সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫ ।। ১৫ বৈশাখ ১৪৩২ ।। ৩০ শাওয়াল ১৪৪৬

শিরোনাম :
তিন পুরুষের জমিয়ত উত্তরসূরী মাওলানা মঞ্জুরুল ইসলাম আফেন্দী আজ হজ ফ্লাইট উদ্বোধন করবেন ধর্ম উপদেষ্টা হেফাজতের খুলনা মহানগরী সভাপতি মাওলানা সাখাওয়াত, সম্পাদক গোলামুর রহমান যুদ্ধের মাঝে যৌথ অস্ত্র উৎপাদন: ভারত-ইসরায়েল সামরিক সম্পর্কের বিবর্তন তাকওয়ার ছায়ায় মানবসভ্যতার বিকাশ ‘মানুষের ক্ষুধা নিবারণ না করতে পারলে সংস্কার-নির্বাচন ভেস্তে যাবে’ সন্ধ্যায় চাঁদ দেখা কমিটির সভা ৩ মে’র মহাসমাবেশ সফল করতে বগুড়ায় হেফাজতের মতবিনিময় সভা ২৭ খণ্ডের ‘ফাতাওয়ায়ে দারুল উলুম দেওবন্দ’ অনুবাদ করাচ্ছে সরকার ভারতের প্রসিদ্ধ আলেম স্যাইয়িদ আকীল মাজাহিরির ইন্তেকালে জমিয়তের শোক

এক মা ও সন্তানের গল্প

নিউজ ডেস্ক
নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

mother-and-son1শাবীব তাশফী : গত শতাব্দীতে চীনে এক মহা প্রলয়ঙ্কারী ভূমিকম্প হয়েছিলো। তাতে প্রায় লক্ষাধিক মানুষ মৃত্যু বরণ করে। এই খবর তো কমবেশি সবাই জানি।
চলুন! নতুন এমন কিছু জানি। যা আমরা জানতাম না!

সেই ভূমিকম্পের পর ধ্বংসস্তুপের মধ্যে দেখা গেলো একটি দালানের নিচে কিছুটা ফাঁকা জায়গায় একজন মহিলা বাচ্চাসহ জ্ঞানহীন অবস্থায় পড়ে আছেন।

তাদের হসপিটালে নেওয়া হলো। বেশ কিছু সময় পর উভয়ের জ্ঞান ফিরে আসলো। মহিলার হাতের আঙ্গুলের অগ্রভাগগুলো ক্ষত-বিক্ষত ছিলো। ডাক্তার সাহেব এর কারণ জানতে চাইলে, সেই মা যা বললেন...

মা বললেন, বাসার ছাদটা আমাদের উপর এমনভাবে ভেঙ্গে পড়লো যে সৃষ্টিকর্তার করুণায় আমি বেঁচে গেলাম। আমার বাচ্চাটি ঐ মুহূর্তে কোলে থাকায় সেও বেঁচে গেলো। আমি বুঝতে পারছিলাম যে, এই ধ্বংসস্তুপ না সরানো হলে এখান থেকে আমার বের হওয়াটা অসম্ভব। ঐ অবস্থায় প্রথম দু'দিন আমি আমার বুকের দুধ দিয়ে বাচ্চার ক্ষুধা মিটালাম এবং নিজে অভুক্ত থাকলাম। দুর্ভাগ্যবশতঃ এরপর আমার বুকের দুধ ফুরিয়ে গেলো। ক্ষুধার যন্ত্রণায় আমার বাচ্চা কাঁদছিলো!
আমি সহ্য করতে পারছিলাম না। কখনো তার মুখে আমার আঙ্গুল ঢুকিয়ে দিতাম, কখনো আমার জিহবার আদ্রতা দিয়ে বাচ্চাকে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করিছিলাম। কিন্তু যতক্ষণ না তার পেটে খাবার যাচ্ছে ততক্ষণ পর্যন্ত কান্না থামানো যাচ্ছিলো না।

হঠাৎ আমার চিন্তায় আসলো, আমি তাকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারছিনা ঠিক, কিন্তু আমার দেহে এখনো যে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছে তা তো খাওয়াতে পারি!

এ কথা চিন্তায় আসতেই আমি দাঁত দিয়ে আঙ্গুলের অগ্রভাগ কেঁটে ফেললাম! তা থেকে তখন রক্ত ঝরছিলো। এরপর আমি ক্ষত আঙ্গুলটি বাচ্চার মুখে দিলাম। সে চুষে চুষে খেতে লাগলো। যখন তার পেটে আমার রক্ত খাবার হিসেবে পড়লো, সে তখন কিছুটা ঠাণ্ডা হলো। এক এক করে আমি আমার সবগুলো আঙ্গুলের অগ্রভাগ দাঁত দিয়ে কামড়ে ক্ষত-বিক্ষত করে তাকে এই পরিমান রক্ত পান করালাম যে, একপর্যায়ে আমার শরীরের রক্তও শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গেলো।

তখন আমি জ্ঞান হারিয়ে ফেললাম। বাচ্চাও জ্ঞান হারিয়ে ফেললো। তারপরের ঘটনা তো আপনার জানা।

কী বলবো? কী লিখবো? একবার ভাবুন তো! একজন মা তার সন্তানকে কতটুকু ভালোবাসলে এমনটি করতে পারেন? বাস্তবতা তো এটাই, নিজের জীবনের বিনিময়েও যদি নিজ সন্তানকে বাঁচানো যায়, মা সেটাই করেন। সন্তানের জন্য জীবনকে হাসি মুখে বিলিয়ে দেন। তবুও আমরা সেই মা'কেই কষ্ট দিই। বউয়ের ভালোবাসা পেয়ে বাবা-মাকে রেখে আসি বৃদ্ধাশ্রমে!!!
আর আমাদের মায়েরা? সেই বৃদ্ধাশ্রমেও
জায়নামাজে বসে দুয়া করেন, ইয়া আল্লহু! তুমি আমার খোকা'কে ভালো রেখো! সুস্থতার সাথে রেখো!!

শাবীব তাশফীর ফেসবুক ওয়াল থেকে...

/আরআর


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ