বৃহস্পতিবার, ০৬ নভেম্বর ২০২৫ ।। ২১ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৫ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
জোটে ভোট কাটে রাজনীতির ঠোঁট ভারতের প্রেসক্রিপশনে আন্দোলন সফল হতে দেবে না জনগণ: মাওলানা ইউসুফী ‘বিএনপি ক্ষমতায় এলে প্রতিটি স্কুল-কলেজে ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগের চেষ্টা করব’ বিএনপি-জামায়াতের বাইরে নতুন রাজনৈতিক জোটের উদ্যোগ এনসিপির  মাইলস্টোনে যুদ্ধবিমান বিধ্বস্তের কারণ পাইলটের উড্ডয়ন ত্রুটি পুলিশের খোয়া যাওয়া অস্ত্র উদ্ধারে আবারও পুরস্কার ঘোষণা বিশাল স্বর্ণ ভান্ডার মিলল পাকিস্তানে একীভূত হওয়া ৫ ব্যাংকের অর্থ ও আমানত সুরক্ষিত থাকবে : গভর্নর ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে ইসলামি আরবি বিশ্ববিদ্যালয় সম্মিলিত শিক্ষার্থী ফোরামের মানববন্ধন বৈষ্যমের বিরুদ্ধে সিলেটবাসীকে ঐক্যবদ্ধ ভাবে আন্দোলন করতে হবে

প্রথম লেখাটি ছাপা হয় দৈনিক আজাদে: মাওলানা লিয়াকত আলী

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মাওলানা লিয়াকত আলী। বিদগ্ধ আলেম, গবেষক লেখক ও সাংবাদিক। শিক্ষা, গবেষণা ও সাংবাদিকতার সাথে জড়িত দুই দশক ধরে। বর্তমানে তিনি মাদরাসায়ে দারুর রাশাদের শিক্ষা সচিব ও জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার সিনিয়র মুহাদ্দিস হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। দৈনিক আজাদে জীবনের প্রথম লেখা প্রকাশ নিয়ে তার অনুভূতি তুলে ধরা হলো। 


লেখালেখির প্রতি ছিল আমার বাল্যকাল থেকেই ঝোঁক। ছাত্রজীবনে সুযোগ পেলে টুকটাক লেখালেখি করতাম। বিশেষ করে গওহরডাঙা মাদরাসায় যখন পড়াশোনা করি তখন ছোটখাটো অনেক লেখা লিখেছি।

সে সময়ে গওহরডাঙ্গা মাদরাসার প্রধান হিসাব রক্ষক ছিলেন মাস্টার ওমর আহমদ সাহেব। তিনি মাওলানা ছিলেন না, কিন্তু বহুত বড় বুজুর্গ ছিলেন। তিনি আমাদের মাদরাসা দারুর রাশাদের মুহতামিম মাওলানা সালমান সাহেবের শ্বশুর ছিলেন। তাঁর কবিতার বইও আছে। একদিন কী একটা বিষয় নিয়ে যেন লিখেছিলাম।

একজন মুরব্বি আমার এ লেখাটা দেখে বললেন, তোমার এ লেখাটার ধাঁচ মাস্টার ওমর সাহেবের লেখার সঙ্গে মিল আছে। তখনও আমার লেখা ছাপা হয়নি। এমনিতেই লিখতাম। লিখতে ভালো লাগতো।

যখন ভার্সিটিতে চান্স পেলাম তখন আমাদের লেখালেখির একজন মুরব্বি ছিলেন। তিনি মাওলানা শরীফ মুহাম্মদ ইউসুফ। তিনি তখন খেলাফত আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। তিনি আমাদের নবীনদের তৈরি করার জন্য বিভিন্ন প্রোগ্রাম দিয়েছিলেন।

আমাদের লালবাগের ছাত্রদের ১০ জন করে দুইটা গ্রুপ করা হয়েছিল। একদল বক্তৃতার জন্য, অপর দল লেখালেখির জন্য। আমি ছিলাম দুই দলের সমন্বয়ক। খেলাফত আন্দোলনের অফিসে আমাদেরকে প্রশিক্ষণ দেয়া হতো। মূলত তিনিই আমাদের উৎসাহ দিতেন।

আমি ভার্সিটিতে সাংবাদিকতায় চান্স পাওয়ার খবর শুনে তিনি আমাকে অনেক উৎসাহ দিলেন এবং বললেন, আমিও চেয়েছিলাম তুমি সাংবাদিকতা নিয়ে পড়ো। এভাবেই চলতে আমার লেখালেখির চর্চা।

১৯৮৪ সাল। আমি লালবাগ জামিয়া কুরআনিয়া আরাবিয়ার দাওরায়ে হাদিসের ছাত্র। তখন ঢাকা ইউনিভার্সিটিতেও পড়তাম। একই সঙ্গে চালাতাম দুটো ধারার শিক্ষা। সে সময় বর্তমান মাদরাসা দারুর রাশাদের মুহতামিম মাওলানা মুহাম্মাদ সালমান মাঝেমধ্যে ঢাকায় এলে লালবাগ মাদরাসায়ও আসতেন। তখন তিনি দারুল উলুম দেওবন্দ থেকে সদ্য ফারেগ হয়েছেন। খুলনার সেনহাটির যাকারিয়া মাদরাসার শিক্ষক।

একবার তিনি এলেন আমাদের লালবাগ মাদরাসায়। মাদরাসার শিক্ষাবর্ষ তখন শেষ। ছুটি চলছে। তবে আমি বাড়িতে না গিয়ে মাদরাসাতেই ছিলাম। তিনি আমাকে স্নেহ করতেন আগে থেকেই। তখন এসেই আমাকে বললেন, লেখা আছে? আমি বললাম, জ্বি আছে। তিনি বললেন, দাও। লেখাটা আমি ছাপার ব্যবস্থা করি। তিনি তখন নিয়ে গেলেন।

দৈনিক আজাদ ঢাকার সবচেয়ে পুরনো ও প্রভাবশালী পত্রিকা ছিল। নাম-ডাক থাকলেও তখন ছিল পত্রিকাটির দুর্বল অবস্থা। সেখানকার ফিচার বিভাগের দায়িত্বে ছিলেন মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহ সিদ্দিকী, যিনি এখন ইনকিলাবে আছেন। সালমান সাহেব তাঁর কাছে আমার লেখাটি দিলেন। তিনি খুব আগ্রহের সঙ্গে লেখাটি নিয়ে নিলেন।

এর ঠিক একদিন পরে, আমারও কোনো খবর ছিল না, সালমান সাহেব সকাল বেলা দৈনিক আজাদের অফিসের সামনে দিয়ে আসার সময় দেয়ালে লাগানো পত্রিকা দেখেই নজর দিলেন আমার লেখাটা ছাপা হয়েছে কি না। দেখলেন লেখাটা ছাপা হয়েছে।

তিনি একটি পত্রিকা কিনে এনে আমাকে দিয়ে বললেন, এই যে নাও তোমার লেখা ছাপা হয়েছে। তারিখটি ছিল খুব সম্ভবত ২৩ মে। সেদিনের সেই পত্রিকাতেই ছিল ছাপার অক্ষরে আমার প্রথম লেখা।

শ্রুতিলিখন: হাসান আল মাহমুদ

(লেখা ও লেখকের কথা নিয়ে প্রকাশিত সাময়িকী ‘লেখকপত্র’ এর সৌজন্যে)

আরএম/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ