আওয়ার ইসলাম: এবার সিনিয়র সহকারী সচিব থেকে উপসচিব পদে পদোন্নতি পেলেন ২৭৩ কর্মকর্তা। বুধবার গভীর রাতে ২৫৬ জনের দুটি আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়।
একটি প্রজ্ঞাপনে ২৪৯ কর্মকর্তাকে উপসচিব পদে পদোন্নতি দিয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নিয়োগ করা হয়।
আর বিদেশে বিভিন্ন মিশনে কর্মরত ৭ জনের জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তারা উন্নীত পদে যোগদানের তারিখ হতে উপসচিবের বেতন-ভাতা পাবেন। বাকি ১৭ জন শিক্ষা ছুটিতে থাকায় তাদের প্রজ্ঞাপন জারি হয়নি।
পদোন্নতি পাওয়া কর্মকর্তার মধ্যে ২০৪ জন বিসিএস প্রশাসন ক্যাডার এবং ৬৯ জন অন্যান্য ক্যাডারের। তবে মেয়াদ পূর্তির শেষ সময়ে এসেও সরকার পদোন্নতি বঞ্চনার অভিযোগ থেকে মুক্ত হতে পারেনি।
বুধবার রাতেই পদোন্নতি বঞ্চিত বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা সাংবাদিকদের কাছে তাদের ক্ষোভ- অসন্তোষের কথা তুলে ধরেন। তাদের দাবি, দলমত নিরপেক্ষ মেধাবী কর্মকর্তা হওয়া সত্ত্বেও এবারও তাদের পদোন্নতি দেয়া হয়নি।
এছাড়া নতুন করে বিবেচনায় আসা ২৫তম ব্যাচ থেকেও বাদ পড়েছেন প্রায় ২০ জন।
এদিকে পদোন্নতির বিষয়টি নিশ্চিত করে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এপিডি শেখ ইউসুফ হারুণ বলেন, অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে সুন্দর এবং সব ধরনের রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত পদোন্নতি হয়েছে।
‘যারা পদোন্নতি পাননি তাদের বিভাগীয় মামলা, এসিআরে নম্বর কমসহ নানা ধরনের সমস্যা রয়েছে। এ কারণে কেউ কেউ পদোন্নতি পাননি। তবে যোগ্য সবাইকে এবার পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।’
এ বিষয়ে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের অপর একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তার দাবি, সবাইকে পদোন্নতি দেয়ার সুযোগ নেই। পদোন্নতি কোনো অধিকার নয়, এটি অর্জন করতে হয়। যারা পদোন্নতি পাননি তাদের প্রত্যেকের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কারণ আছে। তা সত্ত্বেও সত্যিই যোগ্য-দক্ষদের কেউ যদি বাদ পড়ে থাকেন সেটি সরকার বিবেচনা করতে পারে।
উপসচিব পদে অনুমোদিত পদের সংখ্যা ১০০৬। বর্তমানে এ পদে কর্মরত আছেন ১৬০৩ কর্মকর্তা। এ পরিস্থিতিতে বুধবার রাতে ২৭৩ জনকে উপসচিব করা হয়। এর ফলে এ পদে কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়াল ১৮৭৬-এ।
হিসাব অনুযায়ী অনুমোদিত পদের চেয়ে অতিরিক্ত কর্মকর্তার সংখ্যা দাঁড়াল ৮৭০। এ অবস্থায় পদ না থাকায় পদোন্নতি পাওয়া অধিকাংশ কর্মকর্তাকে আগের পদেই (ইন সিটু) কাজ করতে হবে অথবা ওএসডি থাকতে হবে। জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, রেওয়াজ অনুযায়ী পদোন্নতিপ্রাপ্তদের ইতিমধ্যেই ওএসডি (বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা) করা হয়েছে।
পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে বিসিএস ১৯৮৫ ব্যাচের একজন, ১৯৮৬ ব্যাচের একজন, ১১তম ব্যাচের একজন, ১৩তম ব্যাচের একজন, ১৮তম ব্যাচের ২ জন, ২১তম ব্যাচের ৩ জন, ২২তম ব্যাচের ১০ জন, ২৪তম ব্যাচের ৩৩ জন এবং নিয়মিত ব্যাচ হিসেবে ২৫ ব্যাচের ১৫০ কর্মকর্তা রয়েছেন। এছাড়া প্রশাসন ক্যাডারের বাইরে থেকে ৬৯ জনকে পদোন্নতি দেয়া হয়েছে।
পদোন্নতিপ্রাপ্তদের মধ্যে এবার কমবেশি ৫২ কর্মকর্তা রয়েছেন, যাদের প্রয়োজনীয় যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও নানা কারণে এর আগে একাধিকবার বঞ্চিত হয়েছিলেন।
প্রাথমিক তথ্য বিশ্লেষণে দেখা যায়, উপসচিব পদে ২৭৩ জনকে পদোন্নতি দিতে গিয়ে কমবেশি দেড় শতাধিক কর্মকর্তা বঞ্চিত হয়েছেন। যারা বিসিএস ১৯৮৫ ব্যাচ, ১৯৮৬ ব্যাচ, দশম, একাদশ, ১৩তম, ১৫তম, ১৭তম, ১৮তম, ২০তম, ২১তম, ২২তম ও ২৪তম ব্যাচের কর্মকর্তা। তবে কর্তৃপক্ষের দাবি, তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা বিচারাধীন অথবা চাকরির গোপন প্রতিবেদনে বিরূপ মন্তব্য থাকায় পদোন্নতি দেয়া সম্ভব হয়নি।
বঞ্চিত কর্মকর্তাদের দাবি, উপসচিব পদে পদোন্নতিযোগ্য কর্মকর্তার সংখ্যা প্রায় দেড় শতাধিক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য- বিসিএস ১৯৮৪ ব্যাচের মোহাম্মদ নুর হোসাইন, ১৯৮৫ ব্যাচের ইকবাল মাহমুদ, মাকসুদুর রহমান ও আতাউল করিম প্রমুখ।
আল্লাহ এবং বাংলাদেশের জনগণের ওপর আমার বিশ্বাস আছে : প্রধানমন্ত্রী
এসএস