শুক্রবার, ০২ মে ২০২৫ ।। ১৮ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৪ জিলকদ ১৪৪৬


‘মোটরসাইকেল বন্ধের সুযোগে গণপরিবহনে চলছে ভাড়া ডাকাতি’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: ঈদযাত্রায় মোটরসাইকেল বন্ধের সুযোগ কাজে লাগিয়ে গণপরিবহন সংকটকে পুঁজি করে সড়ক, রেল, নৌপথে ভাড়া ডাকাতি ও ইচ্ছেমত যাত্রী হয়রানি চলছে বলে অভিযোগ তুলেছে বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতি। জরুরি ভিত্তিতে ভাড়া নৈরাজ্য ও পথে পথে যাত্রী হয়রানি বন্ধের দাবিও জানিয়েছে সংগঠনটি।

শুক্রবার (৮ জুলাই) বাংলাদেশ যাত্রী কল্যাণ সমিতির প্রচার সম্পাদক মাহমুদুল হাসান রাসেল স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিবৃতিতে এসব দাবি জানানো হয়।

ঈদযাত্রায় সড়ক, রেল ও নৌ-পথের সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করে সংগঠনের মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী এই দাবি জানান।

বিবৃতিতে বলা হয়, যাত্রী কল্যাণ সমিতির পর্যবেক্ষণে দেখা যায়, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যা থেকে রাজধানীর সিটি সার্ভিসের বাসের ভাড়া কোন কোন পথে ৫ থেকে ৬ গুণ পর্যন্ত বাড়তি আদায় করা হচ্ছে। উত্তরা থেকে সায়েদাবাদে ৫০ টাকার বাস ভাড়া ৩০০ টাকা নিতে দেখা গেছে। শ্যামলী থেকে গুলিস্তানে ৩০ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা আদায় করতে দেখা গেছে।

ধানমন্ডি থেকে সদরঘাট ২৫ টাকার বাস ভাড়া ২০০ টাকা আদায় করতে দেখা গেছে। নগরীর প্রতিটি লেগুনা সার্ভিসের ভাড়া কোথাও দ্বিগুণ আবার কোথাও তিনগুণ আদায় করা হচ্ছে। কেরানীগঞ্জের কদমতলী ও সদরঘাট থেকে গুলিস্তানের পথ মাত্র ৩ কিলোমিটার। এ রুটে স্বাভাবিক সময়ের ভাড়া ১৫ টাকা। এখন নেওয়া হচ্ছে ৩০-৫০ টাকা করে। এ চিত্র নগরের সব লেগুনা রুটে। রিকশা ভাড়া ৩ থেকে ৪ গুণ বাড়তি আদায় করা হচ্ছে।

সিএনজিচালিত অটোরিকশা গুলশান, বনানী, বারিধারা থেকে স্বাভাবিক সময়ে ৫০০ টাকায় সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল বা কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাতায়াত করা গেলেও বৃহস্পতিবার থেকে এই পথে ২০০০ থেকে ৩০০০ টাকা পর্যন্ত সিএনজি অটোরিকশার ভাড়া গুণতে হয়েছে।

এ দিকে দূরপাল্লার যাত্রাপথে ঢাকা-রংপুর, ঢাকা-রাজশাহী, নওগাঁ, ঠাকুরগাঁও, দিনাজপুর উত্তরাঞ্চলের প্রতিটি রুটে বিদ্যমান ভাড়া থেকে গন্তব্য ভেদে ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে। অনুরূপভাবে ঢাকা-কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি প্রতিটি রুটে এ ভাড়া নৈরাজ্য চলছে। দেশের একজেলা থেকে অপর জেলায় চলাচলকারী গণপরিবহণ গুলোতেও অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের এ চিত্র অব্যাহত আছে। পদ্মা সেতু হয়ে যাতায়াতকারী প্রতিটি রুটে বিভিন্ন নন ব্র্যান্ডের বাসে দ্বিগুণ ভাড়া আদায়ের নৈরাজ্য চলছে।

বিবৃতিতে বলা হয়, এছাড়াও খ্যাতনামা ব্র্যান্ডের বাসগুলো বিদ্যমান ভাড়ায় যাত্রী বহন করলেও কোন কোন পথে যাত্রী সাধারণকে স্বল্প পথের যাতায়াতের ক্ষেত্রে বেশি দূরের টিকিট কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে।

এতে করে নিম্ন আয়ের মানুষ, শ্রমজীবী, কর্মজীবী, দিনমজুর এ ধরনের স্বল্প আয়ের মানুষজন পণ্যবাহী ট্রাক-পিকআপে স্বল্প ভাড়ায় যাতায়াতে বাধ্য হচ্ছে। পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর যাত্রী সংকটের কারণে ঢাকা-বরিশালের বিভিন্ন নৌপথের ভাড়া কমানো হলেও এখন এ পথেও ভাড়া নৈরাজ্য চরমে ঠেকেছে। রেলে টিকিট কালোবাজারি, অনলাইনে টিকিট পেতে বিড়ম্বনাসহ নানা কারণে যাত্রী সাধারণের হাতে টিকিট পৌঁছাতে নির্ধারিত মূল্যের তিনগুণ পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া গুণতে হচ্ছে।

তাই জরুরি ভিত্তিতে এ ভাড়া নৈরাজ্য ও যাত্রী হয়রানি বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি সংগঠনটির।

-এএ


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ