সোমবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ।। ১৪ আশ্বিন ১৪৩২ ।। ৭ রবিউস সানি ১৪৪৭


বাকস্বাধীনতা খর্বের চক্রান্তে ২২২০ নাগরিকের প্রতিবাদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের বাকস্বাধীনতা খর্ব করার চক্রান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে ২২২০ জন বিশিষ্ট নাগরিক এক যৌথ বিবৃতি দিয়েছেন। সোমবার (২৯ সেপ্টেম্বর ২০২৫) তারা এ বিবৃতি প্রদান করেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, আইইউবি-র শিক্ষক ড. মোহাম্মাদ সরোয়ার হোসেনের ব্যক্তিগত ফেসবুক পোস্টকে কেন্দ্র করে একটি সংগঠিত অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বাস্তবতাবিবর্জিত অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের ওপর চাপ সৃষ্টি করে তাঁর মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্বের চেষ্টা করা হচ্ছে, যা অযৌক্তিক, অশোভন ও সাংবিধানিক অধিকারের পরিপন্থী।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, ড. সরোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে জনস্বাস্থ্য সংশ্লিষ্ট গবেষণা ও সচেতনতা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। ভিন্নমতের প্রতিবাদ একাডেমিক পরিসরে হওয়া উচিত, প্রশাসনিক শাস্তির মাধ্যমে নয়। তিনি ইতোমধ্যে ভুল বোঝাবুঝির জন্ম দিতে পারে মনে করে সংশ্লিষ্ট পোস্ট স্বেচ্ছায় মুছে ফেলেছেন এবং দুঃখ প্রকাশ করেছেন। এর পরও তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি ষড়যন্ত্রমূলক বলে অভিহিত করা হয়।

নাগরিকেরা অভিযোগ করেন, ড. সরোয়ারকে নারীবিদ্বেষী প্রমাণের জন্য তাঁর বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য প্রচার করা হচ্ছে। তিনি কখনোই বাল্যবিবাহ বা নারীর স্বাস্থ্যসচেতনতার বিরোধিতা করেননি। বরং তিনি ধর্মীয় ও সামাজিক মূল্যবোধবিরোধী কিছু এনজিও কার্যক্রমের সমালোচনা করেছেন।

বিবৃতিতে বলা হয়, ব্যক্তিগত ফেসবুক প্রোফাইলে দেওয়া মতামতকে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা অনৈতিক। আগে ট্রান্সজেন্ডার ইস্যুতেও তাঁর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র হয়েছিল, যা ব্যর্থ হয়। তাই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে অযৌক্তিক চাপের সামনে মাথা নত না করার আহ্বান জানানো হয়।

বিবৃতিতে জোর দিয়ে বলা হয়, ভিন্নমত প্রকাশের জায়গা একাডেমিক পরিসরেই সীমাবদ্ধ থাকতে হবে। প্রশাসনিক শাস্তির ভয় দেখিয়ে ব্যক্তিগত মতামত নিয়ন্ত্রণ করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা খর্বের সামিল।

২২২০ জন বিশিষ্ট নাগরিকের স্বাক্ষরিত এই বিবৃতিতে রয়েছেন ৩৬৩ জন শিক্ষক, ২৪১ জন ইঞ্জিনিয়ার, ৭৫ জন ডাক্তারসহ সাবেক সচিব, গবেষক ও বিভিন্ন পেশাজীবী। তাদের মধ্যে নারী রয়েছেন ৫১৭ জন। শিক্ষকদের মধ্যে ৪৮ জন অধ্যাপক, ১০ জন সহযোগী অধ্যাপক ও ২৭ জন সহকারী অধ্যাপক রয়েছেন।

স্বাক্ষরকারীদের মধ্যে রয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক পিএসসি সদস্য ও অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. হাসানুজ্জামান চৌধুরী, অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ গোলাম রব্বানী, অধ্যাপক ড. মো. মাসুদ আলম, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক মোহাম্মদ মোজাম্মেল হক, অধ্যাপক ড. মোছা. রাশেদা চৌধুরী ও অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুব মোর্শেদ।

এছাড়া বিশিষ্ট আলেমদের মধ্যে আছেন বায়তুশ শরফ ইসলামী গবেষণা কেন্দ্রের পরিচালক ড. মাওলানা ঈসা শাহেদী, মুফতি রেজাউল করিম আবরার, ড. মাওলানা শহীদুল ইসলাম ফারুকী এবং মাওলানা গাজী সানাউল্লাহ রাহমানী।

বিবৃতিতে আরো স্বাক্ষর করেছেন সাবেক সচিব ও অতিরিক্ত সচিববৃন্দ, মূল্যবোধ আন্দোলনের দায়িত্বশীল মহসিনউদ্দীন মাহমুদ, ডাক্তার মিলিভা মোজাফফর, ডাক্তার ইরতিফা তাসনীম এবং ডাক্তার মো. আরিফ মোর্শেদ খান।

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ