শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ।। ১৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
‘যথেষ্ট সফলতা আছে, তবে ১৫ বছরের জঞ্জাল ১৫ মাসে পরিষ্কার করা যায় না’ ব্যাংকগুলোতে ক্যাশ নেই, চরম ভোগান্তিতে গাজার মানুষ বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের বিরুদ্ধে ইসরাইলে ব্যাপক বিক্ষোভ শ্রমিকবান্ধব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে : মাওঃ আব্দুল আউয়াল দেশের সর্ববৃহৎ সিরাত প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত ‘যারা ভোটের জন্য বেহেশতের টিকিটের কথা বলে বেড়ায় তাদের থেকে সাবধান’ ঝটিকা মিছিল করতে গিয়ে গ্রেপ্তার আ.লীগের তিন হাজার নেতাকর্মী ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে মহাসড়কে নামাজ আদায় নভেম্বর থেকে নতুন পোশাক পাচ্ছে মহানগর পুলিশ ‎কক্সবাজারে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল মসজিদের ইমামের

রমজান উপলক্ষে মহানবি সা. এর ঐতিহাসিক ভাষণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

মুফতি রফিকুল ইসলাম আল-মাদানী।।

প্রখ্যাত সাহাবি সালমান ফারসি (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) আমাদের পবিত্র রমজান মাসের গুরুত্ব ও মর্যাদা সম্পর্কে সুদীর্ঘ একটি ভাষণ উপস্থাপন করেন।

এতে তিনি বলেন, ‘হে লোকজন! তোমাদের কাছে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ ও পবিত্র মাস আগমন করেছে। এ মাসে একটি রাত আছে তা হাজার মাস অপেক্ষা শ্রেষ্ঠ। এ মাসের দিনে আল্লাহতায়ালা রোজা ফরজ করেছেন এবং রাতে নফল নামাজ দিয়েছেন। এ মাসে যারা কোনো নফল কাজ করবে সে অন্য মাসের ফরজ সমতুল্য বিনিময় এবং এ মাসের প্রতিটি ফরজ কাজে অন্য মাসের সত্তর গুণ ফরজ সমতুল্য বিনিময় লাভ করবে। এ মাস ধৈর্য ও সহনশীলতার মাস।

আর ধৈর্যের প্রতিফল হলো বেহেশত। এ মাস পরস্পর সাহায্য ও সহনশীলতার মাস। এ মাসে আল্লাহ মোমিন বান্দাদের রিজিক বৃদ্ধি করে দেন। এ মাসে যে একজন রোজাদারকে ইফতার করাবে তার সব গুনাহ আল্লাহ ক্ষমা করে দেবেন।

পরকালে তাকে আগুন থেকে মুক্তি দান করবেন এবং তাকে রোজাদারের সমতুল্য বিনিময় দান করবেন। অথচ ওই রোজাদারের বিনিময়ে কোনো কমতি হবে না। সাহাবিরা বলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ (সা.)! আমাদের সবাই ইফতার করানোর মতো সক্ষমতা রাখে না। উত্তরে মহানবী (সা.) বললেন, যে একজন রোজাদারকে একটি খেজুর, সামান্য পানি অথবা অল্প দুধের মাধ্যমে ইফতার করাবে আল্লাহতায়ালা তাকেও এ মহাবিনিময় দান করবেন।

এ মাসের প্রথম অংশ রহমত, মধ্যের অংশ ক্ষমা এবং শেষ অংশ আগুন থেকে মুক্তির জন্য বরাদ্দ। এ মাসে যারা কর্মচারীদের কাজ হালকা করে দেবে আল্লাহ তার পাপ মুছে দেবেন এবং দোজখ থেকে তাকে মুক্তি দান করবেন। অতএব তোমরা চারটি কাজ বেশি বেশি কর। দুটি কাজের মাধ্যমে আল্লাহকে সন্তুষ্ট করা যায়। লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ (আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই) এ সাক্ষ্য প্রদান করা এবং ক্ষমাপ্রার্থনা করা। আর দুটি কাজ এমন যা ছাড়া তোমাদের কোনো উপায় নেই।

তা হলো আল্লাহর কাছে বেহেশত চাওয়া এবং দোজখ থেকে মুক্তি চাওয়া। যে ব্যক্তি একজন রোজাদারকে পান করাবে আল্লাহতায়ালা তাকে আমার হাউসে কাউসার থেকে পান করাবেন, ফলে বেহেশতে প্রবেশ করা পর্যন্ত আর কখনো পিপাসা হবে না।’ ইবনে হিব্বান, ইবনে খুজাইমা, বায়হাকি ও আত তারগিব ওয়াত তারহিব। আজ গোটা দেশ করোনা মহামারীতে আচ্ছন্ন। সমগ্র জাতি দিশাহারা। অন্যায়-অনাচার ও জুলুম-নির্যাতন সমাজের অঙ্গ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ মুহূর্তে ক্ষমা ও মুক্তির মাস পবিত্র রমজান চলছে। আমরা সব ধরনের অন্যায়-পাপাচার ও দুর্নীতি ছেড়ে মহান প্রভুর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করি।

প্রত্যেকেই নিজেকে আদর্শ মানব হিসেবে গড়ার দৃপ্ত শপথ নিই। মহানবী (সা.)-এর উল্লিখিত বাণীর প্রতিটি বাক্য নিজের জীবনে বাস্তবায়নের চেষ্টা করি। হাকিমুল উম্মত আশরাফ আলী থানভি (রহ.) বলেন, ‘রোজা পালনের মধ্যে আমাদের ভাবনার মতো একটি সূক্ষ্ম বিষয় রয়েছে। রমজান মাসে আমরা আল্লাহর ভয়ে হালাল খাদ্য সাময়িকভাবে বর্জন করি সঙ্গে সঙ্গে আমাদের হিংসা, পরনিন্দা, অপবাদ প্রবণতা এবং পাপাচারও বর্জন করার প্রতিজ্ঞা করতে হবে।’

সাহাবি আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেন, ‘যে মিথ্যা বলা এবং অপকর্ম ও পাপাচার বর্জন করেনি তার পানাহার বর্জন আল্লাহর কাছে কোনো প্রয়োজন নেই।’ বুখারি। মহান প্রভু বলেন, ‘হে ইমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর, যেন তোমরা খোদাভীতি অর্জন করতে পার।’ সুরা আল বাকারাহ আয়াত ১৮৩।

লেখক: গবেষক, কলামিষ্ট ও মুহাদ্দিস ইসলামিক রিসার্চ সেন্টার বাংলাদেশ, বসুন্ধরা, ঢাকা।

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ