শুক্রবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৫ ।। ৭ কার্তিক ১৪৩২ ।। ২ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
১৬ মাসে কোরআনের হাফেজ কক্সবাজারের ওবায়দুল করিম আমরা কোরআনকে জাতীয় সংসদে নিয়ে যেতে চাই: অধ্যাপক মুজিবুর রহমান ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরে শনিবার বিক্ষোভ করবে জামায়াত  প্রশাসনকে দ্রুততার সাথে বস্তুনিষ্ঠ ব্যবস্থা নিতে হবে: ইসলামী আন্দোলন আন্তর্জাতিক খতমে নবুওয়ত মহাসম্মেলন সফল করার লক্ষ্যে মানিকগঞ্জ জেলায় মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত  যারা আমাকে অপহরণ করেছে তাদের বাংলাদেশি মনে হয়নি জীবন দিলেও যদি চরিত্র না বদলায় তাহলে ভাগ্যও বদলাবে না: শায়খে চরমোনাই শ্রীমঙ্গলে বেওয়ারিশ কুকুরের আতঙ্ক: এক ঘণ্টায় তিন শিশু আহত ‘দুঃখজনক হলো ইসলামি অঙ্গন থেকে শক্তিশালী মিডিয়া গড়ার উদ্যোক্তা আমরা পাইনি’ ২৪ এর লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এখন পর্যন্ত পূরণ হয়নি: সারজিস

নাশিদ শিল্পী মাহফুজের চলে যাওয়ার একবছর

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।কাউসার লাবীব।।

নাশিদ শিল্পী মাহফুজুল আলমের চলে যাওয়ার একবছর পূর্ণ হলো আজ। মুকুলেই চলে গিয়েছিলেন তিনি। অনেকটা না বলেই চলে গিয়েছিলেন। ক্লান্ত হৃদয় নিয়ে চলে গিয়েছিলেন।

আজ (২০ জুলাই) বুধবার। কিন্তু গত বছর ২০ জুলাই ছিল মঙ্গলবার। কোরবানির ঈদের মাত্র দু’দিন বাকি। সকালের সূর্য অস্তিত্বের জানান দিয়েছে মাত্র। ঘড়ির কাটায় সকাল ৮টা। ঠিক তখন না ফেরার দেশে পাড়ি জমান প্রতিভাবান এ তরুণ। তার মৃত্যুতে দেশের সংস্কৃতিমনাদের হৃদয়ে যে মেঘের ছায়া নেমে এসেছিল তা এখনো সরেনি।

নরসিংদীর ছেলে নাশিদ শিল্পী মাহফুজুল আলম। ছোটবেলা থেকে ইসলামী সঙ্গীত গেয়ে জনপ্রিয় এ শিল্পী ২০১০ থেকে জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতিক সংগঠন কলরবের শিল্পী হয়ে নিয়মিত প্রোগ্রাম করেন দেশজুড়ে। সময়ের ব্যবধানে দেশের জনপ্রিয় রেকর্ড লেবেল, হলি টিউন-এর সাউন্ড ডিজাইনার হিসেবে কাজ শুরু করেন মাহফুজ। ‘নাশিদ পরিবেশন ও সাউন্ড ডিজাইন’ দু’টি অঙ্গনে বেশ দক্ষতার স্বাক্ষর রাখছিলেন তিনি।

পার্থিব জগতের ছোট্ট সফরে ২০টিরও বেশি একক নাশিদ এবং ৩০টিরও বেশি কোরাস নাশিদ উপহার দিয়েছিলেন তিনি। ২০১০ সালে কলরবে কাজ শুরু করে ‘মায়ের কথা’, ‘তোমার বন্ধু উপর তলায় বাসা’, ‘শয়নে স্বপনে মা’সহ বেশ কয়েকটি নাশিদ রিলিজ করেন সেই সময়ের এই শিশুশিল্পী। যেগুলো ইসলামী সঙ্গীতপ্রেমীদের মনে এখনো গেঁথে আছে।

প্রতি ঈদেই নতুন কিছু উপহার দেয়ার চেষ্টা করে জাতীয় শিশু-কিশোর সাংস্কৃতি সংগঠন কলরব। ২০২১ সালের  কোরবানির ঈদেও এর ব্যতিক্রম হয়নি। নতুন কিছু উপহার দিতে কলরব টিম যায় পুবাইলে। মাহফুজও ছিলেন সে টিমে। সেখানে যাওয়ার পর সহকর্মীদের জানান, আমার কিছুটা জ্বর জ্বর লাগছে। জ্বরের তাপ নিয়েই সঙ্গীত প্রেমীদের জন্য ভাল কিছু উপহার দেয়ার কাজ শেষ করে সবার সঙ্গে ফিরে আসেন তিনি।

ক্রমেই বাড়তে থাকে তার জ্বর। স্নেহের মাহফুজুল আলমের সুস্থতা কামনা করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট দেন কলরবের সিনিয়র নাশিদ শিল্পী মুহাম্মদ বদরুজ্জামান। পোস্টে প্রিয় শিল্পীর সুস্থতা কামনা করেন মাহফুজুল আলমের ভক্ত ও শুভাকাংক্ষিরা।

দু’দিন পরেই ঈদ। গায়ে কিছুটা জ্বর। জ্বর নিয়েই গ্রামের বাড়ি নরসিংদীতে পরিবারের সঙ্গে ঈদ করতে ছুটে যান মাহফুজ। বাড়ি যাওয়ার পর জ্বর আরো বাড়তে থাকে। ভর্তি করানো হয় নরসিংদীর একটি হাসপাতালে। ডাক্তারের ভাষায়, ‘তার ডেঙ্গু জ্বর।’ সঙ্গে ডায়াবেটিস ও কিডনি প্রবলেম। শারীরিক অবস্থা ধীরে ধীরে অবনতির দিকে এগুতে থাকলে তাকে নিয়ে যাওয়া হয় নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্র (আইসিইউ)তে।

পরিবারসহ সবার আশা ছিল মাহফুজ আবার সুস্থ হয়ে উঠবে, গাইবে প্রাণ খুলে প্রিয়নবীর শানে। মাহফুজ হাসপাতালের বেডে। শেষ বারের মতো দেখে নেন ভালবাসার পৃথিবীকে, আশপাশের প্রিয় মানুষদেরকে। মৃত্যুর কিছুটা আগ মুহূর্তে পাশে থাকা মা’কে ভাঙ্গা ভাঙ্গা কণ্ঠে মাহফুজ বলেন, ‘মা তুমি আমারে কালেমা পড়াও’। মা ছেলে দু’জনেই কালিমা পড়েন। কিন্তু মায়ের মনে বিশ্বাস ছিল, আমার নাড়ি ছেড়া ধন আমার কোলে সুস্থ হয়ে ঠিকই আবার ফিরে আসবে। কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি। বছর খানেক আগে বাবা হারা মাহফুজ ক্লান্ত হৃদয় নিয়ে চলে গেলেন প্রিয় বাবার কাছে। আসন্ন ঈদ বিষাদে পরিণত হয় দুঃখিনী মায়ের।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ