সোমবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ৬ পৌষ ১৪৩২ ।। ২ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম :
ফয়সালসহ সংশ্লিষ্টদের ব্যাংকে ১২৭ কোটি টাকার অস্বাভাবিক লেনদেন বিনা টিকিটে রেলওয়ে ভ্রমণ, এক দিনেই ১৪ লাখের বেশি টাকা আদায় সৌদি আরবে এক সপ্তাহে প্রায় ১৮ হাজার অবৈধ প্রবাসী গ্রেপ্তার ফয়সালের ভারতে পালিয়ে যাওয়ার ঘটনা প্রচার করা কৌশল হতে পারে: রফিকুল ইসলাম দীপু চন্দ্র ও শিশু আয়েশাকে পুড়িয়ে হত্যার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ হেফাজতে ইসলামের রজব মাসের চাঁদ দেখা গেছে ভারতীয় আধিপত্যবাদের কবর রচিত হয়ে গেছে: পীর সাহেব চরমোনাই মোটরসাইকেলের মালিক সন্দেহে গ্রেপ্তার হান্নানের জামিন ওসমান হাদি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন করতে চেয়েছিলেন : আইন উপদেষ্টা আল্লাহ আমাদের মক্কা ও মদিনার রক্ষক হওয়ার সম্মান দিয়েছেন : ফিল্ড মার্শাল মুনির

বাহুবলে ৪ শিশু হত্যা : ফাঁসির আদেশ ৩ জনের

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

আওয়ার ইসলাম : হবিগঞ্জ জেলার বাহুবল উপজেলায় চাঞ্চল্যকর ৪ শিশু হত্যা মামলায় তিন আসামির ফাঁসির আদেশ দিয়েছেন সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল।

এছাড়া দুই আসামিকে ৭ বছরের কারাদণ্ড ও দুই আসামিকে খালাস দেয়া হয়েছে। বুধবার সিলেটে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক মকবুল আহসান এ রায় দেন। রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী কিশোর কুমার কর এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

এ মামলার আসামিরা হলেন- পঞ্চায়েত প্রধান আব্দুল আলী বাগাল, তার দুই ছেলে রুবেল মিয়া ও জুয়েল মিয়া, তার সেকেন্ড ইন কমান্ড আরজু মিয়া ও শাহেদ মিয়া।

আসামিদের মধ্যে বাচ্চু মিয়া নামের একজন র‌্যাবের সঙ্গে কথিত বন্দুকযুদ্ধে মারা যান। আর এ মামলার পলাতক আসামি উস্তার মিয়া, বাবুল মিয়া ও বিল্লাল পলাতক রয়েছেন। গ্রেফতারকৃত আসামিদের মধ্যে চারজন আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ‌

গত বছর ১২ ফেব্রুয়ারি গ্রামের মাঠে খেলা দেখতে গিয়ে নিখোঁজ হয় সুন্দ্রাটিকি গ্রামের আবদাল মিয়া তালুকদারের ছেলে মনির মিয়া (৭), ওয়াহিদ মিয়ার ছেলে জাকারিয়া আহমেদ শুভ (৮), আবদুল আজিজের ছেলে তাজেল মিয়া (১০) ও আবদুল কাদিরের ছেলে ইসমাইল হোসেন (১০)।

মনির সুন্দ্রাটিকি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে, তার দুই চাচাত ভাই শুভ ও তাজেল একই স্কুলে দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণিতে পড়ত আর তাদের প্রতিবেশী ইসমাইল ছিল সুন্দ্রাটিকি মাদ্রাসার ছাত্র।

এদিকে ঘটনার পরদিন বাহুবল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন জাকারিয়া শুভ’র বাবা ওয়াহিদ মিয়া। পরে ১৬ ফেব্রুয়ারি বাহুবল থানায় অপর আরেকটি অপহরণ মামলা দায়ের করেন মনিরের বাবা আব্দাল মিয়া।

১৭ ফেব্রুয়ারি গ্রামের পার্শ্ববর্তী বালুর মাঠ থেকে মাটিচাপা দেয়া অবস্থায় চার শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়। এরপরই অপহরণ মামলাটি হত্যা মামলা হিসেবে গৃহীত হয়।

ঘটনার দিনই গ্রেফতার করা হয় গ্রামের একটি পঞ্চায়েতের সর্দার আবদুল আলী বাগালকে। এরপর একে একে আরও ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে পুলিশি তদন্তে বেরিয়ে আসে গ্রাম্য পঞ্চায়েত নিয়ে বিরোধের জের ধরে খুন হয় ওই ৪ শিশু।

তদন্ত শেষে ওই বছরের ২৯ এপ্রিল নয়জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দেন তদন্ত কর্মকর্তা ডিবির তৎকালীন ওসি মোক্তাদির হোসেন। এর মধ্যে বাচ্চু মিয়া নামে এক আসামি সিএনজি অটোরিকশা চালক র‌্যাবের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়।

এছাড়া গ্রেফতারকৃত সালেহ আহমেদ ও তার ভাই বশির আহমেদের নাম তদন্তে না আসায় তাদেরকে মামলা থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। বর্তমানে কারাগারে আছেন মামলার প্রধান আসামি আবদুল আলী বাগাল, তার ছেলে জুয়েল মিয়া ও রুবেল মিয়া, ভাতিজা সাহেদ ওরফে সায়েদ ও অন্যতম সহযোগী হাবিবুর রহমান আরজু। মামলায় পলাতক রয়েছেন আসামি উস্তার মিয়া, বেলাল মিয়া ও বাবুল মিয়া।

সুন্দ্রাটিকি গ্রামের দুই পঞ্চায়েত আবদাল মিয়া তালুকদার ও আবদুল আলী বাগালের মধ্যে পারিবারিক বিরোধের জেরে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানো হয় বলে মামলার তদন্ত ও আসামিদের দেয়া স্বীকারোক্তিতে বেরিয়ে এসেছে। হবিগঞ্জ জেলা ও দায়রা জজ আদালতে গেল বছরের ৭ সেপ্টেম্বর মামলার বিচার কার্য শুরু হয়। হবিগঞ্জ আদালতে মামলার ৫৭ জন সাক্ষীর মধ্যে ৪৫ জনের সাক্ষ্য নেয়া হয়।

চলতি বছরের গত ১৫ মার্চে মামলাটি সিলেট বিভাগীয় দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালে স্থানান্তর করা হলে আরও সাতজনের সাক্ষ্য নেয়া মাধ্যমে মোট ৫২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করেন আদালত। দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট কিশোর কুমার কর যুগান্তরকে জানান, আদালতে স্বাক্ষীদের সাক্ষ্য এবং অন্যান্য প্রমাণ হাজির করে সরকারপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করেন তিনি।

-এজেড


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ