তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দেয়ার পক্ষ ও বিপক্ষ শক্তির কয়েক মাসব্যাপী প্রচারণা শেষে অনুষ্ঠিত গণভোটে অর্ধেকের সামান্য বেশি ভোট পেয়ে ‘হ্যাঁ’ ভোট জয়ী হয়েছে। নিঃসন্দেহে তুরস্কের ভবিষ্যত রাজনীতির জন্য এই গণভোট একটি মাইলফলক হয়ে থাকবে।
তুর্কি সরকারের পক্ষ থেকে রোববার অনুষ্ঠিত গণভোটে ৮৬ শতাংশ ভোট পড়ার দাবি করা হয়েছে। তুর্কি প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেব এরদোগান বলেছেন, সংবিধান সংশোধনের পক্ষে ৫১.৫ শতাংশ ভোটার হ্যাঁ ভোট দিয়েছেন।
আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এ গণভোটের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পর সংবিধানের ১৮টি ধারার সংশোধন প্রক্রিয়া শুরু হবে যার বাস্তবায়ন ২০১৯ সাল পর্যন্ত চলবে। সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে যেসব পরিবর্তন আসবে তার মধ্যে পার্লামেন্টারি শাসনব্যবস্থা থেকে প্রেসিডেন্ট পদ্ধতির শাসনব্যবস্থায় ফিরে যাওয়া হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।
এই গণভোট নিয়ে গত কয়েক মাস ধরে তুরস্কের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনেও ব্যাপক জল্পনা-কল্পনা হয়। গণভোটের ফলাফল ঘোষিত হওয়ার পরও বিষয়টি নিয়ে দেশ-বিদেশে ব্যাপক আলোচনা চলছে। তুরস্কের প্রধান বিরোধীদল পিপলস রিপাবলিক পার্টি গণভোটের ফলাফল নিয়ে সংশয় প্রকাশ করে শতকরা ৬০ ভাগ ভোট আবার গণনা করার দাবি জানিয়েছে। দলটির নেতা কিলিচদারওগ্লু সরকারের নির্দেশে তুরস্কের উচ্চ নির্বাচনি বোর্ডের পক্ষ থেকে কারচুপি করা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন। তিনি ভোট পুনঃগণনার যে দাবি তুলেছেন তা বাস্তবায়িত হলে গণভোটের ফলাফল পাল্টে গেলেও অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না।
এরদোয়ানের জয়; প্রেসিডেন্ট শাসিত গণতন্ত্রে যাচ্ছে তুরস্ক
রোববারে গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ ভোটের ব্যবধান মাত্র ২.৬ শতাংশ হওয়ার কারণে এই ভোটকে ভিত্তি করে ব্যাপক মাত্রায় সংবিধান সংশোধন করা যাবে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ দেখা দিয়েছে। সরকার বিরোধীদের প্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করে প্রেসিডেন্ট এরদোগান এ ঘোষণা দিতে বাধ্য হয়েছেন যে, সংবিধানের সবগুলো ধারা একসঙ্গে সংশোধন করা হবে না বরং এর কিছু অংশ ২০১৯ সালে বাস্তবায়ন করা হবে।
এদিকে এই গণভোটে ‘হ্যাঁ’ ও ‘না’ ভোটের ব্যবধান সামান্য হওয়ায় বোঝা যায়, সরকারের পক্ষ থেকে রাখা আবেদনে দৃশ্যত তুরস্কের প্রায় অর্ধেক জনগণ অসম্মতি জানিয়েছে। এ বিষয়টি স্বাভাবিকভাবেই আঙ্কারা সরকারকে ভাবিয়ে তুলেছে। বিশেষ করে এই গণভোটের পক্ষে ভোট দিতে জনগণকে উদ্বুদ্ধ করার জন্য গত প্রায় এক বছর ধরে রাষ্ট্রীয় কোষাগার এবং রাষ্ট্রের প্রচারযন্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে। পক্ষান্তরে বিরোধী দলগুলো ‘না’ ভোটের পক্ষে ততটা সুবিধাজনক অবস্থানে থেকে প্রচার চালাতে পারেনি। এ বিষয়টিকে বিবেচনা করলে এই গণভোটের সরকারি ফলাফল যাই হোক না কেন তুরস্কের যে বিশাল জনগোষ্ঠী সংবিধানের এ সংশোধনীর বিরোধিতা করছেন তা সহজেই অনুমেয়।
এদিকে তুরস্ক যখন প্রতিবেশী দেশগুলোতে উগ্র জঙ্গিবাদ বিরোধী যুদ্ধে প্রকাশ্যে জড়িয়ে পড়েছে এবং দেশটির ভেতরেও জঙ্গিরা নিরাপত্তা পরিস্থিতিকে নাজুক করে ফেলেছে তখন এই সামান্য ব্যবধানের গণভোট দিয়ে তুর্কি সরকার কতখানি সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে সেটাই এখন দেখার বিষয়।
সূত্র: পার্সটুডে
এই হাদিসটা পড়ে আমার খাওয়া ঘুম হারাম হয়ে গেছে
 
                              
                           
                              
                           
                         
                              
                           
                        
                                                 
                      
                                                  
                                               
                                                  
                                               
                                      
                                         
                                      
                                         
                                      
                                        