বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ।। ২৯ মাঘ ১৪৩১ ।। ১৩ শাবান ১৪৪৬


বিশ্ব ইজতেমা ২০২৫: চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার
ফাইল ছবি

মুহাম্মাদ শোয়াইব আস-সফাদী


বিশ্ব ইজতেমা, যা দাওয়াতে তাবলীগের একটি অনন্য বৈশ্বিক সমাবেশ, প্রতিবছর লাখো মানুষের আত্মিক ও ধর্মীয় চেতনার পুনর্জাগরণ ঘটায়। তবে এবারের ইজতেমার প্রথম পর্ব কিছু বিশেষ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। এর পেছনে তিনটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়।  

এক. কওমি মাদ্রাসার ছাত্রদের পরীক্ষা
ইজতেমার প্রথম পর্বের  ঠিক আগের সময়ে বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়া ও আল হাইয়াতুল উলিয়ার পরীক্ষা। এছাড়াও মাদরাসাগুলোতে বাষিক পরীক্ষা থাকেবে।

ফলে কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকরা প্রথম পর্বে অংশগ্রহণ গ্রহণ করাটা খুব কঠিন হবে।। এটি ইজতেমার স্বাভাবিক সমাগমের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। তবে এটি তৃণমূলের সাথীদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বার্তা প্রদানের সুযোগও বটে।  

প্রচলিত অপপ্রচার রয়েছে যে ইজতেমায় কওমি মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষকদের উপস্থিতি ছাড়া মাঠ ভরে না। অনেকে এটিকে তাবলীগের প্রকৃত সাথীদের বদলে হেফাজতে ইসলামের সমাবেশ বলে বিদ্রুপ করেছেন। এবারের ইজতেমা সেই অপপ্রচারের মোক্ষম জবাব হতে পারে। কওমি ছাত্র-শিক্ষকদের কম অংশ গ্রহণ সত্ত্বেও যদি মাঠ পূর্ণ হয়, তবে প্রমাণ হবে যে দাওয়াতের তাবলীগের প্রকৃত শক্তি তৃণমূলের সাথীদের মধ্যেই নিহিত।  

দুই. পূর্ববর্তী সহিংসতার নেতিবাচক প্রভাব 
 ২০১৮ সাল ও ২০২৪ সালে আলমি সুরাপন্থীদের ওপর একপক্ষের লাগাতার সহিংস আক্রমণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনাকে গণমাধ্যম অনেক সময় "সংঘর্ষ" বলে উপস্থাপন করেছে, যা প্রকৃত সত্যকে আড়াল করেছে। এর ফলে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভীতি ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে।  

২০১৮ এবং ২০২৪ সালের ঘটনাগুলোর রেশ এখনও মানুষের মধ্যে বিদ্যমান। অনেকেই মনে করেন ইজতেমার ময়দানে গেলে তারা সহিংসতার শিকার হতে পারেন। এই ভ্রান্ত ধারণা দূর করতে এবং মানুষের আস্থা পুনঃস্থাপন করতে দাওয়াতের সাথীদেরকে আরও নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। ইজতেমার শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করার মাধ্যমে এসব নেতিবাচক প্রভাব দূর করা সম্ভব।  

তিন. তৃণমূল পর্যায়ে নিবিড় মেহনতের প্রয়োজন
ইজতেমার সফলতা নির্ভর করে তৃণমূল পর্যায়ে দাওয়াতি কাজের উপর। মানুষকে ইজতেমার প্রকৃত ধর্মীয় ও আত্মিক গুরুত্ব সম্পর্কে সচেতন করতে হবে। তাবলীগের সাথীদের দায়িত্ব হবে তৃণমূলে আরও গভীরভাবে কাজ করা এবং মানুষকে তাশকিল করে ময়দানে নিয়ে আসা। 

বিশ্ব ইজতেমা ২০২৫-এর প্রথম পর্ব একাধিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হলেও এটি একইসঙ্গে একটি সম্ভাবনার ক্ষেত্র। এই চ্যালেঞ্জগুলো দক্ষতার সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারলে ইজতেমার প্রকৃত উদ্দেশ্য ও গুরুত্ব আরও সুস্পষ্টভাবে প্রতিষ্ঠিত হবে।  

ইজতেমা শান্তি, ঐক্য এবং সম্প্রীতির বার্তা বহন করে। তাই সবার উচিত পারস্পরিক সহনশীলতা বজায় রেখে একসঙ্গে কাজ করা। দাওয়াতের সাথীরা যদি আন্তরিক প্রচেষ্টা চালান, তবে এবারের ইজতেমা একটি ইতিহাস তৈরি করবে এবং বিশ্বকে ইসলামি ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের এক অনন্য উদাহরণ উপহার দেবে।

হুআ/


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ