বুধবার, ১৭ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ২ পৌষ ১৪৩২ ।। ২৬ জমাদিউস সানি ১৪৪৭

শিরোনাম :
মাওলানা খালেদ সাইফুল্লাহকে একটি প্রাডো ব্র্যান্ডের গাড়ি উপহার দিয়েছেন এক ভক্ত তারেক রহমানের ফ্লাইটে দেশে ফিরতে নেতাকর্মীদের হিড়িক, সব টিকিট বিক্রি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভারতের 'নসিহত' অগ্রহণযোগ্য: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা আওয়ামী লীগের ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে ‘মামলা না থাকলেও’ গ্রেপ্তারের নির্দেশ ৬ দফা দাবিতে ঐক্যবদ্ধ বিবৃতি দিল ছাত্রশিবিরসহ ১৮ ছাত্রসংগঠন ২০ ফেব্রুয়ারি শুরু একুশে বইমেলা আশার বাণী নয়, প্রধান উপদেষ্টার কাছে মানুষ পদক্ষেপ দেখতে চায়: অধ্যক্ষ ইউনুস মাওলানা জুনায়েদ আল হাবীবকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার শীর্ষ আলেমদের সমর্থন এমন কিছু ঘটবে যা সারাদেশ কাঁপাবে, বান্ধবীকে শুটার ফয়সাল দাড়ি-টুপিকে রাজাকারের প্রতীক বানানোর ইস্যুতে হেফাজতের তীব্র প্রতিবাদ

আসন সমঝোতায় ‘ঘাম ঝরছে’ আট দলের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

||বিশেষ প্রতিনিধি||

‘ঐক্য’ বিষয়টি বলতে যতটা সহজ বাস্তবে ততটা নয়। পারস্পরিক ভালো বোঝাপড়া এবং ছাড় দেওয়ার মানসিকতা না থাকলে ঐক্য বাস্তবায়ন বড়ই কঠিন। ইসলামি দলগুলোর মধ্যে এবারের নির্বাচনে একটি ঐক্য প্রক্রিয়া চলছে বেশ কয়েক মাস ধরে। এবার সেই ঐক্য চূড়ান্ত রূপ লাভ করতে যাচ্ছে। জামায়াতে ইসলামী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশসহ ইসলামি ও সমমনা আটটি দল মিলে এবারের ভোটে ‘এক বাক্স’ নীতি প্রয়োগ করতে যাচ্ছে। দলগুলো নিজেদের মধ্যে আসন ভাগাভাগির মাধ্যমে এই নীতি বাস্তবায়ন করতে চায়। তবে আসন সমঝোতা করতে গিয়ে কঠিন বাস্তবতার মুখে পড়েছে আট দল। সবাইকে খুশি রেখে একটি চূড়ান্ত রূপরেখা পেশ করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন দলগুলোর দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতারা।

ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন তফসিল ইতোমধ্যে ঘোষণা হয়ে গেছে। আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি দেশে ভোটের দিন ধার্য করা হয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচনি উত্তাপ মাঠে গড়াতে যাচ্ছে। বিএনপি অল্প কয়েকটি আসন মিত্রদের জন্য রেখে বাকি আসনগুলোতে প্রার্থী চূড়ান্ত করেছে। অপর দিকে আট দলের মধ্যে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ তিনশ আসনেই প্রার্থী ঘোষণা করেছে। অন্য দলগুলোও বেশির ভাগ আসনে প্রার্থী দিয়েছে। এই অবস্থায় আসন সমঝোতা চূড়ান্ত না হওয়ায় আট দলের প্রার্থীরা চূড়ান্তভাবে ভোটের মাঠে নামতে পারছেন না।

কয়েকটি দাবিতে দুই মাসের বেশির সময় ধরে আন্দোলন চালিয়ে আসা আট দলের মধ্যে একটা ভালো বোঝাপড়া ইতোমধ্যে হয়ে গেছে। তারা একসঙ্গে আগামী নির্বাচনে অংশ নিচ্ছে এমনটাও প্রায় চূড়ান্ত। এবার আসন সমঝোতার পালা। আর এটাই সবচেয়ে কঠিন কাজ। সেই কাজটি সারতে একটি লিয়াজোঁ কমিটি করা হয়েছে। সেই কমিটির কাজও চলমান। তবে সবার মন জুগিয়ে আসন সমঝোতা করতে গিয়ে হিমশিম খাচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।

আট দলের আসন সমঝোতা প্রক্রিয়ায় জড়িত একাধিকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বারবার বসেও তারা চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসতে পারছেন না। কোনো কোনো দল কিছু আসনের ব্যাপারে কঠোর অবস্থান ধরে রাখায় বিষয়টি চূড়ান্ত করতে বেগ পেতে হচ্ছে। ছাড় দেওয়ার মানসিকতা না থাকলে এই প্রক্রিয়া হোঁচট খেতে পারে বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করছেন কেউ কেউ।

নাম প্রকাশ না করে আসন সমঝোতার প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত একটি ইসলামি দলের একজন কেন্দ্রীয় নেতা আওয়ার ইসলামকে বলেন, এখানে জামায়াতে ইসলামী ও ইসলামী আন্দোলন মূল ফ্যাক্টর। সঙ্গে মাওলানা মামুনুল হকের বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসও কিছুটা গুরুত্ব পাচ্ছে। বাকিরা খুব একটা গুরুত্ব পাচ্ছে না। এটা নিয়ে কোনো কোনো দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সঞ্চারও হয়েছে। এটা শেষ পর্যন্ত ঐক্যে চিড় ধরাতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন ওই নেতা।

সূত্র জানিয়েছে, এখানে প্রধান দল জামায়াতে ইসলামী। দলটি চাচ্ছে সিংহভাগ আসনে তাদের প্রার্থীদের প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রাখতে। তবে ইসলামী আন্দোলন জামায়াতকে একক মোড়লগিরির সুযোগ দিতে নারাজ। তারা বলছে, জামায়াতের কাছাকাছি আসন তাদেরও দিতে হবে। আবার বাকি ছয়টি দলের কারও কারও প্রত্যাশাও অস্বাভাবিক। এই অবস্থায় আসন সমঝোতা জটিলতার দিকে যাচ্ছে।

একজন নেতা উদাহরণ দিয়ে বলেন, বরিশাল সদর আসন নিয়ে জামায়াত ও ইসলামী আন্দোলন দুই দলই অনড় অবস্থানে। এমনকি জামায়াত বরিশালের ছয়টি আসনের মধ্যে ইসলামী আন্দোলনকে একটি আসন দিতে চায়। অথচ বরিশাল হলো ইসলামী আন্দোলনের আঁতুরঘর। বিশেষ করে সদর আসনটি কেউই ছাড়তে সম্মত হচ্ছে না।

সিলেটের কিছু আসন নিয়ে জটিলতার কথা জানিয়ে ওই নেতা বলেন, সিলেট-৫ আসন নিয়ে বেশি জটিলতা দেখা দিয়েছে। জামায়াত, খেলাফত মজলিস, ইসলামী আন্দোলন সবাই এই আসনটি নিজেদের ভাগে রাখতে চায়। সিলেট-৩ আসন নিয়েও দর কষাকষি চলছে। জামায়াত ও দুই খেলাফতের মধ্যে টানাপোড়েন রয়েছে। এভাবে ঢাকার কয়েকটি আসন নিয়েও আছে জটিলতা। বিশেষ করে মাওলানা মামুনুল হক ঢাকা-১৪ আসনে নিজ দলের প্রার্থী রাখার ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। অন্যদিকে জামায়াতে ইসলামী এখানে প্রার্থী করেছে ফাঁসির দণ্ড পাওয়া দলের আলোচিত নেতা মীর কাসেম আলীর ছেলে ব্যারিস্টার আরমানকে, যিনি নিজেও আয়নাঘরে ছিলেন।

ইসলামি দলগুলোর নেতারা বলছেন, এবার ঐক্যের একটা বড় সুযোগ সামনে এসেছে। কারও একক কর্তৃত্ব, মোড়লিপনা কিংবা ছাড় না দেওয়ার মানসিকতা ঐক্যের পথে বড় অন্তরায় হতে পারে। এজন্য তারা সবার প্রতি সহনশীল হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এখনো আসন সমঝোতার ব্যাপারে আশাবাদী জানিয়ে তারা সব দলের নেতাকর্মীদের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না আসা পর্যন্ত সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আকারে-ইঙ্গিতেও কিছু লেখালেখি না করার অনুরোধ জানিয়েছেন।

এনএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ