মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৯ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
চট্টগ্রামে সম্মিলিত খতমে নবুওয়ত পরিষদের মতবিনিময় সভা জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনানী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ খুলনায় হাতপাখার সংসদ সদস্য প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠক সার্বিক উন্নয়ন ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই: হাফিজ ফখরুল ইসলাম ফরিদপুরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর প্রচারণার গেট ও ব্যানার ভাঙচুর  জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে: এ টি এম মাছুম জামায়াত আমিরের আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন যিনি খালেদা জিয়াসহ ৯ নারী পেলেন বিএনপির মনোনয়ন ২৩৭ আসনে বিএনপির ধানের শীষ পেলেন যারা নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলায় মতিউর রহমান আকন্দ নিন্দা

দিনাজপুরে ঐতিহাসিক সুরা মসজিদ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: দিনাজপুর জেলার ঘোড়াঘাট উপজেলায় অবস্থিত ঐতিহাসিক সুরা মসজিদ। এটি উপজেলা সদর থেকে ছয় কিলোমিটার দূরে সুরা নামক স্থানে অবস্থিত।

সুলতানি আমলের ঐতিহাসিক মসজিদগুলোর মধ্যে সুরা মসজিদ অন্যতম। মসজিদের নকশা, নির্মাণকাজে পাথর ও পোড়ামাটির ব্যবহার ইত্যাদি বিবেচনায় এটি অন্যান্য মসজিদের তুলনায় ব্যতিক্রম।

মোগল ও সুলতানি আমলের অন্য মসজিদের মতো এই মসজিদও উঁচু চত্বরের ওপর নির্মিত। সুরা মসজিদ এক গম্বুজবিশিষ্ট ও বর্গাকার। এর সম্মুখভাগে একটি বারান্দা আছে। পূর্ব পাশ থেকে কয়েক ধাপ সিঁড়ি চত্বর পর্যন্ত উঠে গেছে।

উন্মুক্ত চত্বরটির চারপাশ পুরু প্রাচীর দ্বারা পরিবেষ্টিত ছিল। বর্তমানে স্থাপনাটির ভিত পর্যন্তই প্রাচীর আছে। তবে পূর্বদিকের প্রবেশদ্বারের উচ্চতা থেকে অনুমিত হয়, মসজিদটিকে বাইরের শব্দ ও কোলাহল থেকে মুক্ত রাখতে বেষ্টন-প্রাচীরগুলোও যথেষ্ট উঁচু করে নির্মাণ করা হয়েছিল, যা সাধারণত দেখা যায় না।

মসজিদে একটি বর্গাকার প্রার্থনা কক্ষ আছে, যার প্রত্যেক পাশের দৈর্ঘ্য ৪.৯ মিটার। সব কোণে আছে অষ্টভুজ স্তম্ভ, মোট স্তম্ভের সংখ্যা ছয়। পূর্ব দিকে তিনটি এবং উত্তর ও দক্ষিণ দিকে একটি করে খিলানবিশিষ্ট প্রবেশপথ আছে। পশ্চিম দিকে আছে তিনটি কারুকাজখচিত মিহরাব। প্রার্থনা কক্ষটি একটি গোলার্ধ আকৃতির গম্বুজ দ্বারা আচ্ছাদিত।

মসজিদের বারান্দায় তিনটি গম্বুজ। এই গম্বুজগুলো পেন্ডেন্টিভ পদ্ধতিতে স্থাপিত। ছোট সোনা মসজিদের সঙ্গে এই গম্বুজগুলোর ঘনিষ্ঠ সাদৃশ্য আছে। মসজিদের বহিরাংশে গোলাপ ও অন্যান্য লতাপাতার নকশাখচিত পোড়ামাটির কারুকাজ আছে। জ্যামিতিক আকৃতির কিছু নকশাও দেখতে পাওয়া যায়।

ভেতরের মিহরাবগুলো ছিল সম্পূর্ণ পাথরের তৈরি। মধ্যবর্তী প্রধান মিহরাবে সূক্ষ্ম কারুকাজ দৃষ্টিগোচর হয়। নির্মাণশৈলীর ভিত্তিতে আহমদ হাসান দানী মসজিদটিকে হোসেন শাহী আমলের বলে মনে করেন। সম্প্রতি সুরা মসজিদ থেকে কয়েক মাইল দূরে চম্পাতলী নামক স্থানে আলাউদ্দীন হোসেন শাহের আমলের একটি শিলালিপি আবিষ্কৃত হয়েছে।

তাতে ৯১০ হিজরি মোতাবেক ১৫০৪ খ্রিস্টাব্দ উল্লেখ আছে। এতে একটি মসজিদ নির্মাণের উল্লেখ রয়েছে। যদি ধরে নেওয়া হয় যে এই লিপিটির সঙ্গে সুরা মসজিদের সম্পর্ক আছে, তাহলে মসজিদটির নির্মাণকাল ১৫০৪ খ্রিস্টাব্দ বলে ধারণা করা যায়। অন্যদিকে মসজিদ নিয়ে নানা উপাখ্যান ছড়িয়ে আছে স্থানীয়দের মধ্যে। যেমন এটা জিনদের তৈরি বলে এর নাম সুরা মসজিদ। কেউ বলেন, এর নাম ছিল সুজা মসজিদ। কেননা শাহ সুজা মসজিদটি নির্মাণ করেছিলেন।

প্রাচীন এই মসজিদ দেখতে প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ আসে। স্থানীয়দের আশা, মসজিদটি সংস্কার ও পরিকল্পিত উদ্যোগ গ্রহণ করা হলে পর্যটন খাতে মসজিদটি বিশেষ অবদান রাখতে পারবে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ