তানভীর সিরাজ
প্রতিটি ইবাদত যা আল্লাহ্ তায়ালা আমাদের জন্য শরিয়তরূপে নির্ধারণ করে দিয়েছেন, যার মধ্যে রয়েছে চূড়ান্তকারী হিকমত, নানাবিধ উপকার, গভীর অর্থসহ বড়বড় রহস্যের ঝুলি।
হিকমত, ফায়দা, অর্থ আর গোপন রহস্যসমূহ কষ্টসহিষ্ণু অনুগত মুমিন ব্যক্তিকে দুনিয়া-আখেরাতের সৌভাগ্যের পথে পরিচালিত করতে, তার শরীরের পূর্বে তার রূহকে চিকিৎসা করতে, সুন্দর চরিত্র আর সার্বিক সুন্দর চালচলন উপহার দিতে তাকে আমলে মুখলিছ, নিয়তে পরিশুদ্ধ আর বান্দায়ে খালেছ হিসাবে গড়ে তুলে, তাই তার অন্তরে ইয়াকিন পূর্ণতা লাভ করে, শক্তিশালী হয়। রমজান মানুষকে আল্লাহওয়ালা বানায়। আল্লাহমুখী করে।
রমজানের উদ্দেশ্য সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা কুরআনে ঘোষণা করেন, হে মুমিনগণ, তোমাদের প্রতি রোজা ফরজ করা হয়েছে যেমন তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের প্রতি ফরজ করা হয়েছিলো, যাতে তোমাদের মধ্যে তাকওয়া সৃষ্টি হয়। (সূরা বাকারা-১৮৩)
তাৎপর্যের দিক দিয়ে রোযা হল শ্রেষ্ঠ ইবাদতের একটি, ব্যক্তি ও সমাজজীবনে তার প্রভাব চেয়ে থাকার মতো আর অন্তরসমূহে তার প্রভাবান্বিতের বিষয়টি বেশ লক্ষণীয়।
(স্মরণ থাকা উচিৎ) যখন রোজা (মানবীয়) অনুভূতিকে আল্লাহর সাথে জুড়িয়ে রাখে, রোজাদারের পথ-পন্থাকে পরিশোধন করে, তখন তা (রোজা) কেবল একটি দ্বীনি ফরজ হিসাবে আর অবশিষ্ট থাকে না, বরং তা এমন একটি শ্রেষ্ঠ ইসলামি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়, যা আত্মার অভিভাবকত্ব করে, আত্মশুদ্ধি করে এবং ঈমান বৃদ্ধি করে। আল্লাহ তায়ালা এ মহামান্বিত মাসে মানুষকে তাকওয়া অর্জনের শিক্ষা দেয়।
রোজা.. বড়সড় এক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বান্দা যেখানে তার প্রতিপালকের সাথে তার সম্পর্ককে নবায়ন করে এবং তার অভ্যাসগত বক্রতাকে সোজা করে, ইবাদতে তার গাফলাতিকে তদারকি করে, অন্য ভাইদের অনুভূতির প্রভাবে বান্দা ঈমানি বোধে সজাগ হয়, ফলে রোযাদার অনাহারিকে আহার দেয়, অনাথদের সঙ্গে সমবেদনা প্রকাশ করে। সুতরাং পূর্বেকার আলোচনার মাধ্যমে নিম্নবর্তী হাদিসে উদ্যেষ্ট সবকিছু প্রমাণিত হয়।
রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন- ঈমানদারগণ পরস্পর ভালবাসা, সহমর্মিতা ও সহানুভূতির ক্ষেত্রে এক ও অভিন্ন দেহের ন্যায়। যদি সে দেহের কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ ব্যথিত হয়, তাহলে সারা দেহ-কায়া বিনিদ্রা ও জ্বরাক্রান্ত হয়ে পড়ে। (মুসলিম)
হাঁ.. অবশ্য রোজাসমূহ ব্যক্তিকেন্দ্রিক যেমন শিক্ষা-কমপ্লেক্স তেমনি গোটা জাতির জন্য এই রোজা শিক্ষাঙ্গনসরূপ, (আর এই রোজা) প্রকাশ্য- অপ্রকাশ্য শক্তিসঞ্চয়ের এবং আধ্যাত্মিক প্রস্তুতি গ্রহণের খোরাক যোগাতে প্রতিবছর ঘুরে ঘুরে আসে।
প্রকৃতপক্ষে তা (রোজা) যেন আমানত রক্ষার, ইলাহি বার্তা পৌঁছে দেয়ার এবং 'কে কী বলছে' তার দিকে না তাকিয়ে সর্বাবস্থায় আল্লাহর পথে আহ্বানের কারণ হয়।
সুতরাং তোমরা তো সেই জাতি যাঁদের ব্যাপারে বলা হলো, অর্থ্যৎ ‘তোমরা শ্রেষ্ঠ জাতি, যে জাতিকে মানুষদের জন্য বের করা হয়েছে’ আর শ্রেষ্ঠত্বের কারণ হল অর্থ্যৎ 'তোমরা ভালো কাজের আদেশ করবে আর মন্দ কাজ হতে নিষেধ করবে এবং আল্লাহর প্রতি ঈমান আনবে। সূরা আলি -ইমরান-১১০
সূত্র: تلاميذ شيخ الطريقة النقشبندية الخزنوية فضيلة الشيخ محمد مطاع الخزنوي
-এটি
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        