রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ১৩ পৌষ ১৪৩২ ।। ৮ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম :
এনসিপি কি শেষ পর্যন্ত রাজনৈতিক আত্মহত্যার পথটাই বেছে নেবে? শপথ নিলেন নতুন প্রধান বিচারপতি জুবায়ের রহমান চৌধুরী ইসলামী আন্দোলন ও জামায়াত মাঠে নামছে বছরের শুরুতেই লেবানিজ সেনাবাহিনীর সঙ্গে সংঘাতে যাবে না হিজবুল্লাহ ঈমান-ঐক্য-আত্মবিশ্বাসের মাধ্যমে বিশ্বে নতুন বিশ্বাসযোগ্যতা অর্জন করেছে ইরান: খামেনি ভোটে লড়তে অ্যাটর্নি জেনারেল পদ ছাড়লেন আসাদুজ্জামান পাগলা মসজিদের দানবাক্সে ৩৬ বস্তায় মিলল ১১ কোটি ৭৮ লাখ টাকা আজ দুপুরে মনোনয়নপত্র জমা দেবেন ইবনে শাইখুল হাদিস ‘হাদির হত্যাকারীদের আটকে ব্যর্থতা সরকারের অনেক অর্জনকে ম্লান করবে’ কুমিল্লা–৭ (চান্দিনা) আসনে খেলাফত মজলিসের মনোনয়ন পেলেন মাওলানা সোলায়মান খান

ইজতেমা ময়দান ফাঁকা, সংঘর্ষে নিহত ১

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম: ব্যাপক সংঘর্ষ ও রক্তক্ষরণের মধ্য দিয়ে খালি হলো টঙ্গী ইজতেমা ময়দান। সেখানে আর কোনো পক্ষের লোক অবস্থান করছেন না বলে জানা যায়। মাগরিবের কিছুক্ষণ আগেই মাঠ ফাকা হয়ে যায় বলে জানা যায়।

এর আগে শনিবার সকাল থেকেই সাদপন্থীদের মাঠ দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। তাদেরকে ইজতেমা ময়দানে ঢুকতে বাধা দিলে এক পর্যাায়ে তারা গেট ভেঙে প্রবেশ করে এবং তাবলীগের সাথীদের ওপর সশস্ত্র হামলা চালায়। এতে ১ জন নিহত হয় এবং ৩ শতাধিক লোক আহত হয়।

পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন শৃঙ্খলা বাহিনী সিদ্ধান্ত নেয় আপাতত উভয় পক্ষ মাঠ ত্যাগ করবে।

বিকালে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সভাপতিত্বে প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও তাবলিগের জামাতের মুরুব্বিদের সঙ্গে বৈঠকেও এমন সিদ্ধান্ত হয়।

জানা যায়, দুই পক্ষের সংঘর্ষে ইসমাইল মণ্ডল (৬৫) নামে এক মুসল্লি নিহত হয়েছেন। নিহত ইসমাইল মণ্ডল মুন্সীগঞ্জের মিলিয়াপাড়া গ্রামের খলিল মণ্ডলের ছেলে।

জানা যায়, জোড় ও বিশ্ব ইজতেমার মাঠ প্রস্তুতির জন্য বেশ কিছুদিন থেকেই মাঠে অবস্থান করছিলেন তাবলীগের সাথীগণ। সকাল ১১ টার দিকে মাওলানা সাদ অনুসারীরা মাঠ দখল করতে গেলে সংঘর্ষ শুরু হয়।

এ সময় সাদ অনুসারীরা মাঠের গেট ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে এবং দফায় দফায় হামলা চালায়।

সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, লাঠি দিয়ে বেধরক পেটানো হচ্ছে সাথীদের। অকেনের পুরো পাঞ্জাবি রঙ্কে রঙিন। অনেকের মাথা ফেটে চৌচির। কারো নাক মুখ কেটে গেছে।

মাঠে অবস্থানরত অনেকেই জানান, অন্যদিনের মতোই ইজতেমা মাঠে ইবাদতে লিপ্ত ছিল তাবলীগের সাথী ও উলামায়ে কেরাম। এদিকে সাদ অনুসারীরা যেন ভেতরে ঢুকতে না পারে সে জন্য গেটের পাহারায় ছিলেন অনেকে।

বেলা ১১ টার দিকে হঠাৎ করেই তারা লাটিসোটা হাতে মাঠে প্রবেশ করে। তারা তাবলীগের সাথী, মুরব্বি ও ছাত্রদের বেধরক পেটাতে থাকেন।

প্রত্যক্ষদর্শী অনেকেই জানান, হামকারীদের বেশির ভাগের টার্গেট ছিল মাদরাসার ছাত্ররা। নিরিহ এসব ছাত্রকে দেখে লাঠি হাতে দৌড়ে আসে হামলাকারীরা।

আওয়ার ইসলামের টঙ্গী প্রতিনিধি তাওহিদ জানান, হামলাকারীরা মাঠে প্রবেশ করেই ছাত্র ও মুরব্বিদের বেধরক পেটাতে থাকে। প্রতিরোধ করতে গিয়ে এসময় অনেক সাথী মারাত্মক আহত হন।

তিনি বলেন, মাঠে অবস্থানরত সাথীদের মাল সামানা ও চাটাইয়ে আগুনও ধরিয়ে দিচ্ছে তারা।

উল্লেখ্য, আগামী ৭ ডিসেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত টঙ্গী ময়দানে তাবলিজ জামাতের নিয়মতান্ত্রিক জোড় অনুষ্ঠিত হবে। ১৮ জানুয়ারি থেকে ২০ জানুয়ারি পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হবে তিন দিনের ইজতেমা। সে মুতাবেক মাঠ প্রস্তুতের কাজ করছিলেন তাবলীগের সাথীগণ।

এদিকে মাওলানা সাদ অনুসারীরাও আলাদাভাবে ৩০ নভেম্বর থেকে জোড় করার ঘোষণা দেন। এবং গত ২৭ নভেম্বর সংবাদ সম্মেলন করে মাঠ দখলের কথাও বলেন। এর পর থেকেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হতে থাকে।

মাওলানা সাদ কান্ধলভী তাবলিগ জামাতের একজন শীর্ষ মুরব্বি। তবে গত কয়েক বছর ধরে তার নিজেকে আমির দাবি ও নবীর শানে বিতর্কিত কিছু বক্তব্যসহ কিছু ভুল মাসআলা দেয়ায় তা সংশোধনের চেষ্টা করেন ভারতের দারুল উলুম দেওবন্দসহ বাংলাদেশের উলামায়ে কেরাম।

কিন্তু এসব ভুল থেকে এখন পর্যন্ত পরিস্কারভাবে ফিরে না এসে নিজের অবস্থানে অটুট আছেন।

এদিকে উলামায়ে কেরাম ও তাবলীগের বাংলাদেশের মুরব্বিগণ ঘোষণা দিয়েছেন, মাওলানা সাদ তার ভুল থেকে ফিরে আসলে সবাই তাকে মানবেন। কিন্তু এসব ভ্রুক্ষেপ না করে নিজের অবস্থান অটুট রাখায় তাবলীগ জামাতে চলমান এ সঙ্কট।

চলমান এ পরিস্থিতিতে উলামায়ে কেরাম ঐক্যমত হয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, মাওলানা সাদ কান্ধলভী তার ভুল থেকে ফিরে না এলে তাকে বাংলাদেশে আসতে দেয়া হবে না এবং তার মতও প্রচার করতে দেয়া যাবে না।

বাংলাদেশের তাবলীগের মারকাজ কাকরাইল সে অনুযায়ী নিজেদের কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

‘একসঙ্গে রক্তাক্ত জখমের এত রোগী টঙ্গী হাসপাতালে কখনো আসেনি’

আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ