শনিবার, ২০ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ৫ পৌষ ১৪৩২ ।। ২৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭


জানাজার আগে জাতির কাছে একটি প্রশ্ন রাখলেন ওসমান হাদির ভাই

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের সম্মুখযোদ্ধা ও ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদির জানাজায় অংশ নিয়ে গভীর আক্ষেপ প্রকাশ করেছেন তার বড় ভাই আবু বকর সিদ্দিক। 

শনিবার (২০ ডিসেম্বর) বেলা সোয়া ২টার দিকে জাতীয় সংসদ ভবনের দক্ষিণ প্লাজায় ওসমান হাদির জানাজায় অংশ নিয়ে তিনি এ আক্ষেপ প্রকাশ করেন।

আবু বকর সিদ্দিক বলেন, দিবালোকে, রাজধানী ঢাকায় জুমার নামাজের পর প্রকাশ্যে গুলি করে একজন মানুষকে হত্যা করা হলো। অথচ সাত-আট দিন পেরিয়ে গেলেও খুনিরা ধরা পড়েনি। যদি তারা এ সময়ের মধ্যে সীমান্ত পার হয়ে যেতে পারে, তাহলে তা জাতির জন্য চরম লজ্জার বিষয়।

তিনি আরও বলেন, পাঁচ থেকে সাত ঘণ্টার মধ্যে তারা কীভাবে দেশ ছাড়ল—এই প্রশ্ন আমি জাতির কাছে রেখে গেলাম। আমার কোনো ব্যক্তিগত চাওয়া-পাওয়া নেই। আমার ভাই ওসমান হাদি শহীদ হয়েছে। শহীদ হওয়ার আকাঙ্ক্ষা তার নিজের মধ্যেই ছিল। আপনারা তার বক্তব্য শুনেছেন।

এ সময় তিনি দ্রুত হত্যাকারীদের শনাক্ত ও আইনের আওতায় আনার দাবি জানান।

আজ দুপুর আড়াইটায় মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে হাদির জানাজা শুরু হয়। এতে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস, উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতাসহ সর্বস্তরের মানুষ অংশ নেন।

এর আগে, আজ সকাল ৯টা ৪০ মিনিটের দিকে সেনাবাহিনী, বিজিবি ও পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর কঠোর নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে তার মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের হিমঘর থেকে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হয়। এ সময় হাদির স্বজন, সহযোদ্ধা ও সহকর্মীরা সঙ্গে ছিলেন।

 

পরে বেলা ১১টা ৪০ মিনিটের দিকে ময়নাতদন্ত শেষে ফের হাদির মরদেহ জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নেওয়া হয়। সেখানে তাকে শেষ গোসল করানো হয়। গোসল শেষে তার মরদেহ জাতীয় সংসদের দক্ষিণ প্লাজায় জানাজার জন্য নিয়ে আসা হয়। 

এদিকে, শরিফ ওসমান হাদির মৃত্যুতে আজ একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালিত হচ্ছে। দিনটি উপলক্ষে দেশের সব সরকারি, আধা-সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ সরকারি, বেসরকারি ভবন এবং বিদেশে বাংলাদেশ মিশনগুলোতে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত থাকছে।

শরিফ ওসমান হাদি ২০২৪ সালের ছাত্র-জনতা অভ্যুত্থানের একজন সম্মুখ সারির নেতা ছিলেন। তিনি ইনকিলাব মঞ্চ নামে একটি সংগঠনের মুখপাত্র ও আসন্ন জাতীয় নির্বাচনে ঢাকা-৮ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন। 

গত ১২ ডিসেম্বর নির্বাচনী প্রচারণাকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনের বক্স কালভার্ট সড়কে চলন্ত মোটরসাইকেল থেকে দুর্বৃত্তরা রিকশায় থাকা ওসমান হাদিকে গুলি করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় দ্রুত তাকে ঢাকা মেডিকেলের জরুরি বিভাগে নেওয়া হয়।

এরপর পরিবারের ইচ্ছায় তাকে রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সবশেষ গত ১৫ ডিসেম্বর দুপুরে উন্নত চিকিৎসার জন্য এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে সিঙ্গাপুরে নেওয়া হয় ওসমান হাদিকে। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ১৮ ডিসেম্বর তিনি মারা যান। পরে শুক্রবার তার মরদেহ ঢাকায় আনা হয়। জানাজা শেষে তাকে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের সমাধির পাশে সমাহিত করা হবে।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ