মঙ্গলবার, ১৯ আগস্ট ২০২৫ ।। ৪ ভাদ্র ১৪৩২ ।। ২৫ সফর ১৪৪৭

শিরোনাম :
বিএনপি কি ইসলামপন্থীদের আস্থা হারাচ্ছে?  নোয়াখালীতে জিপিএ-৫ প্রাপ্ত ৩০০ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা গণতন্ত্রকামী দলগুলোর মধ্যে দূরত্ব তৈরি হলে ফ্যাসিস্ট পুনর্বাসন হবে: তারেক রহমান ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী ৬৫৮ জন, হল সংসদে ১ হাজার ৪২৭ মাইলস্টোনের তিন শিক্ষক জাতির কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন জুমার নামাজে না গেলে দুই বছরের দণ্ড হতে পারে  রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য নির্বাচন জরুরি: মির্জা ফখরুল সৌদি আরবে নতুন হজ কাউন্সেলর কামরুল ইসলাম তাওয়াফের সময় হাজরে আসওয়াদের সামনে দাঁড়িয়ে না থাকার নির্দেশ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আস সুন্নাহ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ১০০০ বৃক্ষরোপণ

কাবিননামার যে কলাম সম্পর্কে সবার জানা জরুরি!

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম ডেস্ক: যারা বিয়ে করবেন বলে প্রস্তুতি নিচ্ছেন, তাদের জন্য কাবিননামার ১৮ নং কলাম সম্পর্কে পরিপূর্ণ অবগত হওয়া এবং এ ব্যাপারে শরয়ী সমাধান জেনে নেওয়া খুবই জরুরি একটি বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ নাসির-তামিমার বিয়েসহ এ ধরনের যত অনৈতিক কর্মকাণ্ড সংঘটিত হয়, তার মূল সমস্যা তো চারিত্রিক অবক্ষয় তবে এমন ঘটনা সংঘটিত হওয়ার সুযোগ পায় কাবিননামার ১৮ নং কলামের ভিত্তিতে৷ একজনের স্ত্রী অন্যজনের সাথে চলে গিয়ে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হওয়া, প্রবাসীর স্ত্রী স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা-পয়সা নিয়ে অন্যের সাথে পালিয়ে গিয়ে বিবাহ করা- এমন ঘটনাগুলোর সমাধানে মূল বিষয় হয়ে দাঁড়ায় কাবিননামার ১৮ নং কলাম৷

যদি নিজের বিয়ে করা স্ত্রীকে অন্যের হাতে তুলে দিতে না চান, তাহলে ১৮ নং কলামের ব্যাপারে বিবাহের আগেই অবগত হন৷ ১৮ নং কলামে লেখা আছে ‘স্বামী স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা অর্পণ করিয়াছে কি না? করিয়া থাকিলে কি শর্তে?’

কলামটি দেখে আপনি হয়তো মনে মনে ভাবছেন, এই কলামে স্পষ্ট করে ‘না’ লেখে দেব, কিন্তু আপনি তা পারবেন না৷ এদেশের নিকাহ রেজিস্ট্রাররা আপনাকে এ কলামে ‘না’ লেখার সুযোগ দেবে না, তারা বলবে- রাষ্ট্রীয়ভাবে এ কলামে ‘না’ লেখার সুযোগ নেই৷ তার মানে এই কলামে আপনাকে ‘হ্যাঁ’ লেখতেই হবে, তথা আপনার স্ত্রীকে আপনাকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা অর্পণ করতেই হবে৷

এখন কি করবেন? ‘হ্যাঁ’ লেখে স্ত্রীকে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দিয়ে দেবেন? না, শুধু ‘হ্যাঁ’ লেখে দিয়ে তাদেরকে এ সুযোগ প্রদান করা উচিত হবে না৷ কারণ, তাদের বুঝ-জ্ঞানে যথেষ্ট কমতি রয়েছে৷ যেকোনো ন্যূনতম বিষয়ে বা অন্যের প্রলোভনে এ সুযোগ ব্যবহার করে তালাক প্রদানের মাধ্যমে সোনার সংসার ভেঙ্গে নিজের ও নিজের পরিবারের বিরাট ক্ষতি করে বসবে৷

এক্ষেত্রে যেহেতু শরীয়তে তাফবীযে তালাকের সুযোগ রয়েছে, তার উপর ভিত্তি করে আপনি কিছু নির্ভরযোগ্য শর্তযুক্ত করে তালাক প্রদানের ক্ষমতা দিয়ে দিতে পারেন৷ যেমন ‘আমি যদি তার ভরণপোষণ, দায়দায়িত্ব ও যথাযোগ্য সার্বিক চাহিদা পূরণে অক্ষম হই, তাহলে সে উভয় পরিবারের মুরব্বীদের সালিশের মাধ্যমে এক তালাক প্রদানের অধিকার রাখবে৷’

লেখাটিতে লক্ষ্য করলে দেখবেন, এখানে মৌলিকভাবে তিনটি কথা উল্লেখ রয়েছে, যা আপনার স্ত্রী আপনাকে তালাক প্রদানের ক্ষেত্রে প্রমাণিত করতে হবে: এক. আপনার অক্ষমতা৷ অর্থাৎ, আপনার অক্ষমতা প্রমাণ করা বিহীন সে কোনভাবেই আপনাকে এ তালাক প্রদান করতে পারবে না৷ দুই. উভয় পরিবারের মুরুব্বিদের সালিশী সিদ্ধান্ত৷ আপনার স্ত্রী যে কারো কোন লোভে পরে উভয় পরিবারের সিদ্ধান্ত বিহীন এককভাবে আপনাকে তালাক প্রদান করতে পারবে না৷ শুধু তার নিজ পরিবারের সিদ্ধান্তেও পারবে না৷ সে তালাক প্রদান করতে হলে উভয় পরিবারের মুরুব্বীদের সালিশি সিদ্ধান্ত থাকতে হবে৷ উভয় পরিবারের মুরুব্বীদের সিদ্ধান্তে যদি কোন তালাক সংঘটিত হয়, তাহলে তা শতভাগ যথাযোগ্য হওয়ার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে৷

তিন. আপনার স্ত্রী শুধু ১ তালাক প্রদানের ক্ষমতা রাখবে, তার বেশি প্রদান করতে পারবে না৷ এক্ষেত্রে সুবিধা হল, এ দেশের সিংহভাগ তালাক সংঘটিত হওয়ার পরে স্ত্রী তার স্বামীর কাছে পুনরায় ফিরে যেতে চায়৷ কিন্তু তালাক যদি তিন তালাক হয়ে থাকে তাহলে তো আর ফিরে যাওয়ার সুযোগ থাকে না, তবে তালাক যদি এক তালাক হয়ে থাকে তাহলে পুনরায় আবার ফিরে যাওয়ার সুযোগ থাকে৷

অনেকে ভেবে থাকবেন- এক তালাক প্রদান করলে তালাক হয় না, এটি সম্পূর্ণ ভুল৷ বাস্তবেই যদি স্ত্রী তার স্বামীকে তালাক প্রদান করে চলে যাওয়ার যথাযোগ্য কারন থেকে থাকে, তাহলে সে এক তালাক প্রদানের মাধ্যমেই তার এই বৈবাহিক সম্পর্ককে সম্পূর্ণরূপে চিহ্ন করে চলে যেতে পারবে৷ এতে তার স্বামী বা স্বামীর পরিবারের কেউই তাকে আটকে রাখার কোনো অধিকার পাবে না৷

১৮ নং কলামে আমার উল্লিখিত লেখাটিই লেখতে হবে, বিষয়টি ঠিক তা নয়৷ আপনি কি লেখবেন তা আপনার এলাকার ওলামায়ে কেরামদের সাথে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নিয়ে নেবেন৷ তবে যাই লেখেন, বিয়ের আগেই ১৮ নং কলামের ব্যাপারে পরিপূর্ণ অবগত হওয়ার চেষ্টা করেন৷

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ