রবিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ৬ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ২৯ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
সিলেটে ১ মাস ধরে নিখোঁজ আবিদুল মিয়া সিলেট মহানগরীর ২০নং ওয়ার্ড যুব জমিয়তের আহবায়ক কমিটি গঠন সম্পন্ন পেশীশক্তি ও কালো টাকার দৌরাত্ম বন্ধে পিআর পদ্ধতির প্রয়োজন- আহমদ আবদুল কাইয়ূম জেদ্দায় হজ সম্মেলন ও প্রদর্শনী নভেম্বরে আজ ফিলিস্তিনকে স্বীকৃতি দিচ্ছে যুক্তরাজ্য খেলাফত মজলিস বানিয়াচং উপজেলা শাখার ইউনিয়ন প্রতিনিধি সম্মেলন ‘নীলনদের পানি যেমন নীল নয়, তেমনি জামায়াতেও ইসলাম নেই’ কিশোরগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি শরীফুল, সম্পাদক মাজহারুল ‘ইসলামি শক্তির মধ্যে অনৈক্য সৃষ্টি করে এমন বক্তব্য থেকে বিরত থাকুন’ গণঅধিকার পরিষদ ও এনসিপির একীভূত হওয়ার আলোচনা, নেতৃত্ব নিয়ে জটিলতা

ইসরাইলি সৈন্যদের ফাঁকি দিয়ে ৩৬ ঘণ্টা ধানক্ষেতে লুকিয়ে বেঁচেছিল যে ফিলিস্তিনি কবির পরিবার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আবু আবদুল্লাহ: মাহমুদ দারবিশ ছিলেন ফিলিস্তিনিদের জাতীয় কবি। তিনি জন্মগ্রহণ করেন ১৯৪২ সালে, ফিলিস্তিনের এক অখ্যাত গ্রাম 'আল-বোরোতে'।

১৯৪৮ সালে ইসরাইলি সৈন্যদের ফিলিস্তিন দখলের সময়, এক ভয়াবহ রাতে আক্রান্ত হয় দারবিশের এ ছোট্ট গ্রামটিও। সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় দারবিশের পরিবার। ইসরাইলি সৈন্যদের চোখ ফাঁকি দিয়ে তারা প্রায় ৩৬ ঘণ্টা লুকিয়ে ছিলেন ক্ষেতের মধ্যে। পরে শরণার্থী হয়ে আশ্রয় নেন লেবাননে।

এক বছর পর, সাত বছর বয়সে দারবিশ লেবাননের সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করেন ফিলিস্তিনে, তার হারানো জন্মভূমিতে। কিন্তু শিশু দারবিশ দেখলেন ইসরাইলি গোলার আগুনে পুড়ে গেছে তার বাড়ি।

দারবিশ লিখেছেন, এক রাতে আমার চাচা এবং একজন পথপ্রদর্শকের সঙ্গে লেবাননের সীমান্ত দিয়ে আমি প্রবেশ করলাম ফিলিস্তিনে। সকালে উঠে দেখি আমি একটি ইস্পাতের দেয়ালের মুখোমুখি : আমি ফিলিস্তিনে। কিন্তু কোথায় আমার ফিলিস্তিন?

আমি কখনো আমার বাড়িতে ফিরে যেতে পারিনি। প্রচণ্ড কষ্ট নিয়ে আমি দেখতে পেলাম আমার গ্রাম বিধ্বস্ত-ভস্ম।

ফিলিস্তিনের সন্তান মাহমুদ দারবিশ ফিলিস্তিনে প্রবেশ করেন অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হয়ে। ১৯৬৯ সালে ইসরাইলি কমিউনিস্ট পার্টির পত্রিকা জো হাদারেকে এক সাক্ষাৎকারে দারবিশ বলেছেন, সেই একটি রাত সবাইকে শরণার্থী বানিয়ে দেয়, লেবনাননে আমি শরণার্থী ছিলাম। ফিলিস্তিনেও আমি শরণার্থী হয়ে আছি।

এটা কোনো কাব্যিক দীর্ঘশ্বাস ছিল না। ইসরাইলি রাষ্ট্রের প্রথম আদমশুমারিতে যেসব ফিলিস্তিনি অন্তর্ভুক্ত হয়নি, নতুন ইসরাইলি সরকার তাদের পরিচয়পত্র দেয়নি। তাদের চিহ্নিত করে অবৈধ অনুপ্রবেশকারী হিসেবে। ফলে দারবিশের মতো অজস্র ফিলিস্তিনি নিজ জন্মভূমিতে হয়ে থাকে অবৈধ অভিবাসী।

লেবানন থেকে ফিরে আসার পর তার প্রাথমিক শিক্ষা শুরু হয় ‘দাইরুল আছাদ’-এ, আত্মপরিচয় গোপন করে। কারণ ইসরাইলি সরকারের দৃষ্টিতে তিনি ছিলেন অবৈধ অভিবাসী।

তিনি জানতেন, ধরা পড়লে তাকে দেশ থেকে তাড়িয়ে দেয়া হবে। তার মাধ্যমিক শিক্ষা ‘কাফার ইয়াসিফ’ গ্রামে। মাধ্যমিক শিক্ষার পরই তিনি জড়িয়ে পড়েন নানা তৎপরতায়। তার জীবন হয়ে ওঠে শুধু কবিতা লেখা এবং কবিতার মাধ্যমে লড়াই করা।

দারবিশ তখন এ বঞ্চনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পথ খুঁজছিলেন। সে সময় তিনি একটি পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে কাজ শুরু করেন। সেই ফিলিস্তিনিদের মুক্তি সংগ্রামের একটি শক্তিশালী অস্ত্র হয়ে উঠেছিল কবিতা।

‘আমছিয়া’ বা সান্ধ্য কবিতা পাঠ অনুষ্ঠানগুলোয় গ্রামে গ্রামে গিয়ে দারবিশ কবিতা পাঠ করতেন, যা ফিলিস্তিনিদের দারুণ প্রভাবিত করেছিল।

ইসরাইলি সরকার শঙ্কিত হয়ে পড়ে এবং তার আমছিয়াগুলোর ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে। সেই সময় ইসরাইলি সৈন্যরা সন্ধ্যা থেকে সকাল পর্যন্ত দারবিশকে গৃহবন্দি করে রাখত।

কুরআন সামনে রেখে কবিতা লিখতেন আল্লামা ইকবাল


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ