শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫ ।। ১১ পৌষ ১৪৩২ ।। ৬ রজব ১৪৪৭

শিরোনাম :
ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা ইসলামী আন্দোলনের, ‘উসমান হাদির হত্যা মামলায় সরকারের ব্যর্থতা গ্রহণযোগ্য নয়’ আলিগড় বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুসলিম শিক্ষককে গুলি করে হত্যা ইসলামপন্থীদের ‘একবাক্স নীতি’ কি মুখ থুবড়ে পড়ছে? শহীদ হাদির আদর্শ সামনে রেখে মিশরে 'আজহার আফকার'র যাত্রা আবারও বাংলাদেশি সন্দেহে ভারতে মুসলিম যুবককে পিটিয়ে হত্যা তারেক রহমানের দেশে ফেরা গণতান্ত্রিক সংগ্রামের এক গুরুত্বপূর্ণ অর্জন: হাসনাত ঢাকায় মহাসমাবেশের ঘোষণা ইসলামী আন্দোলনের এভারকেয়ার থেকে গুলশানের বাসার উদ্দেশে তারেক রহমান সাহিত্য সভায় বিশেষ সম্মাননা পেলেন কবি ও লেখক মোহাম্মদ কুতুবউদ্দিন

ইফতেখার জামিলের টকশো নিয়ে বিতর্ক ও কিছু কথা


নিউজ ডেস্ক

নিউজ ডেস্ক
শেয়ার

সাবের চৌধুরী

ধর্মীয় বিষয়গুলোকে ডিল করার ক্ষেত্রে অনেক তরুণের মধ্যে অক্ষরবাদিতার প্রকোপ সম্ভবত কিছুটা কমে আসছে। ইফতেখার জামিলের বিষয়টাতে যেভাবে পক্ষে-বিপক্ষে লেখাজোকা দেখেছি, এতে আমার কাছে তাই মনে হয়েছে। পাঁচ সাত বছর আগেও এটা ছিল না। এটা একটা ভালো দিক।

জামিলের কথার যে অংশটা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, সেখানে আমি ঝামেলার কিছু দেখি নাই। বড়জোর একটা বাক্যের কাঠামো নিয়ে কেউ চাইলে ছোট্ট একটা নুক্তা দিতে পারত। এবং সেটা ওই কাঠামোগত নুক্তা পর্যন্তই। এর বেশি কিছু না। 

জামিল আলাপ আলোচনায় যাচ্ছেন, কথা বলছেন, এটা আনন্দিত হবার মতো বিষয়। আমি যতটুকু বুঝি, জামিল মনে প্রাণে ট্রেডিশনাল এবং ট্রেডিশনের ভেতরে থেকে তিনি এর নানা দিক নিয়ে সংস্কারমূলক/পরিমার্জনগত চিন্তা ও আলাপে বিশ্বাসী। এবং এই আলাপটা হুজুগ, অক্ষরবাদিতা, হুংকারধর্মিতার বাইরে গিয়ে পরিণতভাবে করার মতো চিন্তার অনুশীলন তার আছে এবং সে মজবুত ভাষাও তার রপ্ত করা আছে।

আমাদের দেশে এই অবস্থানটা খুবই দরকারি। আমি নিজেও এই জায়গাটায় কাজ করতে চাই, কিন্তু সেই সক্ষমতা ও সময় কোনোটাই না থাকার কারণে করা হয়ে ওঠে না।

জামিলকে যতটুকু দেখেছি, তিনি লেখায় যতটা গোছানো, সরাসরি কথায় ততটা না। বিষয়ভিত্তিক বা তাত্ত্বিক আলাপে তিনি অগোছালোভাবে এবং কাউকে না জানিয়ে ব্যক্তিগত উদ্যোগে আলাপের অনেক ভেতরে চলে যান, ফলে সামনের শ্রোতাকে কানেক্ট করতে পারেন কম। সব বিষয়ে না; কিন্তু মাঝে মাঝে এই সমস্যাটা আমি অনুভব করেছি। বেশ কয়েক বছর যাবত তার সাথে দীর্ঘ আলাপ সালাপ হয় না।

ফলে এ জায়গাটায় চমৎকার একটা পরিবর্তন যে এসেছে, জানতাম না। ইদানীং তার দু তিনটা আলোচনার কিছু কিছু শুনে মনে হলো এখনের আলাপগুলোতে তিনি অনেক শান্ত, গোছালো ও টু দি পয়েন্ট। বলার ভঙ্গিটাও সুন্দর। ভাবনা ছাড়াই সম্পৃক্ত হওয়া যায়।

তবে, একটা জায়গায় তার সতর্ক হওয়া দরকার মনে হয়। জামিল ফেসবুকে লিখেছেন প্রচুর। সাধারণত চিন্তা, প্রশ্ন, সূক্ষ্ম বিবেচনা এসব নিয়েই বেশি আলাপ করেন। আবার এই আলাপগুলো ফেসবুক পোস্টে হওয়ার কারণে সংক্ষেপে করতে হয়। এতে করে জামিলের বাক্যকাঠামোর মধ্যে এক ধরনের শব্দ-সংকোচনের প্রবণতা এসেছে। এটা সম্ভবত তার মুখের কথাকেও কখনো প্রভাবিত করে। ঘরোয়া আলাপে এগুলো সমস্যা না হলেও পাবলিক স্পিচে বিতর্ক তৈরি করতে পারে।

আজকের যে অংশটা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, এটা তারই উদাহরণ। অবশ্য, টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে সময় স্বল্পতাও এর পেছনে কাজ করে থাকতে পারে। এই কথাটাই তিনি যদি আরও এক মিনিট বেশি সময় নিয়ে খুলে বলতেন, তাহলে যাদের বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, তাদের হয়তো সমস্যাটা হতো না। অন্তত অক্ষরবাদিতার প্রকোপ যেহেতু আছে, ফলে এ দিকটা মাথায় না নিয়ে উপায় নেই।

জামিলের কোনো কোনো আলাপে আমার দ্বিমত থাকে, সামনেও নানান আলাপে তা থাকতে পারে; কিন্তু কেউ আলাপ করতে গেলে যে নানান ছুতো ছাতায় তাকে ধসিয়ে দেওয়ার ক্ষতিকর প্রবণতা, আমার অবস্থান সবসময় তার বিপক্ষে।

লেখক: মাদরাসা শিক্ষক, কথাশিল্পী অনুবাদক

আরএইচ/


সম্পর্কিত খবর

সর্বশেষ সংবাদ