শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫ ।। ১৫ কার্তিক ১৪৩২ ।। ৯ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
৪০ সেকেন্ডের ঝটিকা মিছিল শেষে কারাগারে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ১২ নেতাকর্মী ‘যথেষ্ট সফলতা আছে, তবে ১৫ বছরের জঞ্জাল ১৫ মাসে পরিষ্কার করা যায় না’ ব্যাংকগুলোতে ক্যাশ নেই, চরম ভোগান্তিতে গাজার মানুষ বাধ্যতামূলক সেনা নিয়োগের বিরুদ্ধে ইসরাইলে ব্যাপক বিক্ষোভ শ্রমিকবান্ধব রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ইসলামী শক্তিকে ক্ষমতায় আনতে হবে : মাওঃ আব্দুল আউয়াল দেশের সর্ববৃহৎ সিরাত প্রতিযোগিতার গ্র্যান্ড ফিনালে অনুষ্ঠিত ‘যারা ভোটের জন্য বেহেশতের টিকিটের কথা বলে বেড়ায় তাদের থেকে সাবধান’ ঝটিকা মিছিল করতে গিয়ে গ্রেপ্তার আ.লীগের তিন হাজার নেতাকর্মী ভৈরবকে জেলা ঘোষণার দাবিতে মহাসড়কে নামাজ আদায় নভেম্বর থেকে নতুন পোশাক পাচ্ছে মহানগর পুলিশ

যে চার কারণে পূণ্য থেকে বঞ্চিত হয় রোজাদার

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

।।রাবেতা হক।।

চলছে বছরের শ্রেষ্ঠ মাস পবিত্র মাহে রমযান। মর্যাদাপূর্ণ এই মাসে আল্লাহ তায়ালা তাঁর বান্দাদের জন্য রেখেছেন অসীম মর্তাবা ও আত্মশুদ্ধির ব্যবস্থা।

রমযান মাসে দিনের বেলা খাদ্য-দ্রব্য ও ইন্দ্রীয় তৃপ্তি থেকে দূরে থাকার মাধ্যমে রোজাদারের দমনশক্তি সুদৃঢ় হয়। রোজা মানুষকে উদার ও সহানুভূতিশীল হতে শেখায়। রোজা পাপ বর্জনের পরিবেশ সৃষ্টি করে। কারণ, বেশিরভাগ পাপ উদরপূর্তি ও ইন্দ্রীয় পরায়ণতা থেকেই জন্ম নেয়। রোজা এই দুই প্রবৃত্তিকে দমিয়ে রেখে সমাজে দুর্নীতি ও পাপ হ্রাস করে এবং খোদাভীরুতা বাড়ায়।

তাই রমজান হলো পুণ্য অর্জনের শ্রেষ্ঠ মৌসুম। দীর্ঘ এক মাসের রোজা, তারাবি, তাহাজ্জুদ, কোরআন তেলাওয়াত ও অন্যান্য নেক আমলের মাধ্যমে বান্দা মহান রাব্বুল আলামিনের নৈকট্য অর্জন করে এবং সব ধরণের গুনাহ থেকে বিরত থেকে আত্মার পরিশুদ্ধি লাভ করে।

এছাড়া সমাজে শান্তিপূর্ণভাবে সুখে-স্বাচ্ছন্দ্যে মিলেমিশে বসবাসের জন্য একজন মুমিনের মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, ভালোবাসা, সহানুভূতি, দানশীলতা, উদারতা প্রভৃতি মানবিক গুণগুলো থাকা দরকার। মাহে রমযানে রোজাদার সারা দিনের ক্লান্তি, অবসাদ ও কঠিন পরিশ্রমের মাধ্যমে সিয়াম সাধনা করে এসব উন্নত মানবিক গুণাবলি অর্জনে সক্ষম হয়।

তাই শুধু সিয়াম তথা দিনে উপোস এবং কিয়াম তথা রাতে তারাবি পড়াকে রোজা বলা হয় না। বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীন পাপ বর্জনের মাধ্যমে আত্মাকে পরিশুদ্ধ করে তাকওয়ার স্তরে উন্নিত হওয়াই রোজার মূল উদ্দেশ্য। যেমনটি হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত হাদিসে আমাদের প্রিয়নবী নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, কিছু রোজাদারের রোজার প্রাপ্য হল ক্ষুধা ও তৃষ্ণা। আর কিছু রাত জাগরণকারীর প্রাপ্য হল কেবল জেগে থাকা।-মুসনাদে আহমাদ : ৮৬৯৩

যে কারণে রোজার মাহাত্ম্য ও মর্যাদা নষ্ট হয়ে যায়, তন্মধ্যে কয়েকটি:-

এক: রোযা রেখে মিথ্যা কথা বলা। হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা বলা ও সে অনুসারে কাজ পরিহার করে না, আল্লাহর কাছে তার পানাহার বর্জনের কোনো প্রয়োজন নেই।-সহিহ বুখারি : ১৮০৪

দুই: রোযা রেখে গালি দেওয়া বা ঝগড়া করা। হযরত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু কর্তৃক বর্ণিত নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমাদের কেউ যখন রোজা রাখে, সে যেন ঐদিন অশালীন কথাবার্তা বলে না এবং শোরগোল করে না। যদি কেউ তাকে গালি দেয় বা তার সাথে ঝগড়া বাঁধায়, তবে সে যেন (গালি না দিয়ে) বলে, আমি তো রোজাদার।- বুখারি ও মুসলিম

তিন: হারাম খাদ্য দিয়ে ইফতার বা সাহরি করা। নবীজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ওই গোশত (দেহ) জান্নাতে যাবে না, যা হারাম (খাবার) থেকে উৎপন্ন। জাহান্নাম-ই এর উপযোগী। -জামে তিরমিজি : ৬১৪

চার- স্বীয় পাপ সম্পর্কে উদাসীনতা। হযরত নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ব্যক্তি রমজান মাস পেয়েও তার পাপ ক্ষমা করাতে পারেনি, তার নাক ধুলায় ধূসরিত হোক।-জামেউল উসুল : ১৪১০

এসব কাজের দ্বারা রোজার অন্তর্নিহিত শক্তি নষ্ট হয়ে যায় ও সওয়াব কমে যায়। অবশ্য রোজা ভঙ্গ হয় না কিন্তু মাকরুহ হয়ে যায়। তাই আসুন, মর্যাদাপূর্ণ এ মাসে সিয়াম ও কিয়ামের পাশাপাশি সকল প্রকার পাপ বর্জন করে তাকওয়া অর্জনে সচেষ্ট হই।

লেখক, শিক্ষক।

-কেএল


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ