অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টা পরিষদ কর্তৃকত অনুমোদিত ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটকে গতানুগতিক ও গণ-অভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করা হয়নি বলে অখ্যায়িত করেছে খেলাফত মজলিস। আজ এক যৌথ বিবৃতিতে খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাছিত আজাদ ও মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের বলেন, ঋণনির্ভর এ বিশাল ঘাটতি বাজেটে জনগণের অর্থনৈতিক বৈষম্য তেমন কমছে না।
যৌথ বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় বলেন, প্রায় ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার প্রস্তাবিত এ বাজেটে ২ লাখ ২৬ হাজার কোটি টাকার বিশাল অংকের ঘাটতি রয়েছে যা জিডিপির ৩.৬০ শতাংশ। এই ঘাটতি পূরণে দেশি-বিদেশী ঋণ ও সুদের বোঝা আরো বাড়াবে। এই সুদের পরিমাণ ১ লাখ ১৫ হাজার কোটি টাকা। পরিচালনা ব্যয় ও সুদ পরিশোধের মত অনুন্নয়ন খাতেই ব্যয় হবে বাজেটের অধিকাংশ অর্থ। তাঁরা আরও বলেন, তবে প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা ৫.৫০ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতির গড় হার ৬.৫০ শতাংশ রাখতে পারলে তা হবে বাজেটের বড় চমক।
প্রস্তাবিত ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে জনগণের উপর করের বোঝা বাড়বে উল্লেখ করে নেতৃবৃন্দ বলেন, সরকারি ব্যয় নিয়ন্ত্রণ ও বাজেট ঘাটতি কমানোর ওপর জোর দেয়া হলেও রাজস্ব আয়ের লক্ষ্যমাত্রা গত বছরের চেয়ে বাড়িয়ে ৫ লাখ ৬৪ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এতে জনগণের উপর করের বোঝা আরো বাড়াবে।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, উচ্চ মূল্যস্ফীতির এই সময়ে ব্যক্তিশ্রেণি করদাতাদের বার্ষিক করমুক্ত আয়সীমা সাড়ে ৩ লাখ টাকা থেকে বাড়িয়ে কমপক্ষে ৪ লাখ টাকা করা দরকার ছিল। ইকমার্স পণ্য বিক্রয় কমিশনের উপর ভ্যাটের হার ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫ শতাংশ করায় অনলাইন কেনাকাটায় খরচ বেড়ে যাবে। বাজেটে বার্ষিক উন্নয়ন কর্মসূচির (এডিপি) বরাদ্দ কমিয়ে ২ লাখ ৩০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে। এতে বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেলেও উন্নয়ন কর্মসূচি হ্রাস পাবে। দীর্ঘ মেয়াদী ও মেগা প্রকল্প নতুনভাবে অনুমোদন পাবে না। সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচিতে বরাদ্দ কমিয়ে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা করা হয়েছে।
বিবৃতিতে নেতৃদ্বয় উপদেষ্টাদের আহ্বান করে বলেন, বিগত ফ্যাসিবাদী সরকার ঘুষ, দুর্নীতি, অর্থ পাচার, অপচয় ও অব্যবস্থাপনার মাধ্যমে দেশের অর্থনীতিকে বিপর্যস্ত করে রেখে গেছে। বিশাল ঋণের বোঝার মধ্যে দেশকে ডুবিয়ে তারা পালিয়ে গেছে। বাজেটে এ বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে টেনে তোলার আরো ব্যবস্থা থাকার দরকার ছিল। বিপর্যস্ত অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে দেশী বিদেশী বিনিয়োগ, দুর্নীতির সকল পথ বন্ধ করে সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা, কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও রেমিটেন্স বৃদ্ধিতে জোর দিতে হবে। পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে।
এমএইচ/