শরিফ ওসমান হাদি হত্যার বিচার দাবিতে রাজধানীর শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছে তার সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চ। সরকারের উপদেষ্টারা শাহবাগে হাজির হয়ে জনগণের সামনে দাঁড়িয়ে জবাব না দেওয়া পর্যন্ত এ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে সংগঠনটি।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) বিকেলে শাহবাগ মোড় অবরোধ করে অবস্থান কর্মসূচি পালনকালে এ ঘোষণা দেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব আব্দুল্লাহ আল জাবের।
তিনি বলেন, সরকারের উপদেষ্টারা শাহবাগে এসে জনগণের সামনে দাঁড়িয়ে জবাব না দেয়া পর্যন্ত এই স্থান ছাড়বো না। প্রয়োজনে জীবন দিয়ে হলেও এই অবস্থান ধরে রাখবো।
আব্দুল্লাহ আল জাবের বলেন, এই জমিন শহিদ ওসমান হাদির রক্তে ভিজেছে। অথচ, এখন কেউ কেউ এসে আমাদের নির্দেশ দিতে চায়- এই কাজ করো না, ওই কাজ করো না। আমরা দেখছি, আপনারা ক্যান্টনমেন্টে গিয়ে হাজিরা দেন। আমাদের আর উপেক্ষা করা চলবে না।
তিনি আরও বলেন, শহিদ ওসমান হাদির রক্তের বিচার আদায়ের দাবিতেই রাজপথে নেমেছি। যতক্ষণ পর্যন্ত সরকারের উপদেষ্টারা জনগণের সামনে এসে জবাবদিহি না করবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত শাহবাগ ছাড়বো না।
ইনকিলাব মঞ্চের সদস্য সচিব বলেন, সাধারণ মানুষ যতদিন আত্মমর্যাদা নিয়ে বাঁচতে না পারবে এবং একজন নারী যতদিন হিজাব পরে স্বাধীনভাবে চলাচল করতে না পারবে, ততদিন প্রকৃত স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে না।
শুক্রবার (২৬ ডিসেম্বর) জুমার নামাজের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) কেন্দ্রীয় মসজিদ থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে শাহবাগে অবস্থান নেন ইনকিলাব মঞ্চের সদস্যরা। সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ব্যাপক জনসমাগম সৃষ্টি হতে থাকে। এতে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায় এ এলাকায়।
শাহবাগে হাদি হত্যাকাণ্ডের সুষ্ঠু তদন্ত, দোষীদের দ্রুত গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি তুলেছেন আন্দোলনকারীরা। ‘আমরা সবাই হাদি হবো, যুগে যুগে লড়ে যাবো’ স্লোগানে উত্তাল হয়ে উঠেছে পুরো শাহবাগ।
জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী সময়ে গঠিত রাজনৈতিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ছিলেন শহিদ শরিফ ওসমান হাদি। আসন্ন ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসন থেকে সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করার ঘোষণা দিয়েছিলেন তিনি।
এই নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরদিন ১২ ডিসেম্বর ঢাকার পুরানা পল্টনের বক্স-কালভার্ট রোডে একটি চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা হাদিকে মাথায় গুলি করে। আশঙ্কাজনক অবস্থায় প্রথমে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে এভারকেয়ার হাসপাতালে তাকে চিকিৎসা দেওয়া হয়।
অবস্থার অবনতি হলে ১৫ ডিসেম্বর এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে তাকে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয়। সেখানেই তিন দিন পর ১৮ ডিসেম্বর চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
আরএইচ/