শনিবার, ১৮ মে ২০২৪ ।। ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১০ জিলকদ ১৪৪৫


উম্মাহর হেদায়াতের দোয়া করা জরুরি: মুফতী ফয়জুল্লাহ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতী ফয়জুল্লাহ
মুঈনে মুহতামিম ও সিনিয়র মুহাদ্দিস, জামিয়া কোরআনিয়া আরাবিয়া লালবাগ, ঢাকা।
সদস্য, হাইয়াতুল উলইয়া ও সহ সভাপতি, বেফাক এবং মহাসচিব, ইসলামী ঐক্যজোট

প্রতিবেদন: জামিল আহমাদ ।। হযরত মুহাম্মদ মোস্তফা সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামসহ সমস্ত নবী ও রাসূলগণই দাওয়াত ও তাবলীগের কাজের জন্য প্রেরিত হয়েছেন। এটা দ্বীনের মৌলিক কাজের অন্যতম। এর প্রভাব সারাবিশ্বে রয়েছে, এর দ্বারা অনেক অমুসলমান মুসলমান হচ্ছেন। অনেক পথহারা দ্বীনের পথে আসছেন। এর ধারাবাহিকতায় বিশ্ব ইজতেমা সারাবিশ্বে দাওয়াত ও তাবলীগের কাজের প্রভাব বিস্তারের প্রতিফলন। যা বিশ্ব মুসলিমের অনত্যম সম্মিলন। প্রভাব বিস্তারের ক্ষেত্রে আমাদের আকাবির উলামায়ে কিরাম ও তাবলীগের মুরব্বীদের অনস্বীকার্য মেহনত, আল্লাহতায়ালার কাছে রোনাজারি। তাদের কাজের খুলুসিয়্যাত এবং তাদের প্রতি দ্বীনের দরদই অন্যতম কারণ বলে মনে করি।

মুফতি ফজলুল হক আমিনী রাহমাতুল্লাহি প্রত্যেকবার বিশ্ব ইজতেমায় যেতেন। যেখানে ইজতেমার দায়িত্বশীল মুরব্বীরা উলামায়ে কেরামদের জন্য নির্ধারিত জায়গার ব্যবস্থা করেন, যাতে দেশে শীর্ষ আলেমরা আসলে বসতে পারেন, একটু বিশ্রাম নিতে পারেন। মুফতি আমিনী সেখানে কখনোই যেতেন না। তিনি লালবাগ জামিয়ার ছাত্র-শিক্ষক ও এলকাবাসী মাঠের যে জায়গায় থাকতেন সেখানে তিনি অবস্থান করতেন। তিনি মনে করতেন মাঠে সবাই থাকছেন আমিও সেখানে অবস্থান করব। তিনি প্রত্যেকবারই ব্যাক্তিগতভাবে লালবাগ ছাত্র-শিক্ষকদেও একবেলা খাবারের ব্যবস্থা করে দিতেন। এবং যাওয়ার সময় তাদেও জন্য ফলমূল, বিস্কটুসহ নাস্তাসামগ্রী নিয়ে যেতেন। এবং দাওয়াত ও তাবলীগের জুড়ে থাকার তাগিদ দিয়ে উৎসাহ দিতেন।

দাওয়াত ইসলামের অগ্রগতির জন্য দাওয়াত অপরিহার্য। ইসলামী সমাজকে তার ভিত্তির ওপর সঠিকভাবে টিকিয়ে রাখার জন্য ইসলামী দাওয়াত জরুরি। দাওয়াত দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মানলে ভালো হয়- যেমন কোন ব্যাক্তিকে টার্গেট করলে, তার ব্যক্তিজীবন, সামাজিক অবস্থান, তার মাঝে দ্বীন কতটুকু বিদ্যমান আছে আগে থেকে জানার চেষ্টা করা। যাওয়ার আগে তার হেদায়তের জন্য দোয়া করা। পারলে দুই রাকাত নামায পড়া। সুন্দরভাবে দ্বীনের সৌন্দর্য তার কাছে সুন্দও ভাষায় উপস্থাপন করা। দাওয়াত দিয়ে আসার পরও তার জন্য দোয়া করা। তার খোজখবর নেওয়া। অর্থাৎ দাওয়াত দেওয়ার আগে ভালো পরিকল্পনা করা। শুরু এবং শেষে দেয়া করা

দায়ী ইল্লাল্লাহর জন্য প্রথম কাজ হলো- রাসুল্লাল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের সুন্নাতের অনুসারী হতে হবে। অর্থাৎ নিজের ব্যাক্তিজীবনে সুন্নাত মুতাবেক হওয়া। সাহাবায়ে কেরামের নীতি আর্দশ মেনে চলা। এমন না হওয়া যে, নিজের কারণে যাদেরকে দাওয়াত দিচ্ছি তারা দ্বীনের যুক্ত হওয়ার পথে উদ্ভুদ্ধ না হয়ে দ্বীন থেকে সরে যাচ্ছে, সরে যায়। দায়ী ইল্লাল্লাহর ভাষা হবে মধুর ও চিত্তাকর্ষক। দরদভরা মন নিয়েই তিনি দাওয়াত প্রদান করবেন। সমালোচনা মুলক বক্তব্য পরিহার করে বিশ্বস্ত উপদেশকারীর মত উপদেশ প্রদান করবেন। কটাক্ষের উত্তম জবাব দিবেন। ভাষা সহজ অথচ সংক্ষিপ্ত পেঁচালো না হওয়া। হাস্যোজ্জল চেহারার অধিকারী হওয়া।

দুনিয়াতে কোনকিছুই অসম্ভব না। দুনিয়াতে যত বড় যুদ্ধ-বিগ্রহ হয়েছে, যত বড়ই সমস্যা হোক না কেন। অবশ্যই এটা আলোচনার মাধ্যমেই সমাধান হয়েছে। সেখানে কোন পক্ষ সমাজ ও দেশের নিজের ব্যাক্তিস্বার্থ ত্যাগ করেছে। কেউ ত্যাগ করবে। কেউ মানিয়ে নিতে নিয়েছে। এটাই স্বাভাবিক। তাবলিগের জোর মিল মহব্বত ফিরিয়ে আনা কোন অসম্ভব বিষয় না। অবশ্যই সম্ভব। সেটাও আলোচনার মাধ্যমেই করতে হবে। তবে তাবলীগের উসুল বাহিরে গিয়ে অবশ্যই নয়। উসুল মেনে প্রয়োজনে ব্যাক্তিস্বার্থ ও নিজের মতামতের প্রাধানের মনোভাব ত্যাগ করতে হবে। একসাথে বসতে হবে আলোচনার মাধ্যমে অবশ্যই্ এই সংকটের কাটিয়ে উঠা সম্ভব বলে মনে করছি।

-এটি


সম্পর্কিত খবর