শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৩ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ২৮ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
জমিয়তের জাতীয় কাউন্সিলের ৭ নতুন প্রস্তাবনা ‘আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ব্যতিত জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সংহতি বজায় রাখা সম্ভব নয়’ গুজরাটে ১ হাজারের বেশি বাংলাদেশি গ্রেপ্তার এবার যে ২০ ভাষায় অনুবাদ করা হবে হজের খুতবা সংসদ ও রাষ্ট্রপতির মেয়াদ ৫ বছরের পক্ষেই জামায়াত স্বামীর টাকায় হজ করলে ফরজ আদায় হবে? ধ্বংসস্তূপের নিচে নিখোঁজ ৩০ ফিলিস্তিনি, নেই উদ্ধারের প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি পেহেলগামে হামলার স্বচ্ছ তদন্তের জন্য পাকিস্তান প্রস্তুত: শাহবাজ শরীফ জমিয়তের সভাপতি আল্লামা ওবায়দুল্লাহ ফারুক মহাসচিব মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দি খেলাফত আন্দোলনের নতুন মহাসচিব মাওলানা ইউসুফ সাদিক হক্কানী

রাগের মাথায় শিশুকে প্রহার করা উচিত নয়: আল্লামা তাকি উসমানি

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি তাকি উসমানি

সাবেক বিচারপতি, পাকিস্তান

হজরত থানভি রহ. বলেন, ‘রাগান্বিত অবস্থায় কখনও শিশুকে প্রহার করবে না। (পিতা ও উস্তাদ উভয়ের জন্যই এই কথা)। রাগ প্রশমিত হওয়ার পর চিন্তা-ভাবনা করে শাস্তি দিবে। উত্তম শাস্তি হল ছুটি মওকুফ করে দেওয়া। শিশুর উপর এর খুব প্রতিক্রিয়া হয়ে থাকে। মিয়াজী ছাত্র প্রহারে এজন্য স্বাধীন হয়ে যান যে, তাকে প্রশ্ন করার কেউ থাকে না। শিশুর তো প্রশ্ন করার যোগ্যতাই নেই আর অভিভাবক মিয়াজীকে পূর্ণ স্বাধীন করে দিয়েছেন এই বলে যে, ‘হাড্ডি আমাদের, আর চামড়া মিয়াজীর’!

মনে রাখবেন, যার অধিকার সম্পর্কে প্রশ্ন করার কেউ থাকে না তার সম্পর্কে প্রশ্নকারী স্বয়ং আল্লাহ। এমনকি কোনো জিম্মী (মুসলিম দেশের অমুসলিম নাগরিক, যার নিরাপত্তা মুসলিম শাসকের জিম্মায়) কাফিরের উপর যদি কোনো শাসক জুলুম করে তাহলে হাদিস শরিফে এসেছে যে, আল্লাহ ও তার রাসূলের কাছে এর জন্য জবাবদিহি করতে হবে। (আনফাসে ঈসা পৃ. ১৭৩)

শিশুদের প্রহার করা খুবই ভয়াবহ। আমাদের পিতা হজরত মাওলানা মুফতি মুহাম্মদ শফী রহ. বলতেন, অন্যান্য গুনাহ তো তওবার মাধ্যমে মাফ হতে পারে, কিন্তু শিশুদের উপর জুলুম করা হলে এর ক্ষমা পাওয়া খুবই জটিল। কেননা, এটা হচ্ছে বান্দার হক। আর বান্দার হক শুধু তওবার দ্বারা মাফ হয় না, যে পর্যন্ত না যার হক নষ্ট করা হয়েছে সে মাফ করে।

এদিকে যার উপর জুলুম করা হয়েছে সে হচ্ছে নাবালেগ। নাবালেগের ক্ষমা শরীয়তের দৃষ্টিতে গ্রহণযোগ্য নয়। এমনকি শিশু যদি মুখে বলেও যে, আমি মাফ করলাম তবুও তা গ্রহণযোগ্য নয়। এজন্য এই অপরাধের মাফ পাওয়া খুব জটিল। আর তাই শিশুদের প্রহার করা এবং তাদের সঙ্গে মন্দ ব্যবহার করার ব্যাপারে সাবধান হওয়া উচিত।

হজরত থানভি রহ. নিয়ম করেছিলেন যে, মকতবে কোনো কারী সাহেব শিশুদের প্রহার করতে পারবে না। কেউ প্রহার করলে তাকে হজরত রহ. এর কাছে জবাবদিহি করতে হত এবং কখনও কখনও শাস্তিও পেতে হত। একবার হজরত একথাও বলেছিলেন যে, এখন থেকে যদি জানতে পারি, কোনো কারী সাহেব কোনো শিশুকে মেরেছে তাহলে ওই কারী সাহেবকে মসজিদের বারান্দায় দাড় করিয়ে ওই শিশুর দ্বারা বেত দেওয়াব। বিষয়টা খুবই নাজুক ও মারাত্মক। এজন্য হজরত থানভি রহ. এ বিষয়ে অত্যন্ত কঠোর ছিলেন।

এটা ঠিক যে, শিশুদের পড়ানো খুবই কঠিন কাজ। তাদের নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ নয় এবং কখনও কখনও প্রহারের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েই যায়। তো এমন পরিস্থিতিতে অন্য কোনো চিকিৎসা ফলপ্রসূ না হলে হজরত রহ. বলেন, এ ক্ষেত্রেও রাগান্বিত অবস্থায় মারবে না। এ সময় চুপ থাকা। যখন ক্রোধ দূর হয়ে যাবে তখন ভেবে চিন্তে শাস্তি দিবে। এতে শাস্তির মাত্রা ঠিক থাকবে। যে পরিমাণ প্রয়োজন সে পরিমাণ শাস্তিই দেওয়া হবে। সীমালঙ্ঘন হবে না। কিন্তু যদি রাগান্বিত অবস্থায় মারতে আরম্ভ করো তাহলে এক থাপ্পড়ের জায়গায় দশ থাপ্পড় দিয়ে ফেলবে। এর কারণে একে তো গুনাহ হলো। কেননা, প্রয়োজনের অধিক শাস্তি দেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয়ত এতে শিশুর ক্ষতি হবে। কেননা সকল বিষয়ই মাত্রা অতিক্রম করলে ক্ষতিকর হয়ে যায়। তৃতীয়ত এর জন্য পরে অনুতাপ করতে হবে।

এজন্য হজরত রহ. একেবারে মৌলিক কথাটা বলে দিয়েছেন যে, ক্রুদ্ধ অবস্থায় শাস্তি দিবে না। ক্রোধ ঠান্ডা হওয়ার পর শাস্তি দিবে।

এমডব্লিউ/


সম্পর্কিত খবর



সর্বশেষ সংবাদ