বুধবার, ২৭ আগস্ট ২০২৫ ।। ১১ ভাদ্র ১৪৩২ ।। ৪ রবিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
মৃত ব্যবসায়ীর কবরে গিয়ে ক্ষমা চাইল জাপানি পুলিশ ও কৌঁসুলিরা গণ-অভ্যুত্থানে আহতদের চিকিৎসা দিতে চাওয়ায় ৫ ডাক্তারকে বদলি করা হয়েছিল  গাজায় যুদ্ধবিরতির দাবিতে ইসরাইলে বিক্ষোভ, সড়ক অবরোধ কোনো অদৃশ্য শক্তি সরকারকে প্রভাবিত করছে : পীর সাহেব চরমোনাই গুলশানে কবি আল মাহমুদ পাঠাগার উদ্বোধন চাঁদাবাজি নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থানের প্রধান বাধা: ইসলামী আন্দোলন ডাকসু নির্বাচনের প্রচারণার প্রথম দিনেই হিজাব পরিহিত নারী প্রার্থীদের প্রতি আক্রোশ বিএনপি নেতা ফজলুর রহমানের পদ ৩ মাসের জন্য স্থগিত বিএনপির শোকজের দীর্ঘ জবাব দিলেন ফজলুর রহমান জুলাই শহীদ পরিবারে সরকারি অনুদান বণ্টনে নতুন বিধিমালা জারি

কেরালায় ছাত্র-ছাত্রীদের অভিন্ন ইউনিফর্ম: মুসলমানদের ক্ষোভ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: একটি পুরোনো প্রথা ভেঙে নতুন প্রথার সাক্ষী হতে চলেছে দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কেরালাবাসী। সম্প্রতি কেরালার একটি সরকারী বিদ্যালয় অনেকদিন ধরে চলে আসা মেয়েদের ঐতিহ্যবাহী স্কুল ইউনিফর্ম এর বদলে নতুন ইউনিফর্মের অনুমতি দিয়ে একটি নতুন প্রথার শুরু করেছে।

আজ বুধবার(২২ ডিসেম্বর) বিবিসির একটি প্রতিবেদনে এই বিতর্কের ব্যাখ্যা দিয়েছেন দিল্লী থেকে গীতা পান্ডে এবং কেরালা থেকে আশরাফ পাদান্না।

গতানুগতিক ভাবে চলে আসা লম্বা টানিক, কোর্ট এবং ঢিলেঢালা পায়জামা, মাথায় স্কার্ফ-এর বদলে মেয়েরাও এখন ছেলেদের মতন পড়তে পারবে প্যান্ট ও শার্ট।

নতুন ইউনিফর্মের প্রসঙ্গে বালুচরি শহরের সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ১৭ বছর বয়সী একাদশ শ্রেনির শিক্ষার্থী শৃঙ্গী সিকে জানান বুধবার তিনি যখন বাসস্টপে দাঁড়িয়ে বাসের জন্য অপেক্ষা করছিলেন,তখন একজন মহিলা তার ইউনিফর্মের প্রশংসা করেন, এতে শৃঙ্গী খুবই আনন্দিত ছিলেন।

‘মহিলাটি আমাকে বলেন আমাকে দেখতে খুবই আকর্ষনীয় আর আধুনিক লাগছিলো, এই কথা আমার শুনে আমার অনেক ভালো লাগছিল।’

কিন্তু শৃঙ্গীকে স্কুলে পৌঁছালে যেখানে আগের থেকেই বিক্ষোভকারী এবং কয়েকডজন পুলিশ ছিলো, তারা এই পোশাকে তাকে দেখে অসন্তুষ্ট হয়েছিলো বলে তার মনে হয়েছিলো।

স্কুলের প্রিন্সিপাল ইন্দু বলেন তার মতে, দ্বাদশ শ্রেনির শিক্ষার্থীদেরও পরিবর্তিত এই ইউনিফর্ম পড়ার অনুমতি দেওা উচিত। তিনি আরও বলেন তাদের কথায় যুক্তি আছে।

কেরালার আবহাওয়া যেহেতু আর্দ্র বা স্যাঁতসেঁতে,এই পরিবেশে কোর্ট পড়াটা কষ্টকর। আর যেহেতু, স্কুলের বাইরে সবাই মোটামুটি জিন্স,টপ্স পড়েই সেখানে স্কুলে পড়ে আসাটাও এমন কোন খারাপ বিষয় না বলে তিনি মনে করেন।

হাতে গোনা কিছু পরিবার ছাড়া প্রায় সবাই এই নতুন নিয়মকে সাধুবাদ জানিয়েছে। বাঁকিরা যদি ইচ্ছে হয় ইউনিফর্ম হিসেবে ফুলহাতা লম্বা শার্ট, কোর্ট এবং মাথায় স্কার্ফ ব্যবহার করতে পারে বলে জানিয়েছেন প্রিন্সিপাল। প্রিন্সিপাল ইন্দু বিবিসি-কে নতুন ইউনিফর্মে শিক্ষার্থীদের তোলা একটি ছবি পাথিয়েছেন,ছবিতে সবাইকে খুব হাস্যোজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত লাগছে।

শৃঙ্গী জানান, ‘আমাদের স্কুল থেকেই এই নতুন নিয়মের শুরু হয়েছে। এই বিপ্লবের অংশ হতে পেরে আমি গর্ববোধ করছি।

ইউনিফর্ম বদলে সরকারের অনেক বড় সমর্থন রয়েছে। প্রদেশটির শিক্ষামন্ত্রী ভি শিভাঙ্কুট্টি এই উদ্যোগে সবাইকে এগিয়ে এসে সচেতন হতে ও লিঙ্গবৈষম্যের কোটরে আঘাত করতে আহ্বান জানিয়েছেন।

কিন্তু এই নতুন ইউনিফর্মকে ভালো চোখে দেখছেন না কিছু রক্ষনশীল মুসলিম পরিবার। তাদের চোখে এটি এক প্রকার জবরদস্তি। তাদের সন্তানদের নতুন পোশাক পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে বলে তাদের ধারণা।

মুসলিম সমন্বয় কমিটির একজন সদস্য মিজাহিদ বালুচরি বলেন, ‘এই সিদ্ধান্ত পিটিএ এর সাধারণ কর্মকর্তাদের অনুপস্থিতিতে নেওয়া হয়েছে,সুতরাং এর কোন ভিত্তি নেই।

মেয়েদেরকে ছেলেদের মতন পোশাক পড়তে বাধ্য করা হচ্ছে যা কিনা দৃষ্টিকটু, সাথে পুনরায় নতুন পোশাক তৈরীর খরচ নিম্নবিত্ত পরিবারগুলোর জন্য চাপ এরও বটে। তার ধারণা এই নতুন পোশাক কমিউনিস্ট সরকারের ষড়যন্ত্র,যা কিনা পরবর্তীতে শিক্ষার্থীদের নাস্তিকতার দিকে ঠেলে দেবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আমরা আমাদের বিশ্বাসের সাথে আপোষ করি না। ছেলে মেয়েদের মধ্যে লিঙ্গ বৈষম্য দূর করা মানে তাদেরকে অবাধ যৌনতায় দীক্ষিত করা। এরকম হলে শীঘ্রই তারা অবাদ যৌনতা বৈধ করতে চাইবে।’

অন্যান্য মুসলিম জনগোষ্ঠীরও এরকম মতবাদগুলি কেরালা,ভারতসহ আশেপাশের দেশগুলোতে তীব্র সমালোচনার জন্ম দিয়েছে। সবাই মনে করছে এটি মেয়েদের অগ্রগতি ঠেকাতে তাদের উপর গোঁড়া জনগোষ্ঠীর চাপিয়ে দেওয়া আর একটি বিধিনিষেধ।

কেরালাকে ভারতের সব থেকে প্রগতিশীল এবং শিক্ষিত রাজ্য বলা হয়। এইখানে স্বাক্ষরতার হার শতভাগ। শতকরা শিক্ষার্থীর ৪৮.৯৬%। সমালোচকেরা বলেছেন ভারতের বাকি অংশের মত এই অংশেও মানুষের শেকড়ের সাথে নারী-বিদ্বেষ জড়িত,যা এই অংশকে আরও পুরুষতান্ত্রিক করে তুলেছে।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ