বুধবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৫ ।। ১২ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৭ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
হাজিদের ভালো সার্ভিস দিতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র চলছে, প্রতিহত করা হবে: মাওলানা ইউসুফী বাংলাদেশে নির্বাচন পর্যবেক্ষক দল পাঠাবে ইইউ: রাষ্ট্রদূত মিলার শুরু হচ্ছে আন্তর্জাতিক পর্যটন মেলা বিটিটিএফ, অংশ নিচ্ছে ১২ দেশ যারা নির্বাচনের দিন গণভোট চায় তারা জুলাই সনদকে অকার্যকর করতে চায়: মিয়া গোলাম পরওয়ার মুয়াজ্জিন কল্যাণ সমিতি সিলেট উদ্যোগে তাফসিরুল কুরআন মহাসম্মেলন খুলনা ২ আসনে হাতপাখা প্রার্থী মুফতী আমানুল্লাহ'র গণসংযোগ রাবি শিক্ষকের হিজাব নিয়ে কটাক্ষের প্রতিবাদে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন আত্মবিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি নূরী আক্তারের উদ্যোক্তা হওয়ার গল্প জুলাই সনদ বাস্তবায়ন আদেশের খসড়ায় অস্পষ্টতা: ইসলামী আন্দোলন

৫০ বছর ধরে কোরআনের পুরনো কপি সংরক্ষণ করছেন আল-আয়াসিরা

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পাঁচ দশক ধরে পবিত্র কোরআনের পুরনো কপি সংগ্রহ করে বাঁধাই করেন জর্দানের মোহাম্মদ আল-আয়াসিরা। এভাবে নিজ উদ্যোগে দুই লাখের বেশি কপি বাঁধাই করে বিভিন্ন দেশে বিতরণ করেছেন তিনি।

১৯৭০ সালে জর্দানের জারাশ প্রদেশের সাকিব শহরে ‘সারখাতু আমিলি ওয়াতানিন’ নামে কোরআনের কপি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন আল-আয়াসিরা। তখন থেকেই ছোট্ট পরিসরে কাজ করতে থাকেন।

বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও এখনো তারুণ্যে ভরপুর মোহাম্মদ আল-আয়াসিরার মনোবল। তাই প্রতিদিন প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে কোরআনের সংগৃহীত কপির বাঁধাই ও মেরামতের কাজ করে যান তিনি। তাঁর উপনাম আবু জাকারিয়া। ১৯৬৬ সালে সপ্তম শ্রেণি পড়েছেন তিনি। এরপর নিয়মতান্ত্রিক পড়াশোনা বেশি দূর আগায়নি। পরবর্তী নিজ চেষ্টায় বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত গেলেও শেষ হয়নি তা। এর পর থেকে কর্মজীবনে ঢুকে পড়েন।

কোরআনের পুরনো কপি সংরক্ষণের উদ্যোগের পেছনের গল্পটি ছিল একটু অন্যরকম। ৫০ বছর আগে আরবি লেখা কাগজের টুকরো নোংরা জায়গায় পড়ে থাকতে দেখেন তিনি। কোরআনের ভাষার এমন দৃশ্য তাঁকে পীড়া দেয়। ১৯৭০ সালে তিনি পুরনো বই সংরক্ষণের উদ্যোগ নেন; যেন কেউ তা ময়লার জায়গায় ফেলে না দেয়। এ কাজে প্রথম থেকেই তাঁর পাশে ছিলেন আবু জাকারিয়ার দুই স্ত্রী। তাঁর ১৬ সন্তানও সংরক্ষণ ও বাঁধাইয়ের কাজে তাঁকে সহযোগিতা করে।

মুহাম্মদ আল-আয়াসিরা বলেন, ‘যেসব বইয়ের বাঁধাই সম্ভব নয়, আমি তা শরিয়তসম্মত উপায়ে নষ্ট করে ফেলি। বিশেষত কোরআনের অনুলিপিগুলো যথাযথভাবে তা বিনষ্ট করি। আমার কাছে একটি আগুনের চুল্লি রয়েছে, যেখানে একসঙ্গে ছয় হাজার কপি পোড়ানো যায়। পুড়িয়ে ফেলার পর ছাইগুলো আমি এমন স্থানে পুঁতে ফেলি যেখানে কোনো মানুষ হাঁটে না।’

কোরআন ও বইয়ের পুরনো কপি সংরক্ষণেই থেমে যায়নি আল-আয়াসিরার উদ্যোগ। বাঁধাইয়ের পর তা বইপ্রেমী পাঠকদের কাছে বিনা মূল্যে বিতরণ করেন তিনি। আর কোরআনের পুরনো কপি বাঁধাইয়ের পর বিভিন্ন দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন। স্থানীয় ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার সহযোগিতায় তিনি আফ্রিকার দেশগুলোতে ২১ হাজারের বেশি কোরআনের কপি পাঠিয়েছেন।

আল-আয়াসিরা নিজের গাড়ি দিয়ে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে পুরনো বই সংগ্রহ করেন। সাধারণত বাসাবাড়ি, পুরনো আবর্জনার স্থান থেকে বা বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার মাধ্যমে তা সংগ্রহ করা হয়। এরপর কভার ও ভেতরের সব পৃষ্ঠা থাকার বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর পুরনো বইয়ের বাঁধাইয়ের কাজ করা হয়। দুই বছর আগে জর্দানের বাদশাহ দ্বিতীয় আবদুল্লাহর পক্ষ থেকে তার উদ্যোগের জন্য বিভিন্ন সহযোগিতা করা হয়।

মহান আল্লাহর কাছে প্রতিদান লাভের আশায় এই উদ্যোগ নেন বলে জানান আল-আয়াসিরা। তিনি বলেন, ‘কোরআন সংরক্ষণের এই উদ্যোগে আমার কোনো আর্থিক লাভ নেই। পবিত্র কোরআনের সেবা করাই আমার প্রধান লক্ষ্য। কোরআন অবমাননাকারীদের উদ্দেশে আমার বক্তব্য, পৃথিবীর কেউ কেউ কোরআন অবমাননার জন্য নিজের মূল্যবান সময় ব্যয় করছে। তাদের হৃদয়বিদারক কর্মকাণ্ড সমাজে কেবল বিশৃঙ্খলা ও অস্থিরতা বাড়াবে।’

পুরনো বই সংগ্রহের কাজে তেমন বেশি খরচ হয় না বলে জানান আল-আয়াসিরা। তিনি বলেন, ‘প্রতি সপ্তাহে গাড়ির জ্বালানি বাবদ তিন শ দিনার, জায়গার ভাড়া ৭৫ দিনার, প্রয়োজনীয় সামগ্রীতে ৭০ দিনার খরচ হয়। পবিত্র কোরআনের সেবার উদ্দেশ্যে যে কেউ চাইলে এ উদ্যোগ নিতে পারে।’ সূত্র: আনাদোলু এজেন্সি

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ