আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: পিরোজপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর মো. নোমানকে হুমকি ও তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিনকে কঠোরভাবে ভর্ৎসনা করেছেন হাইকোর্ট।
আজ মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ ভর্ৎসনা করেন। এর আগে আদালতের তলবে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন পিপি খান মো. আলাউদ্দিন।
আদালত বলেছেন, পিরোজপুরের পিপি একজন বিচারকের সঙ্গে যে আচরণ করেছেন তা রাষ্ট্রের জন্য কলঙ্ক। বিচার বিভাগের জন্য কলঙ্ক। এ ধরনের আচরণ মেনে নেওয়া যায় না।
আদালতে পিপির পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফিদা এম কামাল, সুপ্রিম কোর্ট বার সভাপতি অ্যাডভোকেট মোমতাজ উদ্দিন ফকির, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা, সুপ্রিম কোর্ট বার সম্পাদক আব্দুন নূর দুলাল, অ্যাডভোকেট নাহিদ সুলতানা যুথি, অ্যাডভোকেট রবিউল আলম বুদু ও অ্যাডভোকেট আবুল হোসেন।
আদালত পিরোজপুরের পিপিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘আপনি কোনো সাধারণ আইনজীবী নন। আপনি পিরোজপুরের পিপি, আইনজীবী নেতা। আপনারা যদি বিচারককে, আদালতকে সম্মান না করেন তাহলে তো সাধারণ মানুষ সম্মান করবে না। আর যদি আদালতের প্রতি, বিচার বিভাগের প্রতি মানুষের আস্থা উঠে যায়, তাহলে তো কেউ বাঁচবেন না। আমরা যদি আপনার আচরণ অ্যালাউ করি তাহলে সাধারণ মানুষের মাঝে কী ম্যাসেজ যাবে? বিচারকের সঙ্গে আপনার এই আচরণের কারণে যে ডেমেজ হয়েছে, তার খেসারত দিতে হবে। আপনার আচরণের কথা গণমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। এতে বিচার বিভাগের অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। আপনারও তো অনেক ক্ষতি হয়ে গেছে। এটা তো আপনার জীবনের বড় দুর্ঘটনা।’
আদালত বলেন, ‘আদালত শক্তি প্রদর্শনের জায়গা নয়। এখানে যত বিনয়ী হবেন তত বড় হতে পারবেন। এখন যদি আপনাকে আমরা ৬ মাসের জন্য আইনপেশা থেকে বিরত থাকার আদেশ দেই তখন আপনার কী হবে? উপস্থিত সিনিয়র আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, আমরা তার পক্ষ হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। ভবিষ্যতে এ ধরনের ঘটনা আর ঘটবে না।’
এ পর্যায়ে আদালত পিপিকে ডায়াসের সামনে ডাকেন। তখন পিপি বলেন, ‘আমি নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। ভবিষ্যতে আর এ ধরনের আচরণ করব না। পরে আদালত তাকে সতর্ক করে ক্ষমা করে দেন।’
গত ১৭ অক্টোবর পিরোজপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর মো. নোমানকে হুমকি ও তার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণের ঘটনায় পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) খান মো. আলাউদ্দিনকে তলব করেন হাইকোর্ট। বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
গত ১৯ সেপ্টেম্বর পিরোজপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আবু জাফর মো. নোমান পিপির বিরুদ্ধে খারাপ আচরণের অভিযোগ এনে সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি দেন। পরে প্রধান বিচারপতি পিরোজপুরের চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের লিখিত অভিযোগ নিষ্পত্তির জন্য হাইকোর্টে পাঠিয়ে দেন।
-এসআর
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        