বুধবার, ১০ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ২৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩২ ।। ১৯ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
দুর্নীতি-সন্ত্রাস-ফ্যাসিজমের অভিযোগ পেলে প্রার্থিতা বাতিল হবে: নাহিদ কোনাবাড়ী উলামা পরিষদের আন্তর্জাতিক সম্মেলন বৃহস্পতি ও শুক্রবার খালেদা জিয়াকে বিদেশে না নিলে তারেক রহমান দ্রুত দেশে আসবেন : এ্যানি অপরাধ প্রবণতা কমাতে মডেল মসজিদগুলো সহায়ক হবে: ধর্ম উপদেষ্টা কে কোথায় থেকে লড়বেন এনসিপির আলোচিত নেতারা? যেভাবে গ্রাহকদের টাকা ফেরত দেবে সম্মিলিত ইসলামী ব্যাংক মোহাম্মদপুরে মা-মেয়ে হত্যার ঘটনায় সেই গৃহকর্মী গ্রেপ্তার ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে এনসিপির মনোনয়ন পেলেন মাওলানা আশরাফ মাহদী পাঁচ দিন ধরে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা তেঁতুলিয়ায় এনসিপির প্রথম ধাপে ১২৫ আসনে প্রার্থীর নাম ঘোষণা

‘প্রাথমিকে গানের শিক্ষক নিয়োগ ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সংস্কৃতি ধ্বংসের সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র’

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহীর আহ্বানে মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) বেলা ২টায় ময়মনসিংহের ঐতিহাসিক টাউনহল প্রাঙ্গণে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ধর্মীয় শিক্ষকের পরিবর্তে সংগীতের শিক্ষক নিয়োগের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত ইসলাম শিক্ষা বাধ্যতামূলক করার দাবিতে প্রতিবাদ সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিল ও স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। 

৬৫ হাজার ৫০০-এর বেশি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সংগীত শিক্ষক নিয়োগ এবং ‘তৃতীয় লিঙ্গ’ কোটার মাধ্যমে ট্রান্সজেন্ডারদের শিক্ষক পদে নিয়োগ সংক্রান্ত সরকারি প্রজ্ঞাপনের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাতে এই কর্মসূচি আহ্বান করে ময়মনসিংহের আলেমদের সর্ববৃহৎ ইসলামী সংগঠন ইত্তেফাকুল উলামা বৃহত্তর মোমেনশাহী। 
উক্ত কর্মসূচির ব্যাপারে ইত্তেফাকের নেতৃবৃন্দ বিবৃতিতে বলেন, ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষা বাদ দিয়ে গানের শিক্ষক নিয়োগ একটি পরিকল্পিত ধর্মবিমুখ নীতির বহিঃপ্রকাশ। এটি কার স্বার্থে, কার উদ্দেশ্যে এবং কীসের ভিত্তিতে করা হচ্ছে—তা জাতি জানতে চায়।

নেতৃবৃন্দ আরও বলেন, বিদ্যালয়গুলোতে মৌলিক শিক্ষায় ভয়াবহ ঘাটতি থাকা সত্ত্বেও সঙ্গীত শিক্ষক নিয়োগ শিক্ষানীতির সাথে সাংঘর্ষিক এবং জাতীয় স্বার্থবিরোধী। ইসলাম ধর্মে বাদ্যযন্ত্রের ব্যবহার নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও প্রাথমিক শিক্ষায় সংগীত বাধ্যতামূলক করা মুসলিম জনগোষ্ঠীর ধর্মীয় মূল্যবোধ, সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয় ধ্বংসের সুস্পষ্ট ষড়যন্ত্র।

আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী বলেন, গান শেখানোর পরিবর্তে শিশুদের নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত করতে প্রতিটি বিদ্যালয়ে আলাদা ধর্মীয় শিক্ষক নিয়োগ ও দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত ধর্মীয় শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা সময়ের দাবি। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চারিত্রিক উন্নয়ন, মানসিক ও আধ্যাত্মিক বিকাশের জন্য ধর্মীয় শিক্ষাই অপরিহার্য।

দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানিয়ে ইত্তেফাকের নেতারা বলেন, শিক্ষাব্যবস্থাকে ধর্মনিরপেক্ষতার মোড়কে অধর্মের পথে পরিচালনা করার এই ষড়যন্ত্র রুখে দেয়া প্রতিটি দেশপ্রেমিক ও ঈমানদার মানুষের কর্তব্য।

দেশের সচেতন আলেম সমাজ আশঙ্কা প্রকাশ করছেন যে, তৃতীয় লিঙ্গ কোটার নামে শিক্ষাব্যবস্থায় সমকামিতার মতো এজেন্ডা প্রবেশ করানো হচ্ছে, যা সমাজে নতুন বিভাজন ও দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করবে।

দেশব্যাপী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির চরম অবনতি ও রাজনৈতিক অস্থিরতার জন্য এই সময়ের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ব্যর্থতাকে দায় করে বক্তারা। বক্তারা বলেন, সরকার দেশের পরিস্থিতি শান্ত করতে পারছেনা তদুপরি আবার শিক্ষার নামে সমাজে নতুন বিভাজন তৈরী করছে। একদিকে সরকার বলছে সব সিদ্ধান্ত আমরা নিতে পারবো না, নির্বাচিত সরকার এসে সিদ্ধান্ত নেবে অন্যদিকে ট্রান্সজেন্ডার সহ নানা বিতর্কিত বিষয়ের সিদ্ধান্তও গ্রহণ করছে সরকার। এটা উদ্বেগজনক।

সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে নেতারা আরো বলেন, জাতির ভবিষ্যৎ প্রজন্মের শিক্ষা, নৈতিকতা ও চরিত্র গঠনের স্বার্থে অবিলম্বে এ প্রজ্ঞাপন বাতিল করতে হবে। অন্যথায় যেকোন অনাকাঙ্ক্ষিত পরিস্থিতির দায় সরকারকেই নিতে হবে। জনগণের আন্দোলন রাজপথে কঠোর থেকে কঠোর হবে।

উক্ত কর্মসূচিতে দলমত নির্বিশেষে সচেতন তৌহিদি জনতা অংশগ্রহণ করে। টাউনহলে মুক্তমঞ্চে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তৃতা দেন নেতারা। এরপর বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে টাউনহল মোড় হয়ে, নতুন বাজার, বাতিরকল প্রদক্ষিণ করে সিটি করপোরেশন অফিসে গিয়ে বিভাগীয় কমিশনার বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করা হয়। 

সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের মজলিশে শূরার সভাপতি আল্লামা আব্দুর রহমান হাফেজ্জি। উপস্থিত ছিলেন ও বক্তব্য দেন আল্লামা খালেদ সাইফুল্লাহ সাদী, আল্লামা আব্দুল হক, মুফতী মুহিববুল্লাহ, মুহাম্মাদ বিন হাফেজ্জি, মাওলানা মঞ্জুরুল হক, আবুল কালাম আজাদ, মুফতী আমীর ইবনে আহমাদ, মুফতী শরিফুর রহমান, মাওলানা মানাজির আহসান খান তাবশির প্রমুখ।

এমএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ