রবিবার, ১৯ মে ২০২৪ ।। ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১ ।। ১১ জিলকদ ১৪৪৫


উন্নয়নশীল দেশ গড়তে বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উন্নতি প্রয়োজন

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

উসমান বিন আব্দুল আলিম।।।

বাংলাদেশ এখন উন্নয়নশীল দেশ। সেই সাথে বিশ্বের জনবহুল ও ঘনবসতিপূর্ণ দেশ সমূহের মধ্যে অন্যতম একটি দেশ। যা গর্বের বিষয় না হলেও বর্তমানে তা দুঃখজনক বিষয় হয়ে উঠেছে।

আর সেজন্যই আমাদের দেশর শহর গুলোকে পরিবেশবান্ধব করতে ও বায়ুদূষণ মুক্ত শহর গড়তে নীতিনির্ধারক মহল বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগ নিচ্ছেন। সময় অসময় বিভিন্ন কার্যক্রম হাতে নিচ্ছেন। নির্দিষ্ট লোক ঠিক রাখছেন। শহরগুলোকে পরিষ্কার-পরিছন্নতা রাখতে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছেন। বলতে গেলে এক্ষেত্রে ওনারা বদ্ধপরিকর।

এতকিছুর পরও অনেক সময়, খবরের কাগজে বা সংবাদমাধ্যমে,যত্রতত্র প্লাস্টিক আবর্জনা ও বিভিন্ন প্রকারের বর্জ্য ফেলার কারণে শহরগুলোতে জলাবদ্ধতা, বায়ু দূষণ ও পরিবেশ বিনষ্টের খবর হরহামেশাই শুনতে পাই এবং এতে জনগণের যে, ভোগান্তির শেষ থাকেনা তাও আমরা সুস্পষ্টভাবে দেখতে পাই। আর এই সমস্যার জন্য আমরা জনগণরা শুধু দায়িত্বশীলদের উপর দায়ভার চাপিয়ে নিজেরা দায় এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি।

প্রকৃতপক্ষে, এই অব্যবস্থাপনা ,বায়ু দূষণ ও জলাবদ্ধতার জন্য কি শুধুই নির্দিষ্ট কিছু লোক দায়ী নাকি আমরা সাধারণ নাগরিকরাও এর জন্য দায়ী? এটি নিয়ে প্রশ্ন থেকে যায়। কেননা, আপনাকে মনে রাখতে হবে যে, একটি শহর গুটিকয়েক লোক দ্বারা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ,বায়ু দূষণ মুক্ত ও পরিবেশবান্ধব শহর গড়া কস্মিনকালেও সম্ভব নয়। তবে এটা ঠিক যে, এরজন্য দায়িত্বশীলদের অবহেলা ,কাজে অসতর্কতা ,সঠিক তদারকির অভাবসহ বিভিন্ন অভিযোগ আমরা করতে পারি।

কিন্তু সাথে এটাও মনে রাখতে হবে যে, এখানে আমাদেরও কয়েকটি বদ অভ্যাস, অবহেলা, অসচেতনতা ও অসতর্কতা রয়েছে। যা আমাদের নির্দ্বিধায় ও নিঃসংকোচে স্বীকার করতে হবে।

তাই বলতে গেলে, একটি দেশ বা একটি শহরকে জলাবদ্ধতা ,পরিবেশ বান্ধব ও দূষণমুক্ত গড়তে দায়িত্বশীলদের যেমন সঠিক কার্যক্রম, সবকিছুর সঠিকভাবে প্রয়োগ, জায়গায় জায়গায় সচেতনতামূলক পদক্ষেপ গ্রহণ , আবর্জনা ফেলার নির্দিষ্ট জায়গা ঠিক করা, প্রয়োজনে নিয়ম ভঙ্গকারীদের জন্য শাস্তির ব্যবস্থা করাসহ ইত্যাদী বিষয় জরুরি তেমনি আমাদের নাগরিকদের জন্যও যত্রতত্র ময়লা না ফেলে নির্দিষ্ট জায়গায় ময়লা ফেলা, নিজেদের আঙ্গিনা নিজেরা পরিষ্কার করে অথবা নিজেদের সকল আবর্জনা সিটি কর্পোরেশনের কিংবা পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের দেয়া নির্দিষ্ট বক্সে ময়লা ফেলা।

সতর্কতা ও সচেতনতাসহ অন্যান্য জিনিস সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করাও ঠিক একান্ত কাম্য। আমাদেরকে মনে রাখতে হবে যে, কোন কাজের পরিপূর্ণ ফলাফল পেতে কখনোই একা বা গুটিকয়েক লোক দ্বারা সম্ভব নয় বরং এর জন্য সকলের ঐক্য ও প্রচেষ্টা থাকতে হবে। আর তখনই ওই কাজের বা এই উদ্যোগের সুফল পাওয়া যাবে। এজন্যেই এক বড় জ্ঞানী বলেছেন, একা একা আমরা সামান্যই করতে পারি, কিন্তু একত্রে আমরা অনেক কিছু সম্ভব করতে পারি।

তাই আসুন , আমরা আমাদের বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে, বায়ু দূষণ মুক্ত, জলাবদ্ধতা মুক্ত, আবর্জনা মুক্ত শহর গড়তে নাগরিক সচেতনতা অবলম্বন করি।

যত্রতত্র ময়লা না ফেলে, দায়িত্বশীলদের সহযোগিতা করে, হাতে হাত রেখে সবাই ঐক্যবদ্ধ হই এবং এই বিষয়ে সবাই বদ্ধপরিকর হই যে, আমরাই আমাদের বাংলাদেশকে সোনার বাংলাদেশ রূপে গড়ে তুলবো। বিশ্বের দরবারে বাংলাদেশকে একটি পরিবেশবান্ধব, দূষণমুক্ত ও আবর্জনা মুক্ত দেশ হিসেবে ফুটিয়ে তুলবো। সচেতনতা ও সতর্কতা অবলম্বন করি, পরিবেশবান্ধব সুন্দর দেশ ও সমাজ গড়ি। স্লোগানটি বাস্তব রূপে দেখা যাবে এটাই প্রত্যাশা।

লেখক: শিক্ষক‌‌ ও কলামিস্ট

-এটি


সম্পর্কিত খবর


সর্বশেষ সংবাদ