মঙ্গলবার, ০৪ নভেম্বর ২০২৫ ।। ১৯ কার্তিক ১৪৩২ ।। ১৩ জমাদিউল আউয়াল ১৪৪৭

শিরোনাম :
জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনানী নাসীরুদ্দীন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলার নিন্দা ও প্রতিবাদ খুলনায় হাতপাখার সংসদ সদস্য প্রার্থীর নির্বাচন পরিচালনা কমিটির জরুরি বৈঠক সার্বিক উন্নয়ন ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠায় কাজ করতে চাই: হাফিজ ফখরুল ইসলাম ফরিদপুরে স্বতন্ত্র সংসদ সদস্য পদপ্রার্থীর প্রচারণার গেট ও ব্যানার ভাঙচুর  জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য নভেম্বরেই গণভোট দিতে হবে: এ টি এম মাছুম জামায়াত আমিরের আসনে বিএনপির প্রার্থী হলেন যিনি খালেদা জিয়াসহ ৯ নারী পেলেন বিএনপির মনোনয়ন ২৩৭ আসনে বিএনপির ধানের শীষ পেলেন যারা নাসিরুদ্দিন পাটওয়ারীর বিরুদ্ধে মামলায় মতিউর রহমান আকন্দ নিন্দা বস্ত্রহীন ঘুমানোর হুকুম কী ?

ভারতীয় মুসলিম যুবকদের প্রতি ওয়াইসির চেতনাদীপ্ত ভাষণ

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আসাদুদ্দিন ওয়াইসি। ভারতবর্ষের একজন প্রখ্যাত মুসলিম রাজনীতিবিদ। তিনি সর্বভারতীয় মজলিস-ই-ইত্তেহাদুল মুসলিমিন দলের প্রেসিডেন্ট। হায়দারাবাদ থেকে তিনি পরপর চারবার আইনসভার নিম্নকক্ষ লোকসভার সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন।

ভারতীয় মুসলিমদের অধিকার নিয়ে সবসময় সোচ্চার থাকতে দেখা যায় তাকে। রাষ্ট্রের বিভিন্ন ইস্যুতে তার জ্বালাময়ী বক্তব্য ও নৈতিক যুক্তির মাধ্যমে ভারতীয় মুসলিমদের মনে শক্তিশালী জায়গা করে নিয়েছেন এ মুসলিম নেতা।

ভারতীয় মুসলিম যুবকদের প্রতি ওয়াইসির চেতনাদীপ্ত একটি ভাষণ আওয়ার ইসলামের পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো। ভাষান্তর করেছেন জাবির মাহমুদ


যুবকেরা ভয় পেয়ো না। তোমরা দেখেছ যে কী হয়েছে— কাবার আঙিনায় জুলুম হয়েছে। তখন আল্লাহ তা'আলা এমন সফলতাই দিয়েছেন যে, সেখানেই পুরো দলের ধ্বংস বিধিলিপি হয়ে গেছে। তোমাদেরকে আল্লাহ তা'আলা নসীবের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন। ইজ্জতের মাধ্যমে সম্মানিত করেছেন।

যদি কেউ ভয় পাও যে, আমাদের এক মুসলমান ভাইকে ধরে দাড়ি কেটে দেয়া হয়েছে। তাহলেও ভয়ের কোনো কারণ নেই। না চিন্তার কিছু আছে এতে।

দাড়ি কর্তনকারীদের সম্বোধন করে বলছি— তোমাদের পিতাদের লক্ষ্য করে বলছি— তোমাদের বেসামরিক বাহিনীকে বলছি— তোমরা স্রেফ দাড়ি কেন, যদি গর্দানও কেটে ফেলো আমাদের— তবু আমরা মুসলমান থাকব।

কেয়ামত অব্দি হিন্দুস্তানে ইসলামকে প্রতিষ্ঠিত রাখব, ইনশাআল্লাহ। এটা আমাদের সাংবিধানিক অধিকার। কেননা ভারতের সংবিধানই আমাদের এ অধিকার দিয়েছে।

জুলুমকারীরা শুনে রেখো— দাড়ি কাটলেই আমরা দাড়ি রাখা বন্ধ করে দিব, ভেবো না! রবং দাড়িই আরো লম্বা করে রাখব। এতোটাই লম্বা করে রাখব যে, আমাদের আখলাক থেকে, আমাদের সত্যবাদিতা থেকে, তোমাদেরকেও ইসলামের সৌভাগ্য নসীব করাব, ইনশাআল্লাহ। তোমাদেরকেও দাড়ি রাখাবো, ইনশাআল্লাহ।

তোমরা যারা আমাদের গোমাতার নামে মারছ— আমরাদেরকে তোমরা মারছ না! বরং তোমরা তো হিন্দুস্তানকেই দূর্বল করছ। তোমরা ভারতের আইনকে ভঙ্গ করছ। সমগ্র পৃথিবীবাসীর সামনে ভারতকেই অপমান করছ। তোমরা আকবর খানকে মারো নি। তোমরা ভারতের কলিজায় তীর ছুড়েছ।

তোমরা চরিত্রের বিভীষিকাই শুধু দেখাও নি— তোমরা স্বদেশের আত্নত্যাগী ভালোবাসায় বিষ ঢেলেছ! মাওনেওয়ালারা স্মরণ রেখো— তোমাদের জুলুম একদিন শেষ হবে। তোমাদের জুলুম শেষ হবেই, ইনশাআল্লাহ।

আমাদের মাথার উপর ধ্বংসের যে মেঘ পুঞ্জিভূত হচ্ছে, যুবকেরা— ভয় পেয়ো না। এই মেঘ কেটে যাবে ইনশাআল্লাহ। এই মেঘটেঘ কেটে যাবে যুবকেরা— মনে রেখো।

তোমরা সাহসের সাথে কাজ করে যাও। তোমরা আল্লাহর সত্তায় বিশ্বাস রাখো। তোমরা ভয় পেয়ো না। তোমরা হিন্দুস্তানের সংবিধানকে ব্যাবহার করো। তোমরা এই জালেমদেরকে ভয় পেয়ো না।

তোমরা তদেরকে ভয় পেয়ে দ্বীনের এই নিদর্শনকে মিটিয়ে দিয়ো না। তোমরা গর্বের সাথে বলবে যে, আমি হিন্দুস্তানী মুসলমান। আমি দাড়ি রাখব। মসজিদে যাব। আমি হিন্দুস্তানের জমহুরিয়্যাতের হক পুরোপুরিই আদায় করব। ভয় পাওয়ার জন্য আমরা জন্মিনি। আমরা কখনোই ভয় পাবো না।

তারা কেন ভিডিও বানায়? বানায়ই— যাতে ভয় পাওয়ানো যায়। মনে ভয় সৃষ্টি করা যায়। রাজস্থানের ভিডিও— এক মজদুরকে নিয়ে, তাকে মেরে জখমি করে, শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে তারা ভিডিও বের করেছে! যাতে আমাদের অন্তরে ভয় সৃষ্টি হয়ে যায়— না!

তোমরা কি ভুলে গেছো— ভুলে গেছো কারবালার দৃশ্যকে? রাসূলের নাতির শাহাদাতকে? তোমরা কি ভুলে গেছো— আসগর আলী আকবরের মহান কুরবানিকে? তোমরা কি ভুলে গেছো— সে-ই দজলার তীর, যেটা আহলে বায়েতের রক্তে রঞ্জিত হয়েছিলো?

আজ আমাদের ঘরে ঘরে আহাজারি চলছে। সাহস রাখো। তোমরা কি ভুলে গেছো— কারবালার ময়দাবে হজরত যায়নাবের কথা? ইতিহাস সাক্ষী। ইতিহাস তোমাদেরকে ডেকে ডেকে বলছে, যুবকেরা— ভয় পাওয়া আর ঘারড়ে যাওয়ার দরকার নেই।

এজিদেরও দৃঢ়বিশ্বাস ছিলো! কিন্তু আল্লাহ এজিদের মৃত্যু এমনভাবে দিয়েছেন। কেউ তার নামও নেয় না! হযরত ঈবরাহীমকে আগুনে নিক্ষেপ করা হয়েছে। নমরূদ মনে করেছে— আমি অনেক শক্তিবান! আল্লাহ তাকে ল্যাংড়া মশা দিয়ে শেষ করেছেন। এমনই হবে।

সময়ের যে নমরূদ আছে, সময়ের যে ফেরাউন আছে, তোমরা দেখবে— এরও পতন হবে। জুলুমের ভিত্তির উপর সে রাজত্ব করতে পারবে না। জুলুম যখন বৃদ্ধি পাবে— আল্লাহর কুদরত তখন জোশসিক্ত হবে! তোমরা দেখো। আমার কথাকে মনে রেখো। জালেমের জুলুমের সমাপ্তি ঘটবেই, ইনশাআল্লাহ।

আরএম/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ