সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫ ।। ৮ আষাঢ় ১৪৩২ ।। ২৭ জিলহজ ১৪৪৬

শিরোনাম :
এরপরও আজকের পৃথিবীকে বলতে হবে সভ্য, শান্তিকামী! ভুল চিকিৎসায় শিশুপুত্রের মৃত্যুর করুণ বর্ণনা দিলেন শিল্পী বদরুজ্জামান ইরানে মার্কিন আগ্রাসনের নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাল জমিয়ত জুলাই ঘোষণাপত্র বাস্তবায়ন না হলে দেশজুড়ে আন্দোলনের হুঁশিয়ারি! ‘প্রধানমন্ত্রী একক ক্ষমতার অধিকারী হলে সরকার ফ্যাসিস্ট হয়ে ওঠে’ ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, জরুরি বৈঠক ডেকেছে আইএইএ জাতীয় সরকার গঠন হবে এনসিপির নেতৃত্বে: নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারী ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় মাওলানা মুহসিনুল হাসানের গণসংযোগ, ইনসাফভিত্তিক সমাজ গড়ার আহ্বান ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, জাতিসংঘ মহাসচিবের গভীর উদ্বেগ জাপানের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে জামায়াত আমিরের বৈঠক

আল আকসায় স্বর্ণমিশ্রিত জাফরান কালিতে লেখা কুরআন ৭০০ বছর ধরে সংরক্ষিত

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: প্রথম কিবলা ইসরায়েল অধিকৃত ফিলিস্তিনের মসজিদুল আকসার সংগ্রহশালায় ৭০০ বছর ধরে সংরক্ষিত আছে কস্তুরি মিশ্রিত জাফরানের কালিতে লেখা পবিত্র গ্রন্থ আল কুরআন।

১৩৪৪ সালে মরক্কোর তদানীন্তন সুলতান আলী আবুল হাসান আল মারিনী নিজ হাতে কুরআনের ঐতিহাসিক এ অনুলিপিটি তৈরি করে আল আকসায় হাদিয়া হিসেবে পাঠান। যেটি বর্তমানে ফিলিস্তিনের মসজিদুল আকসার সংগ্রহশালায় প্রায় ৭০০ বছর ধরে সংরক্ষিত রয়েছে।

মানুষের মাঝে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকতে শাসনক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর অভিনব কিছু কাজ করেছিলেন সুলতান আল মারিনী। তার অন্যতম হলো কস্তুরিমিশ্রিত জাফরানের কালিতে নিজ হাতে কুরআন কারিমের অনুলিপি তৈরি করে পবিত্রতম স্থান আল আকসা মসজিদে হাদিয়া প্রেরণ।

আল আকসা ছাড়াও একইরকম তৈরিকৃত কোরআন কারীমের পৃথক দুটি পাণ্ডুলিপি মসজিদুল হারাম এবং মসজিদে নববীতেও হাদিয়া পাঠিয়েছিলেন সুলতান আল মারিনী। তবে কালের পরিক্রমায় সেগুলো সংরক্ষিত থাকেনি।

৭০০ বছর পূর্বের মরক্কোর সেই সুলতানের স্মৃতিচিহ্ন ধারণ করে থাকা কোরআন কারীমের ঐতিহাসিক এ পাণ্ডুলিপিটি সংরক্ষিত আছে আল আকসার কুব্বাতুস সাখরায়।

রৌপ্যখচিত আবলুস কাঠে নির্মিত বর্গাকৃতির একটি বক্সে করে এ হাদিয়াটি পাঠিয়েছিলেন সুলতান আল মারিনী। বক্সের ভিতরের অংশ ত্রিশটি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভক্ত। যেগুলোতে সংরক্ষিত আছে কুরআন কারীমের পৃথক ত্রিশটি পারা (অংশ)। বর্গাকৃতির বক্সে সংরক্ষিত থাকায় এটিকে ‘মরক্কোর রাবা’ বলা হয়। আরবিতে ‘রাবা‘ অর্থ ‘বর্গাকৃতি’।

কুরআনের এ পাণ্ডুলিপিটি আল আকসায় হাদিয়া পাঠানোর সময় সুলতান আল মারিনী ওসিয়ত করে বলেছেন, শুধু কুব্বাতুস সাখরার ভেতরেই প্রতিদিন সূর্যোদয়ের সময় এই পাণ্ডুলিপিটি তিলাওয়াত করতে হবে।

তিলাওয়াতের আগে পড়ে সূরা ইখলাস, সূরা ফালাক, সূরা নাস এবং সূরা বাকারার শেষ দুই আয়াত বিশেষভাবে পড়তে হবে। তিলাওয়াত শেষে রাসূলে কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালাম ও তার পরিবারবর্গের প্রতি দরূদ এবং সুলতানের পরিবারের জন্যকল্যাণ এবং ক্ষমার দোয়া করতে যেন কোনো পাঠকই ভুল না করে এ ব্যাপারেও ‘অসিয়তনামায়’ স্পষ্ট আবদার রয়েছে।

সুলতান আল মারিনী উন্নত চামড়ায় বিশেষ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে এ পাণ্ডুলিপি তৈরি করেছেন। যেন কাগজের মতো সহজেই ক্ষয় না হয়ে যায়। লেখার ক্ষেত্রে তখনকার প্রচলিত কুফি লিখন রীতি এবং বিন্যাসের ক্ষেত্রে বিশেষ ফিতার সাহায্যে জ্যামিতিক নানা সূত্র অনুসরণ করা হয়েছে। ঐতিহাসিক এ পাণ্ডুলিপির কালি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে কস্তুরিমিশ্রিত জাফরান যাতে কার্বন এবং স্বর্ণমিশ্রিত কালিও পর্যাপ্ত পরিমাণে ছিল।

কোনো সূরা বা পারার শুরু-শেষে বিশেষ আলঙ্করিক চিহ্ন ব্যবহার করা হয়েছে। প্রতিটি পৃষ্ঠায় কারুকার্যের মাধ্যমে বিশেষ নকশা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে।

তবে গত শতকের প্রথমদিকে ফিলিস্তিন নিয়ে বিভিন্ন অস্থিরতা তৈরি হলে ঐতিহাসিক এ পাণ্ডুলিপির ৬টি অংশ লুট হয়ে গেছে বলে জানা যায়। বর্তমানে ‘মরোক্কান রাবাতে’ ২৪ পারা বিদ্যমান। সূত্র: আল জাজিরা

-এটি


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ