, ঝড়-তুফান, দুর্ভিক্ষ ও মহামারি ইত্যাদি বিপর্যয় দিয়ে থাকেন। যাতে তারা এ বিপর্যয় ও দুর্যোগ থেকে শিক্ষা গ্রহণ করে, ফিরে আসে মহান আল্লাহর পথে। তাঁকে যেন স্মরণ করে ও তাঁর প্রতি ক্ষমা প্রার্থনা করে। মহান প্রভু ঘোষণা করেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের দরুন স্থলে ও সমুদ্রে বিপর্যয় ছড়িয়ে পড়েছে। যাতে তাদের কর্মের শাস্তি আস্বাদন করে, যাতে তারা ফিরে আসে।’ (সুরা আর রুম-৪১)।

অপর আয়াতে তিনি বলেন, ‘তোমাদের ওপর যেসব বিপদ-আপদ পতিত হয় তা তোমাদের কর্মেরই ফল এবং তিনি তোমাদের অনেক অপরাধ ক্ষমা করে দেন।’ (সুরা আশ শূরা-৩০)। কোরআন সুন্নাহর আলোকে ভূমিকম্প ও আল্লাহ প্রদত্ত বিপর্যয়ের অন্যতম কারণ হলো- মানুষের অপকর্ম। এ অপকর্মের পথ ধরেই এক দিন ধ্বংস হবে পৃথিবী। হবে মহাপ্রলয়। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘কিয়ামত হবে না, যে পর্যন্ত না ইলম উঠিয়ে নেওয়া হবে, সময় সংকুচিত হয়ে আসবে, ফিতনা প্রকাশ পাবে এবং হত্যা, খুন, সন্ত্রাস বৃদ্ধি পাবে।’ (সহিহ বুখারি-৯৭৯)।

অপর হাদিসে রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘আমার উম্মত যখন ১৫টি অপকর্মে লিপ্ত হবে তখন তাদের ওপর বিপর্যয় নেমে আসবে। যখন গনিমতের মাল (সরকারি মাল) ব্যক্তিগত সম্পদে পরিণত হবে, আমানত লুটের মালে পরিণত হবে, জাকাত জরিমানা রূপে গণ্য হবে, পুরুষ তার স্ত্রীর আনুগত্য করবে এবং তার মায়ের অবাধ্য হবে, বন্ধুর সঙ্গে ভালো আচরণ করবে কিন্তু বাবার সঙ্গে অসদাচরণ করবে, মসজিদে উচ্চৈঃস্বরে শব্দ করবে, সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট চরিত্রের লোক হবে সমাজের নেতা, কোনো লোককে তার অনিষ্টতার ভয়ে সম্মান করা হবে, মদ পান চলবে, নিষিদ্ধ বস্ত্র পরিধান করা হবে এবং এ উম্মতের শেষ জমানার লোকজন তাদের পূর্ববর্তীদের ভর্ৎসনা করবে, তখন তোমরা অগ্নিবায়ু, ভূমিধস অথবা চেহারা বিকৃতির শাস্তির অপেক্ষা করবে।’ (তিরমিজি, হা. ২২১০)। আল্লামা ইবনুল কাইয়্যিম (রহ.) বলেন, মহান আল্লাহতায়ালা মাঝে মাঝে পৃথিবীকে জীবন্ত হয়ে ওঠার অনুমতি দেন। ফলে ভূমিকম্প অনুভূত হয়। মানুষ এতে ভীত হয়। তারা মহান আল্লাহর কাছে তওবা করে, পাপাচার বর্জন করে, আল্লাহর প্রতি ধাবিত হয় এবং কৃত পাপকর্মের জন্য অনুতপ্ত হয়ে মোনাজাত করে। ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত তুরস্ক ও সিরিয়ার ভয়ানক পরিস্থিতি আমাদের বড় একটি সতর্কবার্তা। সাধ্যমতো সবাইকে তাদের সহযোগিতায় আন্তরিক হওয়া একান্ত জরুরি। জরুরি সবাইকে মহান সৃষ্টিকর্তার প্রতি ফিরে আসা। সবার উচিত তাঁকে স্মরণ করা ও আপন কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত হওয়া। মানুষকে সতর্ক করার জন্য আল্লাহতায়ালা ভূমিকম্প বিষয়ে পবিত্র কোরআনে যিলযাল নামে স্বতন্ত্র একটি সুরা অবতীর্ণ করেছেন। ইতিহাসে আছে, ভূমিকম্প হলে ওমর ইবনে আবদুল আজিজ (রহ.) তাঁর গভর্নরদের প্রতি সতর্ক হওয়া এবং দান সদকা করার জন্য চিঠি লিখতেন। অতএব, কালক্ষেপণ না করে আমাদের অতি দ্রুত আত্মশুদ্ধির প্রতি এগিয়ে আসা সমীচীন। দয়াময় আল্লাহতায়ালা আমাদের সর্বপ্রকার বিপদ-আপদ থেকে রক্ষা করুন এবং নিরাপদ রাখুন। আমিন!

লেখক : গবেষক, ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার, বসুন্ধরা, ঢাকা

কেএল/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ